আব্দার
আব্দার
ভূতের ভয়টা আমার বরাবরই একটু কম।তাই ভূতের উৎপাত আছে জেনেও দখিনা বাতাস মুখী জানলাযুক্ত ঘরটা থাকার জন্য ভাড়া পেয়ে আমি যারপরনাই খুশি হয়েছিলাম।কিন্তু এখন তো ভূত নয়,হাতকড়ার আতঙ্ক আমাকে গিলে খাচ্ছে।আমি নিরীহ গোবেচারা কেরানি মানুষ...কারোর সাতেও নেই,পাঁচেও নেই।কিন্তু পুলিশ তো হাত ধুয়ে আমার পিছনেই পড়ে রয়েছে। বলে গেছে,শুধু একটা প্রমাণ পাওয়ার অপেক্ষা। তারপরেই আমার জন্য অপেক্ষা করছে ফাঁসিকাঠ।
ভাবতে পারছেন পাঠকগণ...এ কত বড় অবিচার!রসকসহীন কেজো মানুষ আমি।জীবনে না ছিল কোনো রং,না কোনো বৈচিত্র।বদলির চাকরী জীবনে অফিস,ঘরের নিত্য প্রয়োজনীয় কাজকর্ম আর বড়জোর বন্ধুবান্ধব নিয়ে জমাটি তাসের আড্ডাটুকুই সার।এহেন নিস্তরঙ্গ জীবনেও সবকিছু উথালপাথাল করে দিয়ে আমার জীবনে প্রেম এল।ভাড়া থাকার জন্য এই ঘর যদি না বাছতাম,তাহলে এমন মোহময়ী কুহকিনীর কামুক নেশার স্বাদ আমি এ জীবনে পেতাম কিনা সন্দেহ।আমি যেদিন থেকে এখানে থাকতে শুরু করেছি,সেই রাত থেকেই সে আসে।প্রতিরাতেই সে আসে।জ্যোৎস্না রাতের নেশাতুর মাদকতায় সে মোমবাতির আগুন দপ করে নিভিয়ে দিয়েই নিকষ অন্ধকারের আলকাতরায় গোটা ঘরকে স্নান করিয়ে দিয়ে সে তার উপস্হিতি জানান দেয়।চাঁদের আলোয় প্রাণভরে দেখি স্বর্গ থেকে উদিতা স্বয়ং আফ্রোদিতির অপার্থিব সৌন্দর্যে ছাওয়া লাস্যময়ী মুখখানি।নেশায় এতটাই মজে যাই যে তিনতলা বাড়ির ওপরে অবস্হিত বন্ধ দরজার একখানি কামরার মধ্যে প্রতিরাতে সে কেমন করে আসে সেই প্রশ্ন আমার কাছে অত্যন্ত তুচ্ছ...অত্যন্ত অপ্রয়োজনীয় বলে মনে হয়।আমি প্রতিরাতে তার সাথে মিলিত হতে থাকি আর অনুভব করতে থাকি,আর ইহ জীবনের পাপ পুণ্যের হিসেব কষে কাজ নেই।স্বর্গ তো এখনই আমার হাতের মুঠোয়।কিন্তু ইতিমধ্যেই এক নতুন মুশকিল শুরু হয়েছে। আর পাঁচটা প্রেমিকার মতোই আমার প্রেয়সীটিও তার প্রেমিকবরের কাছে একটি আব্দার রাখতে শুরু করেছেন।আব্দার আর কিছুই না...প্রতিরাতে একটি করে মানুষের হৃৎপিন্ড এনে তাকে খেতে দিতে হবে।কি জ্বালা বলুন তো...আপত্তি করলে আবার শ্মশানঘাটের শৃগালধ্বনি সদৃশ শব্দ করে ইনিয়ে বিনিয়ে কাঁদে।আর বলে,না এনে দিলে সে চলে যাবে অন্য কোনো পুরুষের কাছে।
