...

2 views

বন্ডের একাল-সেকাল
নাঃ, টিমোথি ডাল্টনই শেষ জেমস্ বন্ড। প্লিজ, কথাটা শুনে কেউ আমাকে মারতে আসবেন না। কেউ-কেউ ত বলেন, ব্রসনানই সর্বশ্রেষ্ঠ বন্ড। কেউ বা বলেন, ব্রসনান স্টাইলিশতম, কেউ বলেন, সেক্সিয়েস্ট। আমি এর কোনোটাই বলি না। যদিও ব্রসনানের তুল্য সুদর্শন, ভদ্র ও বলিষ্ঠ অভিনেতা কমই এসেছেন Hollywood-এ। তাঁকে প্রথম পর্দায় দেখি বন্ড হিসেবে নয়, দানিএল ডেফোর রবিন্সন ক্রুশো-রূপে। পরে তাঁর অনবদ্য অভিনয় দেখেছি BUTTERFLY ON A WHEEL ও THE THOMAS CROWN AFFAIR-এ। তারপর, আমার কাছে বন্ড-অবতারে ধরা দিলেন এই Irishman. কিন্তু সিনেমার বন্ডকে তিনি ‘রোবট’ বানিয়ে তুললেন। যদিও তিনি নায়িকাকে পেলেই সযত্নে চুমু খান, তবুও গুপ্তচরবৃত্তিতে তিনি দঢ় নন, কারণ কোনো কাজই তিনি করেন না। হয় তাঁর সর্বগুণী Rolex watch বা তাঁর অদৃশ্য BMW-ই (Die Another Day মনে পড়ছে?) কাজটি সাল্টে দেয়!

ড্যানী ক্রেগকেই এখন অর্ধেক লোক বন্ড হিসেবে মানেন ও জানেন। এই ইংরাজ অভিনেতা ভীষণরকম পেশীবহুল, পেটে six pack abs-ও আছে। এর’ম মাচো ম্যান আর যা-ই হোন, বন্ড নন। নায়িকাকে চুমু খাওয়ার সময়ও ক্রেগ এমন মুখভঙ্গী করেন যেন নিমপাতা খাচ্ছেন! 😝

জর্জ ল্যাজেনবি ভাল অভিনেতা, কিন্তু ON HER MAJESTY’S SECRET SERVICE-এ তিনি উজ্জ্বল নন। তাই কি DIAMONDS ARE FOREVER-এ ফিরে আসছেন ‘বুড়ো’ শঁ কনারি? 😏

টিমোথি ডাল্টন জাতে ওয়েলশ্। তিনি সুদর্শন, ভীষণ বুদ্ধিদীপ্ত তাঁর চক্ষুদুটি। THE LIVING DAYLIGHTS-এ তিনি অতুলনীয় অভিনয় করেছেন! 👏

শঁ কনারি প্রথম বন্ড। অদ্ভূত আভিজাত্য তাঁর চেহারায়। ব্লফেল্ড থেকে গোল্ডফিঙ্গার, লার্গো থেকে ডঃ নো–সব ভিলেনই কাৎ তাঁর কাছে! DR NO-তে তাঁর গায়ে ট্যারান্টুলা ছাড়া হয়েছে, DIAMONDS ARE FOREVER-এ জ্বলন্ত চুল্লিতে জ্যান্ত ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে–তবু তিনি মরেন নি। 😱 অন্যদিকে হনর্ ব্ল্যাকম্যান্ থেকে জিল্ সেন্ট্ জন, ড্যানিয়েলা বিয়াঞ্চি থেকে কিম বাসিংগার, ক্লুদিনে উজে থেকে আরসূলা এ্যান্ড্রেস—সব নায়িকারই নিরাপদ আশ্রয় কনারির বলিষ্ঠ বুক।

রজার মুর আমার মতে বলিষ্ঠতম, সবচে’ স্টাইলিশ ও সেক্সি বন্ড। 😘 মুরকে অবশ্য Eon Productions পোর্ট্রে করেইছিল debonair playboy হিসেবে। 🤓 সবচে’ বৃদ্ধ বন্ড তিনি, কাজও করেছেন সবচে’ দীর্ঘদিন—তবু কী নবীন তিনি! 🙃😃 Young people should learn the art of LOVE from GREAT Moore! ☺They really do! ভিলেনের সঙ্গে কথা বলেন তিনি হাসতে-হাসতে; নায়িকার দিকে তাকিয়ে বিচিত্র সেক্সি ভ্রূভঙ্গী করার ক্ষেত্রে তিনি কৃষ্ণের সমতুল্য! 😁 কৃষ্ণের ন্যায় লীলাপটু তিনিও! কখনও বা Seiko ঘড়ির চুম্বক দিয়ে নায়িকার নাইটির zipper খোলেন তিনি, আবার ভিলেনের গারল্ ফ্রেনড্-কে eye wink করে manipulate করতেও মুর সিদ্ধহস্ত! অদ্ভূত ক্ষমতা বটে তাঁর! LIVE AND LET DIE-তে কুমীর, হাঙ্গর ও সাপ দিয়ে এ্যাটাক্ করা হয়েছে তাঁকে,THE SPY WHO LOVED ME-তে হাঙ্গর দিয়ে, তবু তিনি অজেয়! 😱 প্যারাশুট ছাড়া প্লেন থেকে ঝাঁপ দিয়েও তিনি বেঁচে যান MOONRAKER-এ। THE MAN WITH THE GOLDEN GUN-এ মিস্ গুডনাইট্-কে আলমারিতে বন্ধ করে তিনি মঁসিয়ে স্কারামাংগার প্রেমিকার সঙ্গে মিলিত হন; এবং তারপরই মিলিত হন মিস্ গুডনাইট্-এর সঙ্গেও! 😱 ভাবা যায়! 🙄😊 অন্যদিকে, THE SPY WHO LOVED ME-তে বারবারা বাখ্-কে বলা তাঁর সেই কথা–“Let's get out of these wet things, shall we?😉” এবং সঙ্গে-সঙ্গে চোখের সেই বিচিত্র ভঙ্গী—কে ভুলতে পারে? এরপর বাখের সঙ্গে লীলা চলাকালীন ‘M’ দেখে ফেলায় মুরের মুখনিঃসৃত সেই অমোঘ বাণী—“Keeping the British end up, Sir!”—কে ভুলতে পারে? OCTOPUSSY-তে autorickshaw-এ চড়ে মুরের এ্যাডভেনচার বা A VIEW TO A KILL-এ প্রথমে আইফেল টাওয়ার এবং পরে স্যান্ ফ্র্যান্সিসকো ব্রিজের চুড়োয় (মুরের বয়েস তখন 58) বন্ড-রূপী মুর ও জোরিনের ডুয়েল—অবিস্মরণীয়! 👍 মুর বন্ড হিসেবে আমার কাছে অমর হয়েই থাকবেন—সব সময়ের জন্য!

বন্ড হবেন সুচতুর; মাস্তান কিংবা বডিবিল্ডার নন। কৌশলে কাজ হাসিল করবেন তিনি; অত্যাধুনিক গ্যাজেট্ দিয়ে নয়। অন্ততঃ ইয়ান ফ্লেমিং তেমনটাই চেয়েছিলেন। অনেকটাই কনারি বা মুরের মতন। 😀😀 ব্রসনান বা ক্রেগের মতন নয়। 😠😠


© কৌস্তভ মণ্ডল

২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৭
#kaustavmondal
© গেছো দাদা