...

21 views

রহস্যময় সুন্দরবন (অংশ 2)
আর যে অপুদার কথা বলছি সে হচ্ছে আমার বাবার বন্ধুর ছেলে কাম আমার স্কুলের স্পোর্টস টিচার। ওর বাড়ি এখানে নয় ব্যরাকপুরে তাই অপুদা আমাদের বাড়িতেই থাকে। তবে ও বলে যে ওর স্পোর্টস টীচার হওয়ার কোনো ইচ্ছেই নাকি ছিল না, নেহাত ছোটো বেলায় ফুটবল খেলায় গোল কিপার হতে গিয়ে ফুটবলের বারি খেয়ে বা হাতে আঘাত পায় যার জন্য ওর বা হাতে এখনো বাঁকা । নিতান্তই ওর এই কথা শুনে বুঝতে পারলাম ওর পুলিশ হওয়ার স্বপ্ন চূর্ণ বিচূর্ণ হয়ে গেছে। অবশেষে এই ঘুরতে আসতে পেরেছি এটাই অনেক। কাল আমরা এসেছি এই সুন্দর বনের পল্টে । কাল অবশ্য ঘুরলেও বেশি ভেতরে যাওয়া হয় নি । তবে আজই ঘোরার প্ল্যান ছিল, কিন্তু এই বৃষ্টি বোধহয় সবাই কে কাঁদিয়ে ছাড়বে। আমি হোটেলের রুমে বসে বই পড়ছিলাম আর অপুদা সুবিরের সঙ্গে দাবা খেলছিল । এছাড়াও আরও অনেকেই ছিল ঘরে। হঠাৎ কী যে হল অপুদা ঘর ছেড়ে বাইরে বেড়িয়ে গেল, তারপর সাত আট মিনিট পর আবার এল বুঝলাম ধূপকাঠি টানতে গিয়ে ছিল। ঘরের মধ্যে এত স্টুডেন্ট আছে তাই বাইরে চলে গিয়েছিল। নইলে লোকে বলবে না শিক্ষক কী ,শেখাচ্ছে নাকি ধূম্রপান করা? তা যাই হোক এখন সাড়ে দশটা বাজে একটু বৃষ্টিটা ধরেছে মনে হচ্ছে। দরজায় নখ করার শব্দ দেখলাম হোটেলের ম্যানেজার ও আমাদের কিছু বাবু মানে কমল স্যার। এখানে তাঁদের সম্পর্কে একটু বলা দরকার কারণ দুজনের দৃষ্টান্তই নজর কারা। কীলুবাবু মাঝারী হাইট এর এবং বেশ হৃষ্টপুষ্ট মাথায় টাক পরনে খাগি রঙের প্যান্ট ও ঘিয়ে রং এর চাদর এর ওপর লাল রং এর সুতোর কাচ, এই চাদর দিয়ে চোখ অবধি ঢাকলেও তার চোখের কালো চশমা ও লাল রঙের মাংকি টুপি টা দেখা যাচ্ছে। তবে সব থেকে দেখার মতো জিনিস হল ওনার হাসি, তাই বোধহয় ওনাকে সবাই কীলুবাবু বলেন। আর হোটেলের যে ম্যানেজার তার পরিচয় অগ্যাত হলেও দৃষ্টান্ত পর্যবেক্ষণ করছি যা থেকে বোঝা যায় উনি রোজ যোগব্যায়াম করেন। পাতলা চেহারা হাইট ছোট পরনে কালো কোট কোনো বেরিয়ে কোম্পানি কোম্পানির হবে হয় তো, আর কালো প্যান্ট এর সাথে মিলিটারিদের মতো জুতো এটাকে যে কী বলে তা জানতাম না তবে পরে অপুদার কাছ থেকে জেনেছি এটাকে কমব্যাট বুটস্ট্র্যাপ ও বলে।
ঘরের মধ্যে এসে কীলুবাবু একগাল হেসে অপুদাকে বললেন জানহে অর্পন আমাদের খড়গপুরের মানুষ যে এখানে ম্যনেজারি করতে আসবে ভাবতেই পারিনি। অপুদা দাবার চাল চালতে চালতে ওনার দিকে না তাকিয়েই জবাব দিল পৃথিবী তে এমন অনেক কিছু আছে যা আমরা ভাবি না অথচ ঘটে যাই। তা কোত্থেকে ধরে আনলেন এনাকে, না! আমার কথার মানে হল গে আগে থেকেই পরিচীত না শুধু খড়গপুর টাই কমন ব্যপার। অপুদার এই কথাই ম্যনেজার মুচকি মুচকি হাসলেন কীলুবাবু কিন্তু হা! হা! করে অট্টহাসি হেসে আমার পিঠে কয়েকটা চাপড় মেরে চলে গেলেন। তবে ম্যনেজার গেলেন না আসলে তিনি খড়গপুরের বাসিন্দা দীনবন্ধু মিত্র, ওনার মুখ থেকেই জানালাম অপুদাকে ঠিক, এখানে ওই খড়গপুর টাই কমন। উনি আসলে আমাদের রেডি হয়ে নিতে বলছিলেন কারণ বৃষ্টি পরা বন্ধ হয়েছে তাও বিশ ত্রিশ মিনিট হলো বাইরে এখন রোদ ঝলমলে আকাশ। এই হল প্রকৃতি কখন হাসে কখন কাঁদে তার ঠিক নেই। তা যাইহোক আমরা ওনার কথা মতো আধ ঘন্টার মধ্যে বেরিয়ে পড়লাম । তবে বৃষ্টি হওয়ার জন্য বাইরে মাটি ভিজে প্রায় কাদা হয়ে গেছে বলতে পারি। তবে এই অবস্থাতেই আমরা বেরিয়ে পড়লাম।
একই কলেজ থেকে হলেও আমরা চারটা দল কারণ এক সঙ্গে এত গুলো স্টুডেন্টসকে সামলানো একটু টাফ, তাই আমরা চারটে দল করলাম। আমাদের আন্ডারে অপুদাকে ছিল টিচার আমরা সবার আগেই বনে ঢুকলাম । আমাদের সঙ্গে আরও একজন ছিল, তিনি আমাদের গাইড রমেশ বাবুর। রমেশ বাবুর বয়স পচিঁশ ছাব্বিশ হবে, বেশ লম্বা , গায়ের রং ফরসা পরনে কালো রঙের প্যন্ট এবং কালো কোটের ভেতরে গোলাপি রং এর শার্ট কলার টাকা দেখা যাচ্ছে। ওনার কথা বার্তা শুনে বুঝলাম উনি বেশ ভালো শিক্ষিত।তবে এই চাকরি যে কেন করছে সেটাই বুঝতে পারছি না। খুব বেশি যে উর্পাজন হয় এ চাকরি থেকে তা তো নয়! অপুদা চোটে গিয়ে বলেছিল বেশি পানামা করিস না তো কার কোন কাজে ইন্টারেস্ট সেটা কে টাকা দিয়ে বিচার করতে যাস না তো। হতে পারে এটা ওনার প্যান। তবে আমি ওনার প্যাশন বা কাজ নিয়ে একথাটা বলতাম না যদি না সেদিন সেই ঘটনাটা ঘটত।


flow my story 🙏