...

0 views

কোন্নগরের শকুন্তলা মা
কথিত আছে কোন্নগরের শকুন্তলা মা সূর্যের মুখ দেখেন না ।ছুটে আসেন লক্ষ লক্ষ ভক্তরা, মায়ের কাছে আশাপূরণে জন্য।এখানে দেবী দক্ষিণা কালি রূপে পূজিত। বিশ্বাস করা হয়, তিনিইএই অঞ্চলের রক্ষাকর্ত্রী।এখানে রক্ষাকালী হিসাবে , দেবী দক্ষিণা কালীকেই পুজো করা হয় । লোক বিশ্বাস অনুযায়ী তিনি কোন্নগরকে রক্ষা করেন । মাকে পুজো করার রাস্তার তিনমাথার মোড়ে ।

হুগলি জেলার এই জনপ্রিয় মায়ের , মন্দিরের গঠন কিন্তু একেবারে সাদামাটা। । একটি শ্বেত পাথরের বেদি রেয়েছে মূল মন্দিরের গর্ভগৃহে । সেখানেই দেবীর নিত্যদিনের পুজো অর্চনা চলে । আড়ম্বরহীন এই মন্দিরে পূর্ণ হয় লক্ষ লক্ষ ভক্তদের মনস্কামনা। স্থানীয় বিশ্বাস, মা কখনই তাঁর সন্তানদের ফেরান না। ভক্তরা মানত করলে তা পূরণ করেন মা শকুন্তলা।
শকুন্তলা কালী মন্দিরের পুজো হয় প্রাচীন রীতি ও নিয়ম মেনে । লোক কথা অনুযায়ী মা সূর্যের মুখ দেখেন না। তাই মূর্তি বানানো হয় সূর্যাস্তের পর নিয়ম মতো, আর দ্বিতীয় প্রহর শেষ হলে পুজো শুরু হয় কিন্তু দেবীর বিসর্জন দেওয়া হয় সূর্যোদয়ের আগেই। ভক্ত মানুষরা বিশ্বাস করেন এই মায়ের কাছে যে যা চান তাই পান। অমাবস্যা তিথির সন্ধ্যের পর দেবী মূর্তি কাঁধে করে নিয়ে আসা হয় মন্দিরে।প্রতিমাকে সন্ধ্যে সাড়ে ছটা থেকে সাড়ে সাতটার মধ্যে মন্দিরে প্রবেশ করানো হয় । এই মা রক্ষাকালীকে সাজানো হয় মূল্যবান সোনা ও রুপোর গয়নায় । শুরু হয় পুজো, চলে সারা রাত । তবে এই মন্দিরে সারা বছর শুধু বেদিতেই পুজো হয়।

সময়টা ১৮৩৬ সালের নাগদ, তখন ঘন বনজঙ্গলে ঢাকা এলাকা ছিল কোন্নগর-নবগ্রাম ।বিভিন্ন ডাকাত আর ঠগীদের ডেরা ছিলো এই জঙ্গল। কথিত আছে বৈশাখ মাসের কৃষ্ণা তৃতীয়া বা তার ঠিক পরের শনিবারের রাতে এই ডাকাতের দল মা কালীকে পুজো দিয়ে , সারা বছরের মতো ডাকাতির শুরু করত ।তখন মায়ের থান ছিলো মস্ত অশ্বত্থ গাছের নীচে । সেই সময় রক্তমাখা হাঁড়িকাঠ এই থানেই পড়ে থাকত । তাই গাছের ওপরে শকুন বাসে থাকতো দলে দলে , তাই এই থানের আরেক নাম শকুন্তলা মায়ের থান, সেই থেকে শকুন্তলা রক্ষাকালী মা মায়ের নামও ।
© Manab Mondal