মিত্র চতুষ্টয় এর পরীক্ষা অভিযান
কৃষ্ণনগর স্টেশন ,সময় সকাল 7.40 পি আর পিউ দুইজনে মিলে হন্ত দন্ত হয়ে স্টেশন এ পৌঁছালো। ও আরেকজন আছে।সাথে কাকিমা মানে পিউ এর মা।পি আর পিউ যেখানেই যায় ,কাকিমা ও সাথে যায়। ট্রেন টা মাতৃভূমি লোকাল।8.40 এ ছাড়বে প্ল্যাটফর্ম নম্বর 2 থেকে। যথা রীতি প্ল্যাট ফর্মে এসেই পিউ একটু জল খেয়ে নেই।আর মুখে বলতে থাকে ' এই মেয়েটা যদি একদিন ঠিক সময়ে এসে পৌঁছায়'।আরেক জন আসছে ,তার নাম ' টি ' এই নাম টা বন্ধুদের দেওয়া। সঙ্গে সঙ্গে ট্রেনের ঘোষণা 'মাতৃভূমি লোকাল' শিয়াল দহ যাওয়ার গাড়ি দুই নম্বর প্ল্যাটফর্ম থেকে ছাড়বে। ছোট্ ছোট্ বলে ওরা ট্রেনে উঠলো।হটাৎ ফোনে রিং বেজে উঠলো। 'এই তোরা কোথায়? আমি এই স্টেশন এ পৌছালাম বুঝলি তো? ' তাড়াতাড়ি আয় আমরা ওভার ব্রিজের কাছেই যে কামড়া টা ঐটাই উঠেছি বলেই পি ফোন টা কেটে দিলো।অবশেষে ট্রেন ছাড়ার চূড়ান্ত ঘোষণা।টি এসে হাজির, ট্রেন ও ছাড়লো।ব্যাগ রেখে ঘেমে সিট টা সিকিউর করে বলতে শুরু করে আজ আমি বাস পাচ্ছিলাম না জানিস তো...খুব বড় একটা বিপদের হাত থেকে বাঁচলাম।আসলে টি আর বিপদ কাজের সময় এটা আজকের নতুন নয়,পি আর পিউ এর কাছে।কাকিমা বোলে উঠল এবার আরেকজন এর খোঁজ নে।সে কোথায়??আরেক জন হলো সুমি। সুমির বাড়ি আড়ংঘাটা। ও বাসে করে রানাঘাট আসবে ,এসে রানাঘাট থেকে ট্রেন ধরবে।কাকিমার কথা শুনে বাধ্য মেয়ে পি ফোন করলো কোথায় তুই?? সুমি বললো এই তো বাসে।আমি পৌঁছে যাবো ,কটায় পৌঁছাতে হবে রে?তুই একটু পিউ এর থেকে ট্রেনের ছাড়ার টাইম টা শুনে নিস।দিয়ে আমাকে একটা এসএমএস করে দিস।দেখা হচ্ছে বলেই ফোন রাখলো।পি জোরে নিশ্বাস নিয়ে বসলো।কাকিমা সব দেখে শুনে মিষ্টি করে হেসে পি কে বলতো এই যদি পিউ এর বাবা থাকতো না সব গুলোর কপালে কষ্ট ছিল।কলিনারায়ান পুর ছেড়ে রানাঘাট ঢুকছে ট্রেন।পিউ যথা রীতি জানলা দিয়ে হাত বাড়িয়ে সুমি কে বোঝানোর জন্য যে তারা কোন কামড়ায়।ট্রেন ছেড়ে দেবে সুমি কোথায়??ফোন করেই যাচ্ছে তবু ফোন তোলে না।অবশেষে ট্রেন ছাড়লো।হতাশ হয়ে জানলা থেকে মুখ ফিরিয়ে যখন নিজেদের মধ্যে টি আর পিউ বলা বলি করছে এই সুমি টা না কোনোদিন একটু সময় নিয়ে আসতে পারে না।এবার একা যেতে হবে।পরের স্টেশন এ আসবে।হটাৎ পিছন থেকে সুমির আওয়াজ ' আমি উঠে পড়েছি।পিউ এর হাত দেখেছিলাম। যাহ সিট নেই ?সুমি তখন বলে যে আমি আর পি একটু করে বসে নেবো।অসুবিধা নাই।যাইহোক ফাইনালি আমরা কল্যাণী স্টেশন এ পৌছালাম।অটো করে ডিপার্টমেন্ট এ।পরীক্ষা হলে একই ভাবে ফেরা।এবার আসি পি এর কথা।পি এর কল্যাণী কে খুব ভয়।সে ভাবে যদি অটো ছেড়ে দেয়।সে একা হয়ে যাবে।তাই কাকিমা কে বলতো তুমি শেষে অটো চাপবে ।যাতে অটো ওয়ালা ফেলে গেলে ও অন্তত কাকিমা কে সঙ্গে পায়।ফেরার সময় সন্ধে প্রায় আগত।ফেরার সময় আরো 2 জন যোগ হতো। একজন শুভ আরেকজন সময়।শুভ নাম টা কে রেখেছিল জানা নেই।সব সময় অশুভ ঘটনা ঘটায়।আর পিউ কে নিয়ে জ্বালাতন করে।যাইহোক শুভ এর বাড়ি কাচড়া para, তাই সে এইদিকে আসতো না।স্টেশন থেকে বিদায়।সময় কৃষ্ণনগর পর্যন্ত একসাথে আসত ,তার পর নবদ্বীপের বাস ধরত।এদের কয়েকজন খুব স্মার্টলি টