...

3 views

প্রেম যখন সূর্যপূজা (পর্ব-৯)
কার্তিক মাস প্রকৃতিতে প্রবেশ করা মানেই হেমন্তের আগমন।হালকা শীতের আমেজ।গাছের পাতায় শিশিরবিন্দুর সারারাত আকাশ দীপ হয়ে জ্বলে থাকা।দেখতে দেখতে এসে গেল দীপান্বিতা আমাবস‍্যা।দীপাবলী এমন এক শুভ অমানিশি যখন ঘরে ঘরে প্রজ্বলিত দীপশিখার আলোয় অমাবস‍্যার ঘন কালো অন্ধকারও নির্দ্বিধায় হার মেনে যায়।আতসবাজি র রোশনাইয়ের মাঝে অলক্ষ্মীকে বিদায় দিয়ে শ্রীলক্ষ্মীর চিরস্থায়ীত্ব কামনায় সন্ধ্যায় দীপান্বিতা কৃত‍্য এবং মধ‍্যরাত্রে শ‍্যামা মায়ের আরাধনা যেন নিঝুম রাতের নিস্তব্ধতাকে নতুনরূপে বরণ করে নেয়।

সূর্য-পূজার ভালো বন্ধুত্ব এখন একে অপরের সবচেয়ে প্রিয় বন্ধুত্বে উন্নিত হয়েছে।সূর্য-পূজার আজকের এই বন্ধুত্বে নেই কোনো ব‍্যক্তিগত ইচ্ছাপূরণের সাধ,না আছে নতুন কোনো পরিণতির অপেক্ষা অথচ একে অপরকে বোঝার,জানার আর পাশে থাকার তীব্র সুপ্ত আকাঙ্ক্ষা আছে।সূর্য-পূজার অজান্তেই দুজনের মধ‍্যে এমন এক প্রকৃত বন্ধুত্বের অনুভূতিপূর্ণ একটি সুগভীর সুদৃঢ় বন্ধন গড়ে উঠেছে যা সহজে ছিন্ন করা জ্ঞানত দুজনের পক্ষে আর সম্ভব নয়।সূর্য-পূজার বিয়ের প্রস্তাবটি অভিভাবক মহলে উঠে প্রত‍্যাখ‍্যানের ফলস্বরূপ সূর্য-পূজার সম্পর্কে দূরত্বের পরিবর্তে কোথায় যেন মানসিক নৈকট্য এসে গেছে।মহালয়ার পর থেকেই পূজার কয়েকটা দিন বাদ দিয়ে প্রায় প্রতিদিনই একে অপরের সঙ্গে কথা হয়েছে সূর্য-পূজা র।ধনত্রয়োদশীর সকাল; সূর্য পূজাকে ম‍্যাসেজ করল:
সূর্য:"সুপ্রভাত।কি করছো এখন?অনলাইনে আছো দেখছি।নোটস্ দেখছো?"
পূজা:"হ‍্যাঁ।তুমি কি করছো?অফিস নেই আজ?"
সূর্য:"আজ ছুটি নিয়েছি।বিশেষ কিছু নয়।তুমি অনলাইন দেখে এই ম‍্যাসেজ করলাম।আচ্ছা তোমাদের মিশনে ছাত্রদের জীবনযাত্রার কথা একটু বলবে।আমার তো সৌভাগ্য হয়নি এরকম মিশনের পরিবেশে থেকে পড়াশোনা করার।তাই জানতে ইচ্ছা করছে।"
পূজা:"এখানের ছাত্রদের ভোর চারটায় ঘুম থেকে উঠে শুদ্ধ বস্ত্রে মন্দিরে যেতে হয়।শঙ্খধ্বনি আর মঙ্গলারতির মধ‍্য দিয়ে প্রতিদিন একটি সুন্দর সকালের শুরু হয়।ঠাকুরের প্রার্থনা আর গানে মুখরিত হয়ে ওঠে ভোরের পরিবেশ।তারপর ওরা যে যার ঘরে পড়াশোনা করে।খাওয়াদাওয়া করে বেলা ১১টায় বিদ‍্যালয়ে যায়।বিকেল ৩টায় ছুটি হলে খেলাধূলার পর আবার মন্দিরে সন্ধ‍্যারতির সময় প্রার্থনা হয়।ফিরে গিয়ে আবার পড়াশুনা।রাত ৮:৩০টায় নৈশভোজ করে রাত ১০:৩০টার মধ‍্যে ঘুমোতে যায় ছাত্ররা।এই হচ্ছে মিশনের ছাত্রদের রুটিন।"
সূর্য:"তুমি মিশনেই পড়াশোনা করেছো?"
পূজা:"নাতো।মিশনে শুধুমাত্র ছেলেদের বিদ‍্যালয়ে আছে।আমি যে ইংরেজী মাধ‍্যম স্কুলে পড়েছি
