...

54 views

ক্ষমা
ফুটপাথ ধরে হেঁটে চলেছি।না,কোনো গন্তব‍্য ছিল না,এমনি।!কোথা থেকে একটি বাচ্চা ছেলে এসে সামনে দাঁড়াল,হঠাৎ দেখলে কঙ্কাল বলে ভয়ে পেতে হয়ে।ছেলেটির গায়ে পরনের কাপড় নেই বলেই চলে।গায়ের রঙ্গ শ‍্যামবর্ণ।আমাকে বললে,বাবু দশটা টাকা দেবে?বলে সাদা দাঁতে হাসল,আমার খুব বিশ্রি লাগল ওই হাসিটা।দিয়ে দিলাম ওর হাতে দশটা টাকা।টাকা টা পেয়েই ছুট্টে চলে গেলো। তাকিয়ে দখি ত্রকটা দোকানে গিয়ে কি যেন কিনছে..নিজের জন‍্য কোনো কিছু কিনছে হয়তো।হাত ঘড়িতে সময়েটা একবার মেপে নিয়ে বাড়ির পথ ধরলাম।


রাত্রের অন্ধকার ভেদ করে,আবির্ভাব হলো আরো একটি সকালের।দিনমণি তাঁর অশেষ ভান্ডার উজার করে পৃথিবীর বুকে নিয়ে এল মানবজীবনের ইতিহাস লেখার রসদ। অতিতের সব দিনই বোধহয় এক একটি মানুষের নিজেদের জীবনের ইতিহাস।

ঘুম ভেঙে নিজেকে আবিষ্কার করলাম নরম গদির ওপর। পাশে রাখা স্মার্টফোন টায়ে সময়ে দেখলাম ৭:৩০।লাফিয়ে ওঠে ডাক দিলাম,রামু!!এই রামু!! পাশের ঘর থেকে ছুটে এল সে।বললাম,কিরে জানিস না তুই আজ যেতে হবে?এত বেলা হয়ে গেল ডাকবি তো আমায়ে!! যা গিয়ে চা টা বসা।অধমুখে বেরিয়ে গেলো রামু।কিছুক্ষন পর ফিরে এল হাতে চা নিয়ে,ততক্ষনে আমি তৈরি হয়ে গেছি।চাটা টেবিলে রেখে রামু বলল",বাবু আমি সামান‍্য চাকর, জানি এ কথা আমার বলা শোভা পায়ে না,তবু,তোমাকে ছোট্টো থেকে বড় হতে দেখেছি।বলছি, আর একটু ভেবে দখলে হত না?"কি ভেবে দখবো বল তো?ভাবার কি আছে?আমার তো ভবিষ্যত বলে কিছু আছে নাকি?!আমার পক্ষে সারা জীবন এটা বয়ে বেরানো সম্ভব নয়।যেটা বুঝিসনা সেটা নিয়ে কথা বলিস না,যা এখান থেকে।

এতক্ষনে এসে পৌঁছানো গেলো।ডোরবেল বাজিয়ে বাইরে অপেক্ষায়ে আমি..দরজাখুলে বলল 'আয়ে'.. আয় মানে? এখনো তৈরি হও নি!?তুমি জানো না আমার এতো সময়ে নেই।
যাকগে আর পোশাক বদলাতে হবে না যাও নিচে আমার গাড়িতে গিয়ে বসো।অপরপক্ষ মাথয়ে হাত রেখে আশীর্বাদ করল,'ভালো থাকিস'তারপর নেমে গেলো নিচে।

বাড়ি টা থেকে বেরোনোর পর নিজেকে খুব হালকা লাগছে।সব কাজ সারা হয়ে গেছে এবার বাড়ি ফেরার পালা।বাঁচা গেল..বাব্বা..
ফেরার পথে,সেই বাচ্চাটির সাথে দেখা।আবার আমার সামনে ছুটে এল। বললো আজ তোমার জন‍্য আমার বাবা কত খুশি হয়েছে,আমিও হয়েছি।আমি বললাম সেটা কিরাকম?বারে,আমার দশ টাকার সাথে তোমার ওই টাকাটা যোগ করেই তো কাল বাবার জ্বরের ওষুধ কিনলাম।প্রায়ই জ্বর হয় কিন্তু রোজ তো কিনতে পারিনা,আছ তো ফাদার্স ডে তাই কিনলাম। একটা চকোলেট ও কিনেছি।বাবা খুব খুশি,বলে,আবার ওই সাদা দাঁতে হাসলো।কিন্তু এবার ওই হাসিটা বুকে শেলের মতো এসে বিধঁল। একটা বড় ভুল হয়ে গেছে।সঙ্গে সঙ্গে ছুটলাম সেই বাড়িটায়ে যেখানে আমি আমার বাবা কে রেখে এসেছি।
বাড়ি তো নয় বৃদ্ধাশ্রম।

দ্রুত উঠছি সিঁড়ি দিয়ে,দেখা ওখানকার ম‍্যেনেজারের সাথে।বললেন, আরে আপনি!আমি তো আপনাকেই ফোন করছিলাম।
আমি:কেন?
আপনার বাবা তো..
আমি:কি আমার বাবা?কি বলুন..
আপনি এখান থেকে বেরিয়ে যাওয়ার কিছুক্ষন পর.
কি হয়ছে কিছুক্ষন পর?বলুন..
আপনার বাবা আত্ম‍হত‍্যা কেরেছেন।

* * * *

পাঠকগন আপনারা কি কোনোদিনও আমায়ে ক্ষমা করতে পারবেন?আমি তো পারিনি।