কি করি...অগত্যা...প্রেয়সীর আব্দার তো রাখতেই হবে...।এই তিনদিনে অনেক খুঁজে খুঁজে একদিন মাঝরাতে একটা ভ্রাম্যমান ভবঘুরেকে খাবারের লোভ দেখিয়ে ভুলিয়েভালিয়ে একটা নির্জন জায়গায় নিয়ে গিয়ে হাঁসুয়ার এক কোপে কাজ সারলাম।আরেকদিন একটা বাচ্চা ছেলে একা স্কুল থেকে ফিরছিল।তাকে চকোলেটের লোভ দেখিয়ে হাতে আনলাম।তিনদিনের দিন আমার শিকার হল আমার অফিস কলিগ সুজয়।ওকে মারতে আমার খুব...খুব কষ্ট হচ্ছিল। কিন্তু কি করি...ও যদি একটা রাত না আসে...আমি শেষ হয়ে যাব।মুশকিল একটাই।ওর ক্ষিদে বড় সাংঘাতিক। আমার আনা মাংসপিন্ডটি পেয়ে ওর চকচক করে ওঠা ওই অপার্থিব চোখের পৈশাচিকতা আর সেটি ছিঁড়ে ছিঁড়ে খাওয়ার দৃশ্যটির মধ্যে যে বিকৃত উন্মত্ততা আমি প্রতিরাতে চাক্ষুষ করি তা আমার মনকেও যে পীড়া দেয় না তা নয়।কিন্তু পরমূহুর্তেই যখন ওর সাথে কামএর স্বর্গকাননে পা রাখি তখন আর সেসব খারাপ অনুভূতি বা ঘৃণার কিছুমাত্র অবশিষ্ট থাকে না।না...না...একটা রাতও ওকে ছাড়া আমার চলবে না।জানি আজ চতুর্দিকে পুলিশি পাহারা।ধরা পড়লে আমার ফাঁসি কেউ আটকাতে পারবে না।কিন্তু আমার কিচ্ছু করার নেই।প্রেয়সীর আব্দার।এইসব বাধা উপদ্রবকে তোয়াক্কা করলে আমার চলবে না।কারোর একটা তরতাজা সতেজ হৃৎপিন্ড আজকে আমাকে জোগাড় করার জন্য বেরোতেই হবে।
ভূতের ভয়টা আমার বরাবরই একটু কম।তাই ভূতের উৎপাত আছে জেনেও দখিনা বাতাস মুখী জানলাযুক্ত ঘরটা থাকার জন্য ভাড়া পেয়ে আমি যারপরনাই খুশি হয়েছিলাম।কিন্তু এখন তো ভূত নয়,হাতকড়ার আতঙ্ক আমাকে গিলে খাচ্ছে।আমি নিরীহ গোবেচারা কেরানি মানুষ...কারোর সাতেও নেই,পাঁচেও নেই।কিন্তু পুলিশ তো হাত ধুয়ে আমার পিছনেই পড়ে রয়েছে। বলে গেছে,শুধু একটা প্রমাণ পাওয়ার অপেক্ষা। তারপরেই আমার জন্য অপেক্ষা করছে ফাঁসিকাঠ।
ভাবতে পারছেন পাঠকগণ...এ কত বড় অবিচার!রসকসহীন কেজো মানুষ আমি।জীবনে না ছিল কোনো রং,না কোনো বৈচিত্র।বদলির চাকরী জীবনে অফিস,ঘরের নিত্য প্রয়োজনীয় কাজকর্ম আর বড়জোর বন্ধুবান্ধব নিয়ে জমাটি তাসের আড্ডাটুকুই সার।এহেন নিস্তরঙ্গ জীবনেও সবকিছু উথালপাথাল করে দিয়ে আমার জীবনে প্রেম এল।ভাড়া থাকার জন্য এই ঘর যদি না বাছতাম,তাহলে এমন মোহময়ী কুহকিনীর কামুক নেশার স্বাদ আমি এ জীবনে পেতাম কিনা সন্দেহ।আমি যেদিন থেকে এখানে থাকতে শুরু করেছি,সেই রাত থেকেই সে আসে।প্রতিরাতেই সে আসে।জ্যোৎস্না রাতের নেশাতুর মাদকতায় সে মোমবাতির আগুন দপ করে নিভিয়ে দিয়েই নিকষ অন্ধকারের আলকাতরায় গোটা ঘরকে স্নান করিয়ে দিয়ে সে তার উপস্হিতি জানান দেয়।