" লাল রঙের উপন্যাস "
-" গল্পের নায়ক থাকে গল্পে,
খুশি থাকে সে অল্পে-সল্পে......"
চেয়ারে বসে অনেক্ষন ধরেই আপন মনেই কবিতার এই দুই লাইন নিয়ে ভাবছিল কার্তিক; নতুন কোনো গল্প যে মাথায় আসছে না,সেটা নিয়ে বড় অস্বস্থিতে আছে সে।
চেয়ার থেকে উঠে পড়লো সে,টেবিলে থাকা পেনটা হাতে নিয়ে পায়চারি করতে লাগলো। পায়চারি করতে করতে হঠাৎ কার্তিকের চোখে পড়লো তারই লেখা উপন্যাসগুলো,যেগুলোর জন্যই আজ অলিতে-গলিতে প্রত্যেকে তার নাম চেনে।কোথাও ঘুরতে গেলে, লোকে নিজে থেকে আসে কথা বলতে,তার লেখার সুনাম করতে.....
সেখানে বইগুলোর কাছে গিয়ে ,বইগুলো দেখতে দেখতে হঠাৎ তার চোখে পড়লো..লাল রঙের একটা বই। এই বইটা দেখলেই মুখে হাসি ফুটে ওঠে কার্তিকের,কারণ এই উপন্যাস তার জীবনে সেরা উপন্যাস, এটা দিয়েই তো তার জীবন শুরু হয়েছিল......এসব ভাবতে ভাবতেই হঠাৎ কলিং বেলটা বেজে উঠলো।
দরজা খুলতেই দেখতে পেলো পায়েল এসেছে,একগাল হাসি মুখে বাইরে দাঁড়িয়ে আছে। কার্তিকের কিছু বলার আগেই,পায়েল নিজেই ঘরে ঢুকে পড়লো আর বললো:
-" গত একসপ্তাহ ধরে বলে যাচ্ছি তোকে, তোর একটা উপন্যাস আমায় দে,পড়ার জন্য। কিন্তু তুই তো কোন দুনিয়ায় থাকিস,সেটা তো কেউ বলতে পারবে না....তাই নিজেই চলে এলাম,একটা বই নিতে...."
-" কিন্তু আসার আগে একবার বলবি তো,দিলে আমিই বার করে রাখতাম একটা......"- কার্তিকের পুরো কথা বলার আগেই পায়েল তাকে থামিয়ে একটু মুখ ভেঙিয়ে বললো:
-" থাক, আপনাকে আর কষ্ট করতে হবে না,আমি এসেছি যখন নিজেই খুঁজে নেবো।"
এই বলে পায়েল ,কার্তিকের ওই উপন্যাসগুলোর মধ্যে বাছতে লাগলো। পায়েলের এতটা আগ্রহ দেখে বেশ ভালই লাগলো কার্তিকের। সে চুপচাপ দাঁড়িয়ে দেখতে লাগলো তার দিকে।
সে সত্যি বুঝতে পারছে না,যে আজ কেন পায়েলকে এতটা আলাদারকম ভালো লাগছে তার.... হঠাৎ পায়েল একটা বই তুলে জিজ্ঞেস করলো:
-" এই বইটা কেমন বলতো,কি নিয়ে এটা?"
বইটা একবার দেখে নিয়ে কার্তিক বললো:
-" এই বইটা আসলে এক ছেলে আর এক মেয়েকে নিয়ে,এখানে পুরো ব্যাপারটা একটু ভালোবাসা নিয়ে....ভালো লাগবে তোর,নিতে পারিস। "
ওই বইটা রেখে দিয়ে আরো একটা বই তুলে জিজ্ঞেস করলো সেটা নিয়ে....
কার্তিক সেই বইটার ব্যাপারেও বললো...কিছুক্ষন পর,পায়েল তাকে একটু জল আনতে বললে,সে জল আনতে গেলো....
