...

11 views

ছাত্রসমাজের ভবিষ্যত
কথায় বলে, সকালটা দেখলে নাকি বোঝা যায়, সারাদিন কেমন যাবে ।এই প্রবাদবাক্য যে সবৈব সত্য হবে তাও নয় ।যেমন 2021 বিধানসভা নির্বাচনে বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে তৃণমূল-বিজেপি যতই রাজনীতি করুক না কেন তাদের "ভবিষ্যত" কিন্তু পেন্ডুলামের মতো দুলছে ।আচ্ছা ভবিষ্যতের কথা যখন আসলোই তখন একটু উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের ভবিষ্যত নিয়ে আলোচনা করা যায়। কেউ আবার আমাকে রাজনীতি বিশেষজ্ঞ ভেবে ভুল করবেন না। আর ভাবলে ও আমার করার কিছুই নেই । ইতিমধ্যে আমরা শুনেছি রাজ্য সরকার এবারের মতো বাকি পরীক্ষাগুলো বাতিল করেছে ।বেশ ভালো কথা। এই পরিস্থিতিতে পরীক্ষা নেওয়াটা সোনার পাথরবাটির মতো।এই সিদ্ধান্তকে কুর্ণিশ জানাতেই হয় ।কিন্তু পরীক্ষা পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে আমার কিছু প্রশ্ন আছে । সবথেকে হাস্যকর লেগেছে ঐচ্ছিক পরীক্ষা নেওয়ার ব্যাপারটা, অবশ্যই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে। কবে কীভাবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে তার জন্য ছাত্রসমাজকে চাতক পাখির মতো হা-পিত্যেশ করে বসে থাকতে হবে? তাদের ভবিষ্যত নিয়ে ছিনিমিনি খেলা বা খেলার চেষ্টা করা কোনোটাই তাদের এক্তিয়ারের মধ্যে পড়ে না । তার চেয়ে ও বড় কথা, হয়ে যাওয়া পরীক্ষাগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ নম্বর অসমাপ্ত পরীক্ষাগুলোর প্রাপ্তনম্বর হিসেবে বিবেচিত হবে । ব্যাপারটা একটু খোলসা করা যাক, ধরুন কোনো একজন সম্পন্ন হয়ে যাওয়া যাওয়া পরীক্ষাগুলোতে সর্বোচ্চ 70 নম্বর পেয়েছে অর্থাৎ বাকি থাকা পরীক্ষাগুলোতে ও যেমন রসায়ন, পদার্থবিদ্যা বা ভূগোলে তার প্রাপ্তনম্বর হবে 70 ই। একজন মেধাবী ছাত্র হিসেবে সে এর থেকে বেশি নম্বর আশা করতেই পারে ।কিন্তু হতাশ হওয়ার কারণ নেই , তার জন্য পথ খোলা আছে, ঐ যে ঐচ্ছিক পরীক্ষা ।তবে তার আগে হা করে বসে থাকতে হবে । কেন্দ্রীয় সরকার যেমনভাবে লকডাউন 1.0 থেকে 4.0 পর্যন্ত টানছে সেরকমভাবেই পরীক্ষা নেওয়াটা 2020 থেকে 2021 এ চলে গেলে বলার কিছু থাকবে না । আসলে আমাদের রাজ্যে মেধাকে টুঁটি টিপে মারার অভ্যাসটা তৈরি হয়েছিল তখন থেকেই যখন নম্বরের ভিড়ে হারিয়ে গিয়েছিল প্রকৃত মেধারা। এই ইঁদুর দৌড়ে সবাই ছুটেই চলেছে । কে কতটা শিখলো বা জানলো তার দাম কেই বা কখন দিয়েছে! কিন্তু বাইরের দেশে বাঙালির মেধা অনস্বীকার্য ।ভারতবর্ষের মোট 7 জন নোবেলপ্রাপকদের মধ্যে 4 জনই পশ্চিমবঙ্গের!! সে যাই হোক, পরীক্ষা পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে ছাত্রসমাজ তিন ভাগে ভাগ হয়ে গেছে । একদল,চরম উল্লসিত, সারাবছর টিকটক শেয়ার করতে করতে ও উচ্চমাধ্যমিকটা উতরে দিল; দ্বিতীয়দল,মনে প্রাণে পরীক্ষাটা যাতে বাতিল হয়ে যায় কিন্তু পাবলিকের সামনে এমনভাব যেন তার কতক্ষতি হয়ে গেল; আর তৃতীয়দল, যারা সারা বছর নিষ্ঠা- অধ্যবসায়ের সাথে পড়াশোনা করে এল, তাদের খারাপ লাগাটা স্বাভাবিক ।আমাদের কাজ শুধু সরকারের সমালোচনা করাই নয়,প্রয়োজনে বিকল্প পন্থাও বাতলে দেওয়া উচিত ।দীর্ঘ অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, আমার মনে হয়, প্র্যাকটিক্যাল বেসড বিষয়গুলির প্র্যাকটিক্যালের নম্বরের ভিত্তিতে নম্বর দেওয়া উচিত ।যেহেতু প্র্যাকটিক্যাল পরীক্ষা গুলো নিজের স্কুলেই হয়,তাই শিক্ষকরা বেশিরভাগ সময়ই ছাত্রটির academic background দেখেই নম্বরটা বসিয়ে দেয় ।এক্ষেত্রে ছাএ- শিক্ষক সম্পর্কটাও জরুরি । সবাই আমার সাথে সহমত নাও হতে পারেন। আর নন-প্র্যাকটিক্যাল বিষয়গুলির জন্য মোট প্রাপ্তনম্বরের গড় বসানো যেতে পারে ।আসলে সবাই নিজের নিজের মতামত পোষণ করলে কোনো না কোনো সুরাহা এর হবেই ।হয়তো কোনো সুশান্তকে হারাতে হবে না আমাদের আর এটাই হবে প্রকৃত মেধার জিয়ন কাঠি।


(বিঃদ্রঃ আমি কোনো রাজনীতি দলের পক্ষপাতীত্ব করছি না। এটা সম্পূর্ণই আমার নিজস্ব মতামত ।ধন্যবাদ)