চাঁদের আলোয় প্রাণভরে দেখি স্বর্গ থেকে উদিতা স্বয়ং আফ্রোদিতির অপার্থিব সৌন্দর্যে ছাওয়া লাস্যময়ী মুখখানি।নেশায় এতটাই মজে যাই যে তিনতলা বাড়ির ওপরে অবস্হিত বন্ধ দরজার একখানি কামরার মধ্যে প্রতিরাতে সে কেমন করে আসে সেই প্রশ্ন আমার কাছে অত্যন্ত তুচ্ছ...অত্যন্ত অপ্রয়োজনীয় বলে মনে হয়।আমি প্রতিরাতে তার সাথে মিলিত হতে থাকি আর অনুভব করতে থাকি,আর ইহ জীবনের পাপ পুণ্যের হিসেব কষে কাজ নেই।স্বর্গ তো এখনই আমার হাতের মুঠোয়।কিন্তু ইতিমধ্যেই এক নতুন মুশকিল শুরু হয়েছে। আর পাঁচটা প্রেমিকার মতোই আমার প্রেয়সীটিও তার প্রেমিকবরের কাছে একটি আব্দার রাখতে শুরু করেছেন।আব্দার আর কিছুই না...প্রতিরাতে একটি করে মানুষের হৃৎপিন্ড এনে তাকে খেতে দিতে হবে।কি জ্বালা বলুন তো...আপত্তি করলে আবার শ্মশানঘাটের শৃগালধ্বনি সদৃশ শব্দ করে ইনিয়ে বিনিয়ে কাঁদে।আর বলে,না এনে দিলে সে চলে যাবে অন্য কোনো পুরুষের কাছে।
কি করি...অগত্যা...প্রেয়সীর আব্দার তো রাখতেই হবে...।এই তিনদিনে অনেক খুঁজে খুঁজে একদিন মাঝরাতে একটা ভ্রাম্যমান ভবঘুরেকে খাবারের লোভ দেখিয়ে ভুলিয়েভালিয়ে একটা নির্জন জায়গায় নিয়ে গিয়ে হাঁসুয়ার এক কোপে কাজ সারলাম।আরেকদিন একটা বাচ্চা ছেলে একা স্কুল থেকে ফিরছিল।তাকে চকোলেটের লোভ দেখিয়ে হাতে আনলাম।তিনদিনের দিন আমার শিকার হল আমার অফিস কলিগ সুজয়।ওকে মারতে আমার খুব...খুব কষ্ট হচ্ছিল। কিন্তু কি করি...ও যদি একটা রাত না আসে...আমি শেষ হয়ে যাব।মুশকিল একটাই।ওর ক্ষিদে বড় সাংঘাতিক। আমার আনা মাংসপিন্ডটি পেয়ে ওর চকচক করে ওঠা ওই অপার্থিব চোখের পৈশাচিকতা আর সেটি ছিঁড়ে ছিঁড়ে খাওয়ার দৃশ্যটির মধ্যে যে বিকৃত উন্মত্ততা আমি প্রতিরাতে চাক্ষুষ করি তা আমার মনকেও যে পীড়া দেয় না তা নয়।কিন্তু পরমূহুর্তেই যখন ওর সাথে কামএর স্বর্গকাননে পা রাখি তখন আর সেসব খারাপ অনুভূতি বা ঘৃণার কিছুমাত্র অবশিষ্ট থাকে না।না...না...একটা রাতও ওকে ছাড়া আমার চলবে না।জানি আজ চতুর্দিকে পুলিশি পাহারা।ধরা পড়লে আমার ফাঁসি কেউ আটকাতে পারবে না।কিন্তু আমার কিচ্ছু করার নেই।প্রেয়সীর আব্দার।এইসব বাধা উপদ্রবকে তোয়াক্কা করলে আমার চলবে না।কারোর একটা তরতাজা সতেজ হৃৎপিন্ড আজকে আমাকে জোগাড় করার জন্য বেরোতেই হবে।