তারপর পায়েল হঠাৎ ওই লাল রঙের বইটা তুলে নিলো,সেই বইটা সে অনেক্ষন আগে থেকে লক্ষ্য করেছিল, সে বইটা খুলেই দেখতে পেলো,সেই বইয়ে তার ছবি.....তার সন্দেহ হলো, যে তার ছবি এখানে কি করছে?? আরো কয়েকটা পাতা ওল্টাতে দেখতে পেলো,কত কিছু লেখা.....কয়েকটা লাইন পড়তেই বুঝতে পারলো,তার ব্যাপারেই লেখা....পরের দিকে পাতা উল্টে দেখলো, পুরো উপন্যাসটা সম্পূর্ণ নয়.....অনেক প্রশ্ন আসছে তার মনে, ওইসবই ভাবছে, তখনই কার্তিক তার জন্য জল নিয়ে এলো।
পায়েলের হাতে সেই লাল বইটা দেখে,কার্তিকের মুখ শুকিয়ে গেলো,তার ভয় হতে লাগলো,পায়েল সব কিছু জেনে গেছে নাকি,তার প্রতি তার অনুভূতি নিয়ে।
জলের গ্লাসটা পাশে টেবিলে রেখে,পায়েল কার্তিককে জিজ্ঞেস করলো:
-" কার্তিক,এসব কি রে,তুই আমাকে নিয়ে লিখেছিস.....তাও আবার গোটা একটা উপন্যাস!!"
কার্তিকের দিক থেকে কোনো উত্তর এলো না,সে চুপচাপ দাঁড়িয়ে রইলো দরজার কাছে।
পায়েল বললো:
-" কি রে,কিছু বল,আর যদিও লিখেছিস,তাহলে এই উপন্যাসটা অসম্পূর্ণ রেখেছিস কেন?"
কার্তিক কিছুই বললো না,শুধু পায়েলের হাতটা ধরে তাকে বাড়ির বাইরে নিয়ে গেলো,তারপর বললো:
-" তুই এখন নিজের বাড়ি ফিরে যা...পরে কথা হবে তোর সাথে..."
এই বলে দরজা বন্ধ করে দিচ্ছিল,এমন সময় পায়েল দরজা খুলে তাকে বললো:
-" আমি কোথাও যাচ্ছি না,আগে তুই বল,তুই সেই উপন্যাসটা অসম্পূর্ণ রেখেছিস কেন???"
কিছুক্ষন চুপ থেকে কোনো উপায় না পেয়ে পায়েলের কাছে ক্ষমা চেয়ে দরজা তার মুখের ওপর বন্ধ করে দিলো,তারপর চোখে জল নিয়ে মনে মনেই পায়েলের উদ্দেশ্যে কার্তিক নিজেকে বললো:
-" কারণ তুই আমার জীবনের এমন এক উপন্যাস, যার কোনো শেষ পাতা নেই...."
খুশি থাকে সে অল্পে-সল্পে......"
চেয়ারে বসে অনেক্ষন ধরেই আপন মনেই কবিতার এই দুই লাইন নিয়ে ভাবছিল কার্তিক; নতুন কোনো গল্প যে মাথায় আসছে না,সেটা নিয়ে বড় অস্বস্থিতে আছে সে।
চেয়ার থেকে উঠে পড়লো সে,টেবিলে থাকা পেনটা হাতে নিয়ে পায়চারি করতে লাগলো। পায়চারি করতে করতে হঠাৎ কার্তিকের চোখে পড়লো তারই লেখা উপন্যাসগুলো,যেগুলোর জন্যই আজ অলিতে-গলিতে প্রত্যেকে তার নাম চেনে।কোথাও ঘুরতে গেলে, লোকে নিজে থেকে আসে কথা বলতে,তার লেখার সুনাম করতে.....
সেখানে বইগুলোর কাছে গিয়ে ,বইগুলো দেখতে দেখতে হঠাৎ তার চোখে পড়লো..লাল রঙের একটা বই। এই বইটা দেখলেই মুখে হাসি ফুটে ওঠে কার্তিকের,কারণ এই উপন্যাস তার জীবনে সেরা উপন্যাস, এটা দিয়েই তো তার জীবন শুরু হয়েছিল......এসব ভাবতে ভাবতেই হঠাৎ কলিং বেলটা বেজে উঠলো।
দরজা খুলতেই দেখতে পেলো পায়েল এসেছে,একগাল হাসি মুখে বাইরে দাঁড়িয়ে আছে। কার্তিকের কিছু বলার আগেই,পায়েল নিজেই ঘরে ঢুকে পড়লো আর বললো:
-" গত একসপ্তাহ ধরে বলে যাচ্ছি তোকে, তোর একটা উপন্যাস আমায় দে,পড়ার জন্য। কিন্তু তুই তো কোন দুনিয়ায় থাকিস,সেটা তো কেউ বলতে পারবে না....তাই নিজেই চলে এলাম,একটা বই নিতে...."
