মধুরেণ (দ্বিতীয় পর্ব)
পঞ্চম দৃশ্য
(এলোকেশী ও নারায়ণের প্রবেশ।)
এলোকেশী : ও নারায়ণ, কলকাতার ফ্যাশন সম্পর্কে আমায় কিছু বলো না! যদিও কলকাতায় যাইনি কখনো, কিন্তু খবর সবই রাখি। I keeping all news!
নারায়ণ : বলছেন কি? আপনি কলকাতায় যাননি কখনো? আমার তো বিশ্বাসই হচ্ছে না ম্যাডাম। আপনার হাবভাব, সাজপোশাক, এত সুন্দর ইংরিজি বলা...এ তো বানতলা, তিলজলা বা গার্ডেনরিচ ছাড়া দেখাই যায়না।
এলোকেশী : হেঁ হেঁ! Thanku thanku. আচ্ছা নারায়ণ, আমার চুলের styleটা কেমন হয়েছে বলো তো?
নারায়ণ : অসাধারণ! নিশ্চয়ই কোনো নামকরা beauty parlour থেকে করানো। Either জাভেদ হাবিব বা কেয়া শেঠ। ঠিক কিনা?
এলোকেশী : হোলো না, হোলো না। এটা আমার নিজস্ব style, বুঝলে? I do it.
নারায়ণ : আমি বাকরুদ্ধ! কলকাতায় এত সুন্দর hairstyle বা আপনার মত সুন্দরী মহিলা তো চোখেই পড়ে না।
এলোকেশী : হেঁ হেঁ, কি যে বলো! তাও তো এখন বয়েস হয়ে গেছে বলে তেমন করে আর সাজতেই পারি না। অল্প বয়সে যদি দেখতে!
নারায়ণ : কিই বা এমন বয়েস আপনার? এখনো তো কচি খুকি! পুলককে দেখলে তো মনে হয় আপনার ছোট ভাই!
এলোকেশী : হেঁ হেঁ! আমার পুলুর মতো ভালো ছেলে আর হয় না। আরে, পুলু আর দামিনী তো এদিকেই আসছে দেখছি। আহা, দুটিকে যা মানায় না!
(দামিনী ও পুলকের প্রবেশ।)
দামিনী : মামী, পুলুদাকে বলে দাও, সবার সামনে যেন আমাকে পেঁচি, খেঁদি এইসব না বলে। আমার কিন্তু একটা প্রেস্টিজ আছে!
পুলক : তোর আবার পেস্টিজ? আর হাসাসনি পেঁচি।
দামিনী : ওই শোনো মামী, আবার পেঁচি বললো।
পুলক : বলেছি বেশ করেছি। আবার বলবো। পেঁচি!
দামিনী : ভালো হচ্ছে না পুলুদা!
এলোকেশী : আঃ, কি হচ্ছে কি পুলু? দুদিন পর ও তোর বউ হবে না?
পুলক : ও পেঁচিকে বিয়ে করতে আমার বয়ে গেছে!
এলোকেশী : বটে! চলে আয় দামিনী! দেখবো ও কি করে তোকে বিয়ে না করে। আরে ও তো ও, ওর বাপ বিয়ে করবে! ইস্টুপিড fool!
দামিনী : হ্যাঁ মামী, চলো। মামাও তোমার খোঁজ করছিল।
(এলোকেশী ও দামিনীর প্রস্থান।)
পুলক : (নেচে নেচে) লুঙ্গি ড্যান্স লুঙ্গি ড্যান্স লুঙ্গি ড্যান্স লুঙ্গি ড্যান্স... কিচু মনে কোরো না গুরু। বুড়িটা সব সময় খ্যাঁচ খ্যাঁচ করে। পেঁচিটাও মার নেজুড় হয়ে সমানে চুকলিবাজি করে। খাবে একদিন এমন গাঁট্টা!
নারায়ণ : সেকি? দামিনীকে তোমার ভালো লাগে না বুঝি? দেখতে তো বেশ ভালোই।
পুলক : আবে দূর দূর! ওসব রং চুন মাখা। আমার পারুলের পাশে পেঁচিটা দাঁড়াতেই পারবে না।
নারায়ণ : আচ্ছা, ধরো অন্য কোনো ছেলে যদি ওকে বিয়ে করে, তুমি খুশি হবে?
পুলক : খুশি হব মানে? আনন্দে সারারাত মাল খেয়ে গড়াগড়ি দেবো। কিন্তু এমন উপকার কে আর করবে বলো? কে ওই পেঁচিটাকে বিয়ে করে আমায় উদ্ধার করবে?
