...

2 views

ভূত বাংলো
সময়টা পড়ন্ত বিকেল।শ্রেয়সী আর আমি দুজনেই বেশ গল্পের আসর জমিয়ে ফেলেছি।এমন সময় হঠাৎ সৌমিলিদির আগমন।



-"আরে সৌমিলি দি তুমি!কেমন আছো? "চেঁচিয়ে উঠলো শ্রেয়সী। আমি বেশ অবাক ও হতভম্ব হয়ে বসে আছি দেখে সৌমিলি দি আমায় এসে জড়িয়ে ধরলো।
আমার বাড়িতে আজ শ্রেয়সী এসেছে।এমন সময় সৌমিলি দি আসবে ভাবতেও পারিনি। ও আসায় আমাদের গল্পের আসর আরো জমে গেলো।

       হঠাৎ সৌমিলি দির মাথায় একটা প্ল্যান এলো। সে বললো -" এই শোন তোরা,এখন আমাদের কলেজ ছুটি।কোথাও বেরিয়ে আসবি?"
আমি: "এই তো! এদ্দিনে তোমার মাথায় ভালো বুদ্ধি এসেছে বল কোথায় যাবে।"
শ্রেয়সী: "চল। দেবকের ঐ দিকে গিয়ে পিকনিক করি"
সৌমিলিদি: "ধুর! পিকনিক! পিকনিকের গুলি মেরেছি! চল। তার থেকে ভুতের দেশে ঘুরে আসি।"


"ভুতের দেশ!" সমস্সরে চেঁচিয়ে উঠলাম আমি আর শ্রেয়সী।

"কোথায় সেই ভুতের দেশ?" - শ্রেয়সী।
"বলছি। বলছি। একটু সবুর কর। ভালো জিনিস পেতে হলে সবুর করতে হয়। শোন,পায়রাডাঙ্গা নেমে অটোয় উঠে বলতে হবে কমলপুর যাবো।তারপর কমলপুর থেকে সোজা হেটে দশ মিনিট গেলে সেই বাংলো,যেই বাংলোয় নাকি ভুত আছে।যদিও আমি অনেক ছোটবেলায় গেছিলাম তখন আমার বয়স ছিলো তিন।মা বাবা আর কাকু কাকিমার সাথে গেছিলাম..কিছুই মনে নেই।"- এতটা বলে সৌমিলি দি থামলো।


   " বেশ ইন্টারেস্টিং মনে হচ্ছে!"- চেঁচিয়ে উঠলাম আমি।
শ্রেয়সী -"যখন সত্যি সত্যি ভুতে ঘার টা মটকাবে তখন দেখবি আহা!কি ইন্টারেস্টিং! ধেই ধেই করে নাচিস তখন।আর এই সৌমিলিদি তুমি দেশে এতো জায়গা থাকতে শেষে কিনা ধেরধেরে কমলপুর যাচ্ছ!হ্যা?বলিহারি তোমায়!কি বুদ্ধি!"
আমি:" আচ্ছা, সৌমিলি দি..তা বলি,জায়গা টা বেশ নির্জন তো নাকি?বেশ নির্জন এলাকায় ভুতের সাথে বসবাস করার মজাই আলাদা।"

শ্রেয়সী: "কি!কি বললি তুই!ভুতের সাথে বসবাস? মাথা টা কি একেবারেই গেছে নাকি?"
"কাকিমা শিগগির এক কাপ চা খাওয়াও তো!"


