...

37 views

প্রাত‍্যহিকতা
স্তব্ধতা গ্রাস করেছে আজ অজস্র ট্রাম বাসের ভিড়।সভ‍্যতার বুক থেকে ছিনিয়ে নিয়ে যাওয়া মানবত্বের পুনঃপ্রবর্তনের আকাঙ্ক্ষায়ে পৃথিবী আজ উন্মত্ত। জীবনের জলসাঘরে কেবলই অনিশ্চয়তার আনাগোনা।
জানালার রেলিংয়ের বাইরের আকাশটা বিভৎষ রকমের বদলে গেছে,আর বিহঙ্গদের জগৎটাও অনেকখানি বদলে গেছে।মুখের সামনে একটা বই ধরে এতক্ষন এই সবই ভাবছিল শিখর।জানালা দিয়ে আসা শিতল স্নিগ্ধ হাওয়ায়ে সিফনের পর্দাটা শিখরের মুখের ওপর এসে পরায়ে মনঃসংযোগের ব‍্যেঘাত ঘটল।অগত‍্যা,ভাবনার জগৎ থেকে প্রত‍্যাবর্তন করে বাইরে তাকাল শিখর।সামনের চারপায়ার উপর চীনা-মাটির কাপ-প্লেটে রাখা চাটা বোধহয় ততক্ষণে নালিশ জানাচ্ছিল।চোখ পরল রাস্তায় একটি জির্ণ সারমেয়র উপর।কিসের অপেক্ষায় যেন বসে আছে..খুব ক্লান্ত দেখাচ্ছিল তাকে।কিসের দরুন যেন বিদ্ধস্ত,ক্ষুব্ধ..চোখ দুটো থেকে ফুটে উঠছিল দৃঢ় প্রতিশোধ স্পৃহা।সেই চোখদুটি সম্মোহিত করে তুলেছিল শিখরকে।হঠাৎ যেন স্বপ্নভঙ্গ হলো,তার চোখে পরলো অপর দিক থেকে আসা আর একটি সারমেয়।
কালো মেঘে ঘনীভূত আকাশ।ঝড়ে পরছে অবিশ্রান্ত বৃষ্টির ধারা।ছাদে দাঁড়িয়ে শিখর বৃষ্টি মাখচ্ছিল,মনে হচ্ছিল সমস্ত পাপ যেন ধুয়ে যাচ্ছিল ওর শরীর থেকে।আস্তে আস্তে সেই নৃশংস দৃশ্যটির উপর থেকে রক্তগুল কে যেন ধুয়ে দিচ্ছিল।স্বজাতীকে আক্রমণ করে,হিংস্র -উন্মত্তভাবে হত‍্যা করার রক্তগুল যেন আস্তে আস্তে ধুয়ে যাচ্ছিল।বন্ধ চোখের আড়ালে এক গুপ্ত পর্দায়ে শিখরের সামনে ফুটে উঠছিল পৃথিবী জুড়ে অসংখ্য নৃশংস হত্যা দৃশ্য..প্রতিটি দৃশ্যের শেষেই ছিল মানবিকতার মৃত্যুমিছিল, প্রাত‍্যহিকতার সাথে যাপন করছিল শিখর...
* * * * *
ততক্ষনে বোধহয় নিচের ঘরে রাখা চাটা জুড়িয়ে গেছে।