...

21 views

প্রশ্ন
একটি ছোটো শিশু হেঁটে চলেছে শহরের কোনো এক গলি ধরে।কোলে তার থেকেও একটি ছোট্টো ছেলে।সম্ভবত মেয়েটির ভাই।
গত চারদিন ধরে কিছু খাওয়া হয় নি।হাঁটতে হাঁটতে একটি মিষ্টির দোকানের সামনে এসে দাঁড়াল।কোলের ভাইটি আধো আধো কন্ঠে বলে উঠল,"দিদি,আজ আমরা কাবো?"
--"হ‍্যাঁ ভাই,আজ তো স্বাধীনতা দিবস,দেখছিস না চারদিকে কিরাম পতাকা,কত গান বাজছে,আজ আমরা নিশ্চয়ই খাবার পাব।"
দুজনে ঢুকল সেই দোকানে।বেশ ভিড় আজ।দোকানদারটি তাদের দেখেই চেঁচিয়ে উঠল,"তোরা আবার এসেছিস?বারন করেছি না তোদের!যা বেরো এখান থেকে।" অপর এক কর্মচারি বাচ্চাদুটির প্রতি সহৃদয় হয়ে বলল-"আজকের দিনটা না হয়......।"
--"না নাহ্ তুই এদের চিনিস না,একদিন দিলেই রোজ রোজ আসবে,তা হলে আমার চলবে কেন?..এদের একদম প্রশ্রয় দিতে নেই।"
মেয়েটি ম্লান মুখে,ভিড়ের আড়ালে বেরিয়ে এল দোকানটি থেকে।
কোলের ভাইটি করুন দৃষ্টিতে দিদির দিকে তাকিয়ে জিঙ্গাসা করল-"দিদি,সাদিনতা দিবত মানে কি?"
--"জানি না রে..।"
আজ আরো এক স্বাধীনতা দিবস।মেয়েটি আজ অন্ধকার ঘরের আন্ধকার বিছানায়ে শুয়ে।এতক্ষন সে নিজের পুরানে জিবনের গলির মোড়ে ছিল একমাত্র দর্শক।সেইদিনের ওই মিষ্টির দোকানের ভিড়ে একজন মানুষ সত্যিই ভিষণ দয়ালু ছিল।ঠিক লক্ষ্য করেছিল মেয়েটিকে।তাকে নিয়ে গিয়েছিল এক বিশাল হোটেলে।খাবারও খাইয়েছিল তাদের।তারপর কিভাবে যেন পৌঁছে গিয়েছিল এক বড় বাড়ির বিলাশবহুল কামড়ায়ে..না পাশে সেদিন ভাইকেও আর দেখতে পায়ে নি।

হ‍্যাঁ এতদিনে সে বুঝে গেছে,সেইদিনের সেই দয়ালু সহৃদয় ব‍্যেক্তিটি তাকে নুতন এক জিবন দিয়েছিল..বিক্রি করে দিয়েছিল তাকে এই যঘন‍্য সমাজের কাছে।না,ভাইয়ের কোনো খোঁজ আর সে পায়ে নি।হয়ত আর কোনোদিন পাবেও না।আজও মনে মনে সেই ২০ বছর আগে তার সেই ভাইয়ের আধো আধো কন্ঠে জিঙ্গাসা করা সেই প্রশ্নটির পুনরাবৃত্তি করল--"স্বাধীনতা দিবস মানে কি?"
বাইরে তখন চলছে সেই দিনের উযাপন।যা নাকি বছরে শুধু একবারই আসে..।চারদিকে সংগিতের সুরে হয়ে চলেছেদেশভক্তির আরাধনা,হচ্ছে পতাকা উত্তোলন,একসময়ের র্বীর শহিদদের রক্তে সিক্ত পতাকা.. আজ যা মনুষ্যত্বের রক্ত ক্ষরনে সিক্ত।
আজও দেশের অজশ্র গলিতে এরাকমই ধ্বনিত হয় বহু ছোটো শিশুর পদশব্দ..হয়ত সেই শব্দ গিয়ে পৌঁছায়ে দেশের বীর শহিদের কাছে।
হয়ত সেই শব্দ আমাদের স্বাধীন পতাকার মান বারায়ে..তাই না??