সেটি মিশনেরই একজন শিক্ষক শুরু করেছিলেন।উচ্চমাধ্যমিকের পর খ্রিষ্টান মিশনারী স্কুলে পড়াশোনা করেছি।তারপর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে থেকে ইংরেজীতে স্নাতক হয়েছি।বাবার কর্ম সূত্রে মিশনের কোয়ার্টার্সে আমরা থাকি।জন্ম থেকেই আমি এখানে বড় হয়েছি।পাশেই ঠাকুরের মন্দির।আমি একটু লেট্ রাইজার।দেরী করে ঘুম থেকে ওঠার জন‍্য জ‍্যেঠামশাই য়ের কাছে কত বকা খেয়েছি।তবে শঙ্খধ্বনি,সকালের মঙ্গরারতি আর সন্ধ‍্যায় সন্ধ্যারতির সাথে ঠাকুরের গান শুনতে পাই।পড়াশোনা র ফাঁকে মাঝে
মাঝে টেলিভিশনও দেখি আমি।রামায়ণ, মহাভারত, আধ‍্যাত্বিক ও পৌরাণিক গল্প,সাহিত্য,জ‍্যোতিষ সম্বন্ধীয় শিক্ষনীয় ক্লাস,বাস্ততত্ত্ব----এগুলো জানার প্রতি আমার খুব আগ্রহ।মাস কয়েক হল কম্পিউটার কিনেছি।সোসাল সাইটটিতে আমার এক বান্ধবী জোর করেই আমার নামে একাউন্ট খুলে দিয়েছিল।ছোটবেলার বন্ধুদের সাথে যোগাযোগ আর নতুন কয়েকজন বন্ধুর কাছ থেকে কিছু শিখব বলেই রাজী হয়েছিলাম সোসাল সাইটে একাউন্ট খোলার জন‍্য।এমনিতে ফোনে বা নেটে অযথা কথা বলে সময় নষ্ট করার অভ‍্যেস একেবারেই নেই আমার।অবসরে কম্পিউটারে ছবি আঁকা, কবিতা লেখা,গল্পবই পড়া,গান শোনা---এগুলো খুব ভালোবাসি আমি।এভাবেই দিন কাটাই আমি।তোমার কিভাবে দিন কাটে?"
সূর্য:"তোমার ছবি আর কবিতাগুলো আমি নেটে দেখেছি।আমার খুব ভালো লেগেছে।তোমার একাউন্টে সেভ্ করা তোমার পছন্দের গানগুলোও খুব ভালো লাগে আমার।আমি বাংলা মিডিয়ামের সাধারণ ছাত্র।পাশ গ্র‍্যাজুয়েট।M.C.A পড়া শুরু করেছিলাম।পারিবারিক অসুবিধার জন‍্য শেষ করতে পারিনি।আমার পোষ্টিং পশ্চিম মেদিনীপুরে র দাঁতনে।প্রতিদিন ২ঘন্টা করে ৪ঘন্টা যাতায়াতেই চলে যায়।ফিরে এসে দোকানে একটু বসতাম।ভাইয়ের সঙ্গে বিজ্নেশ নিয়ে কথা বলি।কখনও ভালো বই পড়ি।গান শুনি।এইভাবেই চলে প্রতিদিন।আমার সেভাবে ভালো বন্ধু নেই।তবে বর্তমানে অফিস থেকে ফিরে এই সোসাল সাইটে তোমার সাথে কথাবার্তা হলে ভালো লাগে।আচ্ছা মিশনে কি কালীপূজা হয়?"
পূজা:"হ‍্যাঁ।প্রায় সারারাত পূজার ওখানেই থাকি আমরা।মিশনে তো খুব নিয়মনিষ্ঠা মেনে পূজা করেন মহারাজ।সঙ্গে শ‍্যামাসঙ্গীত গাওয়া হয়।এই রাতটায় মায়ের পূজা দেখতে ভীষণ ভালো লাগে আমার।"
সূর্য:"মিলনিতে কালী পূজা হয় জানতো?বছর তিনেক হল আমি কালীপূজায় নির্জলা উপবাসী থেকে পুষ্পাঞ্জলি দিই।"
পূজা:"এতো খুব ভালো।আজ উঠতে হবে।"
সূর্য:"ঠিক আছে।আমারও একটু কাজ ছিল।bye."
দুজনেই অফলাইন হল।রেডিওতে শোনা গেল রবিঠাকুরের একটি অনবদ‍্য কবিতা পাঠ।


