...

7 views

সম্পর্ক
নমস্কার বন্ধুরা 🙏🏼 আজ আমি আপনাদের সাথে একটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করব। যদি মনে হয় পড়ে দেখবেন। পড়তেই যে হবে এমন কোন বাধ্য বাধকতা নেই।
যাই হোক বিষয়টি হল সম্পর্ক। সম্পর্ক শব্দটা খুবই ছোটো। উচ্চারণে খুব একটা বেগ পেতে হয় না। কিন্তু এর অর্থ বুঝতে গেলে আস্ত একটা জীবন কেটে যায়। কিন্তু এর অর্থ আমরা বুঝে উঠতে পারিনা। কেন পারিনা? এই বিষয়টি নিয়েই আজ আমি আলোচনা করব। আমরা জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত জীবনের পথে যতো এগিয়ে চলতে থাকি ততোই একের পর এক সম্পর্কের সাথে জড়িয়ে পড়তে থাকি। তার মধ্যেই বিশেষ কিছু সম্পর্ক হল --- মা, বাবা, ভাই, বোন, বন্ধু, বান্ধবী, প্রেমিক/প্রেমিকা এবং স্বামী/স্ত্রী। প্রত্যেকটা সম্পর্কই আমাদের কাছে খুবই মূল্যবান। স্বামী স্ত্রী বাদ দিয়ে কোনো সম্পর্কের সাথে কোনো সম্পর্কের কোনো তুলনা হয় না। এবার আপনাদের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে স্বামী/স্ত্রীর সম্পর্ক টাকে কেন বাদ দিলাম। বাদ দিলাম না পরে আসছি ঐ আলোচনায়। বিভিন্ন সম্পর্কের একটা আলাদা রূপ ও মাধুর্য আছে। সম্পর্ক গুলো ছাড়া আমারা বেড়ে উঠতে পারবোনা। সম্পর্ক গুলো যখন ঠিক থাকে তখন আমরা খুব আনন্দেই থাকি। কিন্তু যেই সম্পর্কের মাঝে ফাটল ধরে তখনই আমরা সম্পর্ক গুলোর পাশে একটা বড়ো প্রশ্নচিহ্ন বসিয়ে দি। আমারা সকলেই করে থাকি। মা/বাবার ওপর রাগ করি, ভাই বোনের সাথে ঝগড়া করি। কিন্তু আবার সব ঠিক হয়ে যায়। কারন এরা কেউ আমাদের ছেড়ে চলে যায় না। কিন্তু সবথেকে কষ্টকর হয় বন্ধুত্বের সম্পর্ক গুলো। ঝগড়ার কারনে বন্ধুত্বের সম্পর্ক গুলো আমাদের ছেড়ে চলে যায়। কেউ ফিরে আসে আবার কেউ হারিয়ে যায়। ঠিক তেমনি হয় প্রেমিক প্রেমিকার সম্পর্ক গুলো। আসলে মা বাবা অথবা ভাই বোন এরা আমাদের সাথে থাকবেই। কিন্তু বন্ধু/বান্ধবী বা প্রেমিক প্রেমিকা এই সম্পর্কের কোনো দায়বদ্ধতা থাকে না। আসলে এই সম্পর্ক গুলোকে আমরা বুঝি না বা বোঝার প্রয়োজন মনে করি না। যখন আমরা প্রেম করি তখন আবেগে ভেসে থাকি। কিন্তু বিশ্বাসে আঘাত ঘটলে সেই আবেগ অন্য রূপ ধারণ করে এবং সম্পর্ক গুলো ভেঙে যায়। আসলে আমরা প্রেমিক প্রেমিকা হতে পারি, কিন্তু স্বামী স্ত্রী হয়ে উঠতে পারি না। এখন প্রেম করছি থাক না যদি ছেড়ে চলে যায় বাবা মায়ের পছন্দ করা পাত্র/পাত্রিটিকেই না হয় বিয়ে করে নেব। এই হল সবথেকে বড় সমস্যা এই সম্পর্কের। আমরা কখনোই সম্পর্ক গুলোকে বুঝতে পারিনা।