নারায়ণ : আমি করবো। কিন্তু তার আগে ওর গয়নাগুলো তোমার মার কাছ থেকে উদ্ধার করে দিতে হবে।
পুলক : এই সত্যি বলছো মাইরি?
নারায়ণ : সত্যি বলছি। তুমি শুধু ওর গয়নার বাক্সটা এনে দাও আর আজ রাতে আমাদের পালাবার ব্যবস্থা করে দাও।
পুলক : ওস্তাদ! আজ থেকে তুমি আমার সাচ্চা দোস্ত। তুমি যা যা বললে সব করে দেব। তুমি নিশ্চিন্ত থাকো।
ষষ্ঠ দৃশ্য
(দশরথের প্রবেশ।)
দশরথ : (একান্তে) মদনের মত এমন অসভ্য, অভদ্র ছেলে বাপের জম্মে দেখিনি। বার বার মানা করা সত্ত্বেও সারা বাড়িতে জুতো মশমশিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। যেন বাপের সম্পত্তি পেয়েছে। নেহাত চরণের ছেলে তাই, নইলে ব্যাটাকে জুতিয়ে বাড়ি থেকে বার করে দিতাম। কে ও?
(লবঙ্গলতার প্রবেশ।)
দশরথ : ও, লবঙ্গ! আয় আয় মা। বাঃ, এই তো, বেশ দেখাচ্ছে। ঘরোয়া সাধারণ জামাকাপড়েই তোকে বেশি ভালো লাগে আমার।
লবঙ্গ : একা একা কি করছো বাপি?
দশরথ : কি আর করবো মা, মদনের কাজকারবার দেখে রাগে গা জ্বলে যাচ্ছে। ওর বন্ধুটা ওর থেকে অনেক ভদ্র।
লবঙ্গ : ঠিক বলেছো বাপি। মদনের মত লাজুক, হাঁদা গঙ্গারাম ছেলে এ যুগে অচল।
দশরথ : কে লাজুক? মদন? তুই কি আমার সঙ্গে ঠাট্টা করছিস মা?
লবঙ্গ : ওমা ঠাট্টা করবো কেন? যা সত্যি তাই বললাম। অতক্ষণ আমার সঙ্গে কথা বললো, কিন্তু একবার সাহস করে আমার মুখের দিকে অবধি তাকালো না! একে তুমি লাজুক ছাড়া কি বলবে?
দশরথ : মানতে পারলাম না। মদনের মতো...
(এলোকেশী ও নারায়ণের প্রবেশ।)
এলোকেশী : ও নারায়ণ, কলকাতার ফ্যাশন সম্পর্কে আমায় কিছু বলো না! যদিও কলকাতায় যাইনি কখনো, কিন্তু খবর সবই রাখি। I keeping all news!
নারায়ণ : বলছেন কি? আপনি কলকাতায় যাননি কখনো? আমার তো বিশ্বাসই হচ্ছে না ম্যাডাম। আপনার হাবভাব, সাজপোশাক, এত সুন্দর ইংরিজি বলা...এ তো বানতলা, তিলজলা বা গার্ডেনরিচ ছাড়া দেখাই যায়না।
এলোকেশী : হেঁ হেঁ! Thanku thanku. আচ্ছা নারায়ণ, আমার চুলের styleটা কেমন হয়েছে বলো তো?
নারায়ণ : অসাধারণ! নিশ্চয়ই কোনো নামকরা beauty parlour থেকে করানো। Either জাভেদ হাবিব বা কেয়া শেঠ। ঠিক কিনা?
এলোকেশী : হোলো না, হোলো না। এটা আমার নিজস্ব style, বুঝলে? I do it.
নারায়ণ : আমি বাকরুদ্ধ! কলকাতায় এত সুন্দর hairstyle বা আপনার মত সুন্দরী মহিলা তো চোখেই পড়ে না।
এলোকেশী : হেঁ হেঁ, কি যে বলো! তাও তো এখন বয়েস হয়ে গেছে বলে তেমন করে আর সাজতেই পারি না। অল্প বয়সে যদি দেখতে!
নারায়ণ : কিই বা এমন বয়েস আপনার? এখনো তো কচি খুকি! পুলককে দেখলে তো মনে হয় আপনার ছোট ভাই!
এলোকেশী : হেঁ হেঁ! আমার পুলুর মতো ভালো ছেলে আর হয় না। আরে, পুলু আর দামিনী তো এদিকেই আসছে দেখছি। আহা, দুটিকে যা মানায় না!
(দামিনী ও পুলকের প্রবেশ।)
দামিনী : মামী, পুলুদাকে বলে দাও, সবার সামনে যেন আমাকে পেঁচি, খেঁদি এইসব না বলে। আমার কিন্তু একটা প্রেস্টিজ আছে!