পরেরদিন নরক চতুর্দশী।কেউ দেবমন্দিরে,কেউ তুলসীতলায়,কেউ বা ঘরের মন্দিরে পিতৃপুরুষদের উদ্দেশ্যে চৌদ্দটি দীপদানের পালা।আজ সন্ধ্যায় চৌদ্দটা দীপ জ্বেলেছে পূজাও।সকালে আজ সূর্যের অফিস ছিল।বাড়ি ফিরে পূজাকে ম‍্যাসেজ করল।এতদিনে সূর্যের এমনই অভ‍্যাস হয়ে গেছে যে একদিন পূজার খবর না নিলে সূর্যের মনের ভিতর কেমন একটা কিছুর অভাব অনুভূত হয়।

রাতের নৈশাহারের পর পূজা অনলাইনে এল।সূর্যের ম‍্যাসেজটা পড়ছে পূজা:
"আমার অনেকদিন একটা সুপ্ত ইচ্ছা ছিল M.B.A করার।ভাবছি এবার M.B.Aতে ভর্তি হব।অফিস থেকে দুবছরের জন‍্য তো আর leave দেবেনা।তাই মেদিনীপুরে Sikkim Manipal Universityর একটা Institute থেকে এই মাসেই M.B.Aতে Diploma course করার জন‍্য ভর্তি হব ভাবছি।"

একটু ভেবে প্রতু্্যত্তরে পূজা লিখল:
পূজা:"Best of luck. বন্ধু হিসেবে নিশ্চয় চাইব যে ঘরে বাইরে কখনও জীবনে আর কখনো কেউ যেন বাহ‍্যিক গুণের অভাবের জন‍্য তোমার আভ‍্যন্তরীণ গুণকে অবহেলা না করতে পারে।আসলে কি জানো তো বাহ‍্যিক গুণ চেষ্টা করলে পরে অর্জন করা যায়,কিন্তু আভ‍্যন্তরীণ গুণগত মানটাই একজন মানুষের মূল আধার।"
মিনিট পনেরো পর পূজা অফলাইন হল।

ঘন্টা খানেক পর সূর্য অনলাইন হল।পূজার ম‍্যাসেজটা পড়ে উত্তরে লিখল:
সূর্য:"Thank you.এটা যদি সবাই বুঝে যেত তাহলে তো পৃথিবীতে আর কোনো সমস‍্যাই থাকত না।তুমি বুঝেছো বলে হয়তো তোমার ভালো বন্ধু হয়ে উঠতে পেরেছি।কিন্তু সবাই তো তোমার মতো হবে না।শুভরাত্রি।"

আজ দীপাবলী।সকাল সকাল পরিপাটি করে নিজের ঘরটিকে সাজিয়েছে পূজা।রেডিও তে রবীন্দ্রনাথের পূজা থেকে সংগৃহীত এক অনবদ‍্য কবিতা পাঠ চলছে:-
"এত আলো জ্বালিয়েছ এই গগনে
কী উৎসবের লগনে॥
সব আলোটি কেমন ক’রে ফেল আমার মুখের ‘পরে,
তুমি আপনি থাকো আলোর পিছনে ॥

প্রেমটি যেদিন জ্বালি হৃদয়-গগনে
কী উৎসবের লগনে
সব আলো তার কেমন ক’রে পড়ে তোমার মুখের ‘পরে,
আমি আপনি পড়ি আলোর পিছনে ॥"

ল‍্যান্ড ফোনটা হঠাৎ বেজে উঠল।পূজা কাছেই ছিল।সরোসিজ বাবুর ফোন।
পূজা:"হ‍্যালো।"
সরোসিজ বাবু:"হ‍্যালো।সুপ্রভাত মামণি।আজ তো কালীপূজা।কি খবর তোমাদের?"
পূজা:"সুপ্রভাত।হ‍্যাঁ আমরা ভালো আছি।তোমাদের সব খবর ভালো তো?"
সরোসিজবাবু:"হ‍্যাঁ।এখানেও সব ভালো।প্রতিবছরের মতো বাড়িতে ঘটে কালীপূজা র প্রস্তুতি চলছে।আমি তোমার দাদাকে নিয়ে একটা বিশেষ দরকারে এই সময় কলকাতা যাওয়ার পরিকল্পনা করছিলাম।তোমার বাবাকে জানিয়েছিলাম কয়েকদিন আগে।আগামীকাল আমরা তোমাদের ওখানে যাচ্ছি।তিন-চারদিন পর ফিরব।সেইজন‍্যেই আজ ফোন করলাম।"
পূজা:"বাবা কয়েকদিন আগে বলছিলেন এই ব‍্যাপারে।তোমরা কাল ভোরে বেরোবে তো?"
সরোসিজ বাবু:"হ‍্যাঁ।ভোরেই রওনা হব।এবারে তোমার দাদাকে ভাইফোঁটা ওখানেই দিতে পারবে তুমি।ঠিক আছে মামণি।আগামীকাল গেলে কথা হবে।বাবা-মাকে খবরটা জানিয়ে দিও।"
পূজা:"এখুনি জানিয়ে দিচ্ছি।"
সরোসিজ বাবু:"এখন রাখলাম তাহলে।"
পূজা:"হ‍্যাঁ।সাবধানে এসো তোমরা।"

দীপাবলীর সন্ধ্যা।ঘরে ঘরে মোমবাতি, দীপশিখার আলোয় সজ্জিত ভারত ভূপ্রদেশ।পূজা ও তার মা সুন্দর করে আলো দিয়ে কোয়ার্টার টি সাজিয়েছেন।মিশনের মন্দির প্রাঙ্গণে আলোর অপরূপ শোভা।
আজ সন্ধ্যায় পূজার মা অলক্ষ্মী ও শ্রীলক্ষ্মীপূজা নিষ্ঠাভরে করেছেন।সন্ধ্যা ৭টা বাজে।পূজা অনলাইন হল।সূর্যও কিছুক্ষণ আগে অনলাইন হয়েছে।পূজা অফলাইন ছিল বলে এতক্ষণ পূজার গানের ভিডিওগুলো শুনছিল সূর্য।অনলাইন ম‍্যাসেজের মাধ‍্যমে প্রতিদিনের মতো আজও সূর্য-পূজার কথোপকথন শুরু হল।
সূর্য:"শুভ সন্ধ্যা।শুভ দীপাবলী।মা-বাবার সঙ্গে আজকে রাতে মিশনের শ‍্যামাপূজা দেখতে যাবে তো?"
পূজা':"হ‍্যাঁ।ওখানে দশটার পর যাব।"
সূর্য:"এখন কি করছিলে?"
পূজা:"এই তো ঘরে আলো দিয়ে একটু সাজানো হল।আমার এক ছোট বেলার বন্ধুর সঙ্গে প্রতিবছর বাজি পোড়াই।এবছর প্রথম সে এখানে নেই।ঘুরতে বাইরে গেছে।তাই মনটা খারাপ লাগছে।"
মিনিট তিনেক পর:-
সূর্য:"জানি না কেন এমন দিনে তোমার মন খারাপ শুনে খারাপ লাগল। সত‍্যি বলছি তোমার কষ্ট হলে প্রথম থেকেই আমারও খুব কষ্ট হয়।একটা E-card পাঠিয়েছি।দেখো ভালো লাগবে।"

পূজা E-card এর লিঙ্কে গিয়ে একটা ভিডিও কার্ড পেল।কার্ডে নিজের হাতে প্রদীপ ও ফুলঝুরি জালানোর ব‍্যাপার ছিল।পূজা অনেকক্ষণ নিরুত্তর দেখে সূর্য আবার ম‍্যাসেজ করল।
সূর্য:"কার্ডটা ভালো না?"
পূজা:"হ‍্যাঁ।"
সূর্য:"আচ্ছা,পরশু ভাইফোঁটা।সোমবার বলে এবারে ফোঁটা হবেনা।মঙ্গলবার হবে।তুমি কাকে ফোঁটা দেবে?
পূজা:"জ‍্যেঠামশাই আর আমার খুড়তুতো দাদা আসছে আগামীকাল।দাদাকেই ফোঁটা দেব।"
সূর্য:"একটা কথা জানানোর ছিল।গতকাল M.BA-র ব‍্যাপারে তোমাকে বলেছিলাম না?আমি আজ ফোনে খোঁজ নিয়েছিলাম।December-এ ওদের course শুরু হবে।তাই ভাবছি ভাইফোঁটার পর apply করবো।
যদি M.B.Aতে সফল হতে পারি,তুমি সেদিন কার কাছে থাকবে জানিনা।
সেই সাফল‍্যের একমাত্র ভাগীদার হবে তুমি।"

