...

1 views

“আপনি যাবেন না... ঈশ্বরের দোহাই, আপনি যাবেন না!”
~~//আপনি যাবেন না... ঈশ্বরের দোহাই, আপনি যাবেন না!//~~


দু’টি কাতর অনুরোধ আমাকে আজও কষ্ট দেয়। মনটা কেমন যেন করে ওঠে! দুটিই কাল্পনিক, অবশ্যই। বাস্তবে এমন কিছু ঘটে নি। কারণ, এই দুটি অনুরোধের ঘটনাই পাওয়া যাবে দুটি আলাদা আলাদা ইংরিজি উপন্যাসে। দুটিই অসাধারণ! প্রথম ঘটনাটি নেওয়া ব্রাম স্টোকার লিখিত এপিস্টোলারি উপন্যাস ‘ড্রাকুলা’ থেকে, যেখানে কার্পেথিয়ানের ‘গোল্ডেন ক্রোন’ হোটেলের মালিকের স্ত্রী তাঁদের হোটেলে নৈশযাপনকারী লণ্ডনের উকিল জোন্যাথান হার্কারকে বারবার কাতর অনুরোধ করেছিলেন ড্রাকুলা-দুর্গে না যাওয়ার জন্য–“আপনি যাবেন না... ওখানে গেলে আপনার বিপদ হবে। আমি অনুরোধ করছি আপনি যাবেন না।” দ্বিতীয় ঘটনাটি হেরম্যান মেলভিল রচিত অ্যাডভেনচারধর্মী উপন্যাস ‘মবি ডিক’ থেকে সংগৃহীত, যেখানে আহাব মবি ডিকের সঙ্গে শেষ সঙ্ঘাতে যাওয়ার আগে তাঁকে কাতরভাবে নিষেধ করছেন ফার্স্ট মেট্ স্টারবাক–“ক্যাপটেন, ক্যাপটেন! আপনার মতন মহৎ মানুষ কেন এভাবে নিজেকে শেষ করছেন? যাবেন না... ঈশ্বরের দোহাই, যাবেন না! আমিও সাহসী মানুষ, তবুও চোখের জলে আজ আপনাকে যেতে নিষেধ করছি!”

ড্রাকুলা-দুর্গে জোন্যাথান হার্কারের যে অবর্ণনীয় ও ভয়াবহ অভিজ্ঞতা হয়েছিল, তা ‘ড্রাকুলা’ উপন্যাসের পাঠকমাত্রেই অবহিত আছেন। শেষ পর্যন্ত জোন্যাথান যে সেই মৃত্যুপুরী থেকে প্রাণ হাতে নিয়ে ফিরতে পেরেছিল, তা ঈশ্বরের আশীর্বাদ ছাড়া আর কিছুই নয়! কিন্তু ফিরতে পারেন নি আহাব। মবি ডিককে নিধন করতে গিয়ে তিনি নিজেই নিহত হন। আহাবের এই পরিণতির জন্য তাঁকে দায়ী করা উচিৎ, নাকি তাঁর জীবনকে ফুৎকারে উড়িয়ে দেওয়ার তীব্র প্যাশনকে, নাকি মবি ডিকের প্রতি তাঁর তীব্র ঘৃণা তথা আক্রোশকে (কারণ, মবি ডিকই তাঁকে খঞ্জ বানিয়েছিল)—সে বিচারের ভার পাঠকদের ওপর। শুধু এই দুটো ঘটনার মধ্যেকার একটি যোগসূত্র মনে পড়লে হৃদয় ভারাক্রান্ত হয়ে ওঠে, হয়ত বা কিছুটা উদাসও—আর তা হল ওই কাতর অনুরোধ দুটি! আজও তা আমাকে স্মরণ করায় দুটি সম্পূর্ণ ভিন্ন পরিস্থিতিতে যথাক্রমে এক চিন্তিত প্রৌঢ়া এবং এক অসহায় নাবিকের কাতর আর্তি—“আপনি যাবেন না... ঈশ্বরের দোহাই, আপনি যাবেন না!”

—ভ্যান হেলসিং

1 April 2024
10-59 am.
Monday

ছবিঃ গুগল

#kaustavmondal #mobydick #dracula #কৌস্তভমণ্ডল #কৌস্তভের_উপলব্ধি #কৌস্তভের_গদ্য #কৌস্তভের_ফিচার


© গেছো দাদা