           বলতে বলতে চা হাজির।
"ধর ধর চা খা।মাথাটা বেগরবাই করছে তোর, তুই ঠিক আছিস তো অর্চি?"-শ্রেয়সী।
-" শুরু হলো তো আবার,থাম তুই"- বললাম আমি।
-"তা সৌমিলি দি তাহলে চলো যাওয়া যাক।"- আমি বললাম।
-শ্রেয়সী: " মানে?যাওয়া যাক মানে? এখন...কমলপুর...ভুতের দেশ...মানে?"
-আমি(অর্চি): "আরে ধুর!এখন কেন? বলছি,সব রেডি করে নিই।"
-সৌমিলিদি: "হ্যা,হ্যা, সেই ভালো ,কোথায় বলে -'শুভস্য শীঘ্রম'
সমস্সরে: হাঃ হাঃ।




   " প্লিজ,প্লিজ।রাজি হয়ে যাও না প্লিজ"- আমি বোঝাতে লাগলাম,বাবাকে।
"হ্যা,কাকু,প্লিজ"- ওরাও বোঝালো।
শেষে বাবা রাজি হয়ে গেলো।শ্রেয়সী আর সৌমিলিদির ফ্যামিলিও রাজি। ঠিক হলো সামনের সপ্তাহের সোমবার আমরা ভূতবাংলোয় ভুত এক্সপেরিমেন্টে যাবো।
যতই দিন এগিয়ে আসছে ততই যেন মনে জোর পাচ্ছি,ইন্টারেস্ট বাড়ছে। একটা আলাদাই উত্তেজনা হচ্ছে।আমি ,সৌমিলি দি আর শ্রেয়সী তিন জনেই ভুতে বিশ্বাস করিনা,তবে শ্রেয়সী যে একেবারেই করে না তা নয়,একটু একটু করে ,সময় বিশেষে।


         দেখতে দেখতে নির্দিষ্ট দিন চলে এলো।উঠে পড়লাম ঘুম থেকে।সৌমিলিদি কে সময় মতো ফোন করতে যাবো এমন সময় কলিংবেল বেজে উঠলো,খুলেই দেখি সৌমিলি দি।কিছুক্ষনের মধ্যেই শ্রেয়সী ও চলে এলো।
সকাল নটা। নটা কুড়িতে ট্রেন।যথারীতি সময়মতো স্টেশন চলে এলাম। ট্রেনে উঠে সিট ও পেয়ে গেলাম। গল্প করতে করতে চলে এলাম পায়রাডাঙ্গা। তারপর অটো তে উঠে কমলপুর।হাটতে হাটতে অদূরে দেখা যায় এক বাংলো।

সৌমিলিদি আনন্দে চিৎকার করে ওঠে " পেয়েছি!খুঁজে পেয়েছি!"
আমি সৌমিলিদি আর শ্রেয়সী তিনজনেই গেলাম বাংলোটাতে।

          সামনে বিশাল বাগান,মাঝখান দিয়ে সানবাধানো রাস্তা,বাগানে অনেক ধরণের গাছ- জুই, চন্দ্রমল্লিকা, চাঁপা, গোলাপ, নয়নতারা, লিলি, রক্তকরবী ইত্যাদি। বাগান পেরোলেই সামনে বিরাট বাংলো।
বাংলো তে ঢুকবো কি ঢুকবো না ভাবছি এমন সময় খাকি পোশাক পরা একজন বাংলো থেকে বেরিয়ে এলো। দেখে মনে হলো চৌকিদার।
লোকটা জিজ্ঞাসা করল- "আপনারা ভুত দেখতে এসেছেন?"
আমি বললাম হ্যা।
চৌকিদার: "বেশ তো। আপনারা একটু দাঁড়ান। বাংলোর ঐ কোনের ঘরে আমি থাকি।বাকি ঘর গুলো তালাবন্ধই থাকে। সপ্তাহে দুদিন পরিষ্কার করি, ঝাড়পোছ করি। আপনারা দাঁড়ান, আমি চাবি নিয়ে এসে আপনাদের ঘরগুলো বরং দেখাই। তারপর যে ঘর ভালো লাগবে সে ঘরেই নাহয় থাকবেন।"
সৌমিলি দি: "বেশ , যান, চাবি নিয়ে আসুন।"
                                       (কিছুক্ষন পর)
চৌকিদার: "আসুন, ভেতরে আসুন।"


                দুটো সিঁড়ি টপকে বাংলোতে ঢুকলাম। দেখলাম এক কোনে চৌকিদারের জন্য একটা ঘর, একটা রান্নাঘর, একটা বাথরুম। এছাড়া নিচের...