বলেছিলাম না,গুটির কঠিন আস্তরণে ফাটল থেকে এখনো রঙীন প্রজাপতির বেরিয়ে আসার সময় হয়নি।পূজা হবে "একমাত্র ভাগীদার"?এই কথাটা পূজাকে নাড়া দিল।
পূজা বেশ রুক্ষভাষায় লিখল:-
পূজা:"সেদিন একমাত্র ভাগীদার হব মানে?তুমি খুব ভালোভাবে জানো বাড়ির অমতে পূজা কখনও কিছু করতে পারবেনা।যেই আমার ভাগ‍্যে থাকুক না কেন অভিভাবক দের গন্ডি তাকে পেরোতেই হবে।এই principleটা আমি জ্ঞানত কখনও ভাঙতে পারবনা।তাহলে পূজা তো পূজা থাকবেই না।
প্রস্তাব না হওয়ার পর তুমি এটা ভাবলে কি করে?আর তাছাড়া আমি তোমাকে বারবার তোমাকে বলেছিলাম আমাদের বন্ধুত্বে তুমি বিবাহ প্রস্তাবের আঁচ লাগতে দেবে না।নতুবা এই বন্ধুত্বের যোগাযোগ আমার পক্ষে রাখা সম্ভব নয়।"

সূর্য বুঝলো পূজা ব‍্যাপারটা ভালো ভাবে নিতে পারেনি।পূজা খুব principle-oriented মেয়ে।সূর্যর মনে একটা অজানা ভয় কাজ করল।সূর্য সঙ্গে সঙ্গেই আরেকটা ম‍্যাসেজ লিখতে বসল।
সূর্য:"ঠিক আছে।বাদ বাকি বন্ধু র মতো মনে রাখব তোমার নিষেধাজ্ঞা।তবে তুমি আমাকে ভুল বুঝছো‌।তুমি কি ভাবছো আমি জানিনা।তবে আমি প্রকৃত বন্ধুত্বের যে মানে বুঝেছি,তাতে আমি প্রিয় বন্ধু হিসেবে তোমাকে সত‍্যিই খুব ভালোবাসি।আমি যদি তোমার যোগ‍্য হয়ে ওঠার একটা চেষ্টা করি তাহলে তোমার আপত্তি কোথায়?অভিভাবকরা তখন ভাববেন।আমাকে একটা সুযোগ দাও পূজা।আমি কিন্তু তোমার পথের কাঁটা কোনোদিন হব না।আমাদের ইচ্ছা আর বিধাতার ইচ্ছা এক হতেও তো পারে।তুমিই না কাল বললে কারোর কাছে যেন কখনও আর ছোট না হতে হয় সেই চেষ্টা আমার করা উচিত।তোমার কাছে আমি ছোট হওয়ার কথা কোনোদিন ও ভাবিনি কারণ তুমিই একদিন বলেছিলে সত‍্যিকারের বন্ধুত্বে কেউ ছোট কেউ বড় হয়না।"

ম‍্যাসেজটা যতক্ষণে delivered হল ততক্ষণে অভিমানী পূজা অফলাইন হয়ে গিয়েছিল।
মধ‍্যরাতে শ‍্যামামায়ের পূজান্তে নিবিড় প্রেমে একসূত্রে বাঁধা দুটি প্রাণের অঞ্জলী সানন্দে পরমা প্রকৃতি গ্রহণ করেছেন তার প্রমাণ খুব শীঘ্রই পাওয়া গেল।সূর্য-পূজার প্রেমপর্যায় আরও এক আশ্চর্য সমাপতন ঘটতে চলেছে যে ঘটনার সঙ্গে সঙ্গেই সূর্য-পূজার মিলনপর্বের প্রধান সহায়ক হয়ে জীবনমঞ্চে আসতে চলেছেন এক অত‍্যন্ত গুণী চরিত্র।

© বুনানী