-" কিন্তু আসার আগে একবার বলবি তো,দিলে আমিই বার করে রাখতাম একটা......"- কার্তিকের পুরো কথা বলার আগেই পায়েল তাকে থামিয়ে একটু মুখ ভেঙিয়ে বললো:
-" থাক, আপনাকে আর কষ্ট করতে হবে না,আমি এসেছি যখন নিজেই খুঁজে নেবো।"
এই বলে পায়েল ,কার্তিকের ওই উপন্যাসগুলোর মধ্যে বাছতে লাগলো। পায়েলের এতটা আগ্রহ দেখে বেশ ভালই লাগলো কার্তিকের। সে চুপচাপ দাঁড়িয়ে দেখতে লাগলো তার দিকে।
সে সত্যি বুঝতে পারছে না,যে আজ কেন পায়েলকে এতটা আলাদারকম ভালো লাগছে তার.... হঠাৎ পায়েল একটা বই তুলে জিজ্ঞেস করলো:
-" এই বইটা কেমন বলতো,কি নিয়ে এটা?"
বইটা একবার দেখে নিয়ে কার্তিক বললো:
-" এই বইটা আসলে এক ছেলে আর এক মেয়েকে নিয়ে,এখানে পুরো ব্যাপারটা একটু ভালোবাসা নিয়ে....ভালো লাগবে তোর,নিতে পারিস। "
ওই বইটা রেখে দিয়ে আরো একটা বই তুলে জিজ্ঞেস করলো সেটা নিয়ে....
কার্তিক সেই বইটার ব্যাপারেও বললো...কিছুক্ষন পর,পায়েল তাকে একটু জল আনতে বললে,সে জল আনতে গেলো....
তারপর পায়েল হঠাৎ ওই লাল রঙের বইটা তুলে নিলো,সেই বইটা সে অনেক্ষন আগে থেকে লক্ষ্য করেছিল, সে বইটা খুলেই দেখতে পেলো,সেই বইয়ে তার ছবি.....তার সন্দেহ হলো, যে তার ছবি এখানে কি করছে?? আরো কয়েকটা পাতা ওল্টাতে দেখতে পেলো,কত কিছু লেখা.....কয়েকটা লাইন পড়তেই বুঝতে পারলো,তার ব্যাপারেই লেখা....পরের দিকে পাতা উল্টে দেখলো, পুরো উপন্যাসটা সম্পূর্ণ নয়.....অনেক প্রশ্ন আসছে তার মনে, ওইসবই ভাবছে, তখনই কার্তিক তার জন্য জল নিয়ে এলো।
পায়েলের হাতে সেই লাল বইটা দেখে,কার্তিকের মুখ শুকিয়ে গেলো,তার ভয় হতে লাগলো,পায়েল সব কিছু জেনে গেছে নাকি,তার প্রতি তার অনুভূতি নিয়ে।
জলের গ্লাসটা পাশে টেবিলে রেখে,পায়েল কার্তিককে জিজ্ঞেস করলো:
-" কার্তিক,এসব কি রে,তুই আমাকে নিয়ে লিখেছিস.....তাও আবার গোটা একটা উপন্যাস!!"
কার্তিকের দিক থেকে কোনো উত্তর এলো না,সে চুপচাপ দাঁড়িয়ে রইলো দরজার কাছে।
পায়েল বললো:
-" কি রে,কিছু বল,আর যদিও লিখেছিস,তাহলে এই উপন্যাসটা অসম্পূর্ণ রেখেছিস কেন?"
কার্তিক কিছুই বললো না,শুধু পায়েলের হাতটা ধরে তাকে বাড়ির বাইরে নিয়ে গেলো,তারপর বললো:
-" তুই এখন নিজের বাড়ি ফিরে যা...পরে কথা হবে তোর সাথে..."
এই বলে দরজা বন্ধ করে দিচ্ছিল,এমন সময় পায়েল দরজা খুলে তাকে বললো:
-" আমি কোথাও যাচ্ছি না,আগে তুই বল,তুই সেই উপন্যাসটা অসম্পূর্ণ রেখেছিস কেন???"
কিছুক্ষন চুপ থেকে কোনো উপায় না পেয়ে পায়েলের কাছে ক্ষমা চেয়ে দরজা তার মুখের ওপর বন্ধ করে দিলো,তারপর চোখে জল নিয়ে মনে মনেই পায়েলের উদ্দেশ্যে কার্তিক নিজেকে বললো:
-" কারণ তুই আমার জীবনের এমন এক উপন্যাস, যার কোনো শেষ পাতা নেই...."