...

9 views

স্বাক্ষর

আমি একজন লেখক ;ভূতের গল্পের লেখক মূলত... হা হা হা , কি খুব অদ্ভুত মনে হলো নাকি ;না না অন্যান্য গল্প কবিতাও চলে বেশ, তবে লোকে ওই ভূত টাই বেশি খায় আরকি |যাকগে আমি অনেক ভূতের গল্প লিখেছি কিন্তু নিজের মনে এই ভুত বিষয়ক বিশ্বাস হয়নি কোনোকালেই|কিন্তু গত তিন মাসে আমার এই ধারণা একটু হলেও নড়ে গেছে|
প্রায় চার পাঁচ মাস আগের কথা, আমার এক গুণমুগ্ধ পাঠিকা আমায় একটি শপিং মল এ দেখে খুবই আপ্লুত হয়ে পড়ে এবং সকলের মতো সেও একটি পেন নিয়ে এসে আমার কাছে একটি স্বাক্ষর চেয়ে বসে ;আর কি করা, রাখলাম আবদার|তবে ঘটনার এই অবধি সব ঠিক|
এর ঠিক একহপ্তা খানেক বাদে ঘটনাটা দুর্ঘটনায় পরিণতি প্রাপ্তি লাভ করতে শুরু করে|আসলে সেদিন কোনোভাবে ভুল করে আমার ওই ভক্তর পেন টি আমার কাছে চলে আসে|পেন টি এ. টি. ক্রস কোম্পানির এবং খুবই দামি, তো আমি ঠিক করলাম যে কোনো উপায়ে সেটি ফেরত দেওয়া চাই|সেই অনুযায়ী অনেক খোঁজ করলাম, তখন আমার লেখালেখি মাথায় উঠেছে ;প্রথমেই চলে গেলাম সেই মল এ;কিন্তু নো রেজাল্ট|অতঃপর আরো খোঁজ করলাম বিভিন্ন সামাজিক ইন্টারনেট মাধ্যমে তাতেও কোনো ফল হলো না|আমি খানিকটা হতাশ ই হয়ে পড়লাম |
এরপর ঘটলো সেই ঘটনা;একদিন আমি সবে কাগজ টা খুলেছি;এমন সময় নাম টা দেখে থমকে গেলাম|একি এ তো সেই নাম... সঙ্গে সঙ্গে মনে পড়ে গেলো সেই স্বাক্ষর এর নিচে আমার ই লেখা কিছু কথা "টু সম্পুর্না পল "|এরপর কাগজের ভাজটা খুলতেই পুরো খবরটা খবরের ভিড় থেকে বেরিয়ে এলো|কিছু অজানা আততায়ীর হাতে এক যুবতী খুন, যুবতীর নাম সম্পুর্না পল|আরেকটু দেখার জন্য নিচে তাকাতেই দেখি ছবি, হ্যাঁ কোনো ভুল নেই এ সেই যুবতী|মন টা খুব খারাপ হয়ে গেলো|এরপর দিনতিনেক পর প্রায় যখন সব ভুলতে বসেছি তখনি, ঠিক তখনি ঠিক করি পেনটা কোনো এক পুরোনো জিনিস এর দোকানে বেচে দেবো; যেমন ভাবা তেমন কাজ কলকাতার আর্মহার্স্ট্রিটএ এল হেরিসন এন্ড ব্রাদার্স নামের একটি পুরোনো জিনিসের দোকানে বেচে দিলাম, বেশ ভালো পয়সাও পেলাম;সাধারণত বিদেশী আর বেশ পুরোনো বলেই বোধহয় |
ওই দিনই রাতে ঘটলো এক ঘটনা|আমি মূলত রাতের দিকেই লিখতে বসি|সেদিন সবে টেবিল থেকে চেয়ারটা টেনে বসে সবে চশমাটা পড়েছি ;ও হরি এ দেখি সেই পেন,কিন্তু এবার শুধু পেন নয় সঙ্গে একখানি কাগজ আর তাতে লেখা দুটি লাইন____"এই পেনই আমার খুনের কারণ, পেনটির ঢাকনার ভিতর একটি অতি মূল্যবান পাথর আছে|তাই ওই পেন যেখানে সেখানে বিক্রি করবেন না-----ইতি সম্পুর্না"সেই প্রথমবার বুকটা ছ্যাঁৎ করে উঠেছিল!!
তারপর সারারাত নানান ভাবনা চিন্তা আর ভয়ে ঘুমটা এলো না|খালি মনে হচ্ছিলো আমায় কেউ যেন দেখছে না ঠিক সেরকম দেখা নয় এ যেন একটু অন্যরকম ভাবে নজর রাখা |
পরদিনই সকাল দশটা নাগাদ বেরিয়ে পড়লাম পেন্টার সদ্গতির উদ্দেশ্যে|অবশ্য সেই পাথর বিক্রি করেই প্রায় পঞ্চাশ লক্ষ টাকা পেয়েছি;তাছাড়া নিজেও একটি ছোটোখাটো সম্পাদক এর ব্যবসা শুরু করেছি|
আজও ব্যাপারটা খুব অদ্ভুত লাগে!!
আজও এর ব্যাখ্যা খুঁজতে গেলে আমার যুক্তিবাদী মন বারবার হড়কে যায়|মাঝেমধ্যে মনে হয় এসব হয়তো কেউ বদমাইশি করে তুচ্ছ রসিকতা করেছে ;কিন্তু পরক্ষনেই মনে হয় যে এই পেনটার কথা আমি ছাড়া আর জানতোই বা কে?
যাকগে আপনাদের কাছে যদি এর কোনো ব্যাখ্যা থেকে থাকে তো অবশ্যই আমাকে জানাবেন ||