এবার আসি স্বামী স্ত্রীর সম্পর্ক নিয়ে। এই পৃথিবীতে সবথেকে জটিল সম্পর্ক কি জানেন? স্বামী স্ত্রীর সম্পর্ক। আমি এই কারণেই স্বামী স্ত্রীর সম্পর্ক টাকে সম্পূর্ণ আলাদা করে দিলাম। এখন দেখা যায় বেশিরভাগ স্বামী স্ত্রীর সম্পর্কের মাঝে সেই গভীরতাটা নেই। Social networking sites এ প্রায়ই দেখা যায় স্বামী/স্ত্রী একে অপরকে নিয়ে দোষারোপ করছে। কেউ বন্ধু বান্ধবীর কাছে স্বামী স্ত্রীর সম্পর্ক নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করছে। এর ফলে সম্পর্ক গুলোর মধ্যে দূরত্ব বাড়ছে। আমি সেই সব মানুষের কথা বলছি না যারা চরিত্র হীন। আমি সেই সব মানুষদের কথা বলছি যারা এক সময় হয়তো একে অপরকে পছন্দ করে বিয়ে করেছিল। কেউ ভালোবেসে আবার কেউবা দেখাশোনা করে। কিন্তু এখন সম্পর্কটার মধ্যে সেই মাধুর্য টাই নেই। আসলে ভুলটা সম্পর্কটার নয়। ভুলটা আমাদের চিন্তার। স্বামী স্ত্রীর সম্পর্কটা আসলে আমরা বুঝতেই পারিনা বা চাইনা। আসলে এটা কোনো একটা সম্পর্ক নয়। আমাদের যেটা বুঝতে হবে সেটা হলো স্বামী স্ত্রীর সম্পর্কটা হলো আমারা জন্ম থেকে যতগুলো সম্পর্কের মাঝে বড়ো হয়েছি সেই সব সম্পর্কের সমন্বয়ে তৈরি একটা সম্পর্ক। সব সম্পর্কের যোগফল। যেখানে থাকবে মা বাবার স্নেহ, ভালবাসা, শাসন। ভাই বোনের খুনসুটি। বন্ধুর সঙ্গে সুখ দুঃখের কথা বলা। প্রেমিক প্রেমিকার গভীর ভালোবাসা। আর স্বামী স্ত্রীর অনেকটা বোঝাপড়া। সব মিলিয়ে এক অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক। আমাদের বুঝতে হবে প্রত্যেকটা মানুষ আলাদা, তাদের চিন্তা ধারা আলাদা। আসলে স্বামী স্ত্রীর সম্পর্কটা হলো কোনো একটা লেখকের লিখে যাওয়া একটা বেনামী বই। যার নামকরণ তিনি করে যাননি। আমরা যত বইটাকে পড়বো আমরা তত সেটার সম্পর্কে জানতে পারবো। আমরা প্রথমেই যদি সব জেনে যাই তাহলে প্রেমিক প্রেমিকার বিচ্ছেদ ঘটবে না। কারন তখন সেই সম্পর্কটা স্বামী স্ত্রীর সম্পর্ক হয়ে যাবে। এটা সম্ভব হয়না। বিচ্ছেদ যেমন প্রেমিক প্রেমিকার মধ্যে হয়, তেমনিতো স্বামী স্ত্রীর মধ্যেও হয়। কী হয়না? কত প্রেমের সম্পর্ক বিয়ের পর ভেঙে যায়নি? তাই বন্ধুদের বলবো স্বামী স্ত্রীর সম্পর্কটাকে আগে বুঝুন। এটা ঈশ্বরের সৃষ্ট সেই বন্ধন যা জন্ম জন্মান্তরের। যা অবিচ্ছেদ্য। কোনো সম্পর্কের মাঝে Options রাখবেন না। Options রাখার অর্থ ফাঁক। যে ফাঁক দিয়ে অনায়াসেই তৃতীয় ব্যক্তি আপনার জীবনে প্রবেশ করবে। আসলে স্বামী স্ত্রীর সম্পর্কটা কোনো আসবাবপত্র নয়। যে আজ ভালো লাগলো কিনলেন, কাল ভালো না লাগলে ছুঁড়ে ফেলে দেবেন।
আর একটা কথা বলতে চাই, আপনারা অনেকেই You tube motivational videos দেখেন, speech শোনেন। ভালো আমি শুনতে বারন করবোনা। আমিও শুনি। অনেক শিক্ষা পাওয়া যায়। কিন্তু সবকিছুকে নিজের জীবনের সাথে মিলিয়ে ফেলবেন না। নিজের মনের কথা শুনুন। মনে রাখবেন ওটা ওনাদের Profession. সব মিলিয়ে জটিল করে তুলবেন না জীবনটাকে। আশাকরি আপনারা যারা এই সম্পর্কের দোলাচলে ভুগছেন তাদের একটু সাহায্য করতে পারবো। ভালো থাকবেন সবাই। 🙏🏼😊
© Moner kobita