স্বপ্ন মাখা তারা
"...এখানে দাঁড়িয়ে হাঁ করে কী দেখছিস ? যা গিয়ে বাসন গুল মেঝে ফেল। আর ওবেলা একটা প্লেট ভেঙেছিস । তোর এমাসের মাইনে থেকে ওটা কেটে নেব।"
ছোটো একটা হোটেলে কাজ করে ১২ বছরের সৌরিশ। জ্ঞান হওয়া থেকে এটাই ওর ঘরবাড়ি। সরল ছেলে বলে সবাই তাকে স্নেহ করে, কিন্তু তার একটা বড়ই বাজে স্বভাব আছে। সে পড়তে চায়। এর আগে নাকি বাবুদের স্কুলে ভর্তি হওয়ার জন্য টাকা চুরি করে দুবার পালিয়েও গেছিলো।
সেবার এখানকার বড় স্কুলের হেডস্যার রিটায়ার করলেন। বদলে অন্য একজন এলেন। ওনি মাঝে মাঝে আসতেন ওদের হোটেলে। ওর পড়ার ইচ্ছা দেখে মাঝেসাঝে একটু পড়াতেনও। কিন্তু হটেলের মালিকের ভয়ানক আপত্তির ওপর ওনি আর কিছু বলেলনি। ওনি যখন কলকাতা চলে গেলেন ,ওনার সাথে যাওয়ার জন্য প্রচন্ড জেদ ধরেছিল, পালিয়েওছিল ওই কারনে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ওনি রাজি হলেন না।
রাতে হোটেলের শক্ত বেঞ্চে মাথা রেখে শূয়ে সে নিজেকে শার্ট প্যান্ট পরে স্কুলের বেঞ্চে কল্পনা করে । পাশে আরও একজন বসে , ঠিক চিনতে পারে না, হয়ত বাবা.. মাথায় হাত রেখে বলে " তুই পড়বি, নিশ্চয়ই পড়বি দেখিস"। মনে মনে সে আমদ পায়। সারাদিনের অজস্র ক্লান্তি যেন কোথায় উবে যায়। তারা গুলো গোনার চেষ্টা করে ।.. ১..২..৩..৪..৫..৬ ..নাহ্ খালি গুলিয়ছ যায়। তারপর কখন ঘুম নেমে আসে টের পায় না।
© rupkotha@Tithi