পুলক : তোর আবার পেস্টিজ? আর হাসাসনি পেঁচি।
দামিনী : ওই শোনো মামী, আবার পেঁচি বললো।
পুলক : বলেছি বেশ করেছি। আবার বলবো। পেঁচি!
দামিনী : ভালো হচ্ছে না পুলুদা!
এলোকেশী : আঃ, কি হচ্ছে কি পুলু? দুদিন পর ও তোর বউ হবে না?
পুলক : ও পেঁচিকে বিয়ে করতে আমার বয়ে গেছে!
এলোকেশী : বটে! চলে আয় দামিনী! দেখবো ও কি করে তোকে বিয়ে না করে। আরে ও তো ও, ওর বাপ বিয়ে করবে! ইস্টুপিড fool!
দামিনী : হ্যাঁ মামী, চলো। মামাও তোমার খোঁজ করছিল।
(এলোকেশী ও দামিনীর প্রস্থান।)
পুলক : (নেচে নেচে) লুঙ্গি ড্যান্স লুঙ্গি ড্যান্স লুঙ্গি ড্যান্স লুঙ্গি ড্যান্স... কিচু মনে কোরো না গুরু। বুড়িটা সব সময় খ্যাঁচ খ্যাঁচ করে। পেঁচিটাও মার নেজুড় হয়ে সমানে চুকলিবাজি করে। খাবে একদিন এমন গাঁট্টা!
নারায়ণ : সেকি? দামিনীকে তোমার ভালো লাগে না বুঝি? দেখতে তো বেশ ভালোই।
পুলক : আবে দূর দূর! ওসব রং চুন মাখা। আমার পারুলের পাশে পেঁচিটা দাঁড়াতেই পারবে না।
নারায়ণ : আচ্ছা, ধরো অন্য কোনো ছেলে যদি ওকে বিয়ে করে, তুমি খুশি হবে?
পুলক : খুশি হব মানে? আনন্দে সারারাত মাল খেয়ে গড়াগড়ি দেবো। কিন্তু এমন উপকার কে আর করবে বলো? কে ওই পেঁচিটাকে বিয়ে করে আমায় উদ্ধার করবে?
নারায়ণ : আমি করবো। কিন্তু তার আগে ওর গয়নাগুলো তোমার মার কাছ থেকে উদ্ধার করে দিতে হবে।
পুলক : এই সত্যি বলছো মাইরি?
নারায়ণ : সত্যি বলছি। তুমি শুধু ওর গয়নার বাক্সটা এনে দাও আর আজ রাতে আমাদের পালাবার ব্যবস্থা করে দাও।
পুলক : ওস্তাদ! আজ থেকে তুমি আমার সাচ্চা দোস্ত। তুমি যা যা বললে সব করে দেব। তুমি নিশ্চিন্ত থাকো।
ষষ্ঠ দৃশ্য
(দশরথের প্রবেশ।)
দশরথ : (একান্তে) মদনের মত এমন অসভ্য, অভদ্র ছেলে বাপের জম্মে দেখিনি। বার বার মানা করা সত্ত্বেও সারা বাড়িতে জুতো মশমশিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। যেন বাপের সম্পত্তি পেয়েছে। নেহাত চরণের ছেলে তাই, নইলে ব্যাটাকে জুতিয়ে বাড়ি থেকে বার করে দিতাম। কে ও?
(লবঙ্গলতার প্রবেশ।)
দশরথ : ও, লবঙ্গ! আয় আয় মা। বাঃ, এই তো, বেশ দেখাচ্ছে। ঘরোয়া সাধারণ জামাকাপড়েই তোকে বেশি ভালো লাগে আমার।
লবঙ্গ : একা একা কি করছো বাপি?
দশরথ : কি আর করবো মা, মদনের কাজকারবার দেখে রাগে গা জ্বলে যাচ্ছে। ওর বন্ধুটা ওর থেকে অনেক ভদ্র।
লবঙ্গ : ঠিক বলেছো বাপি। মদনের মত লাজুক, হাঁদা গঙ্গারাম ছেলে এ যুগে অচল।
দশরথ : কে লাজুক? মদন? তুই কি আমার সঙ্গে ঠাট্টা করছিস মা?
লবঙ্গ : ওমা ঠাট্টা করবো কেন? যা সত্যি তাই বললাম। অতক্ষণ আমার সঙ্গে কথা বললো, কিন্তু একবার সাহস করে আমার মুখের দিকে অবধি তাকালো না! একে তুমি লাজুক ছাড়া কি বলবে?
দশরথ : মানতে পারলাম না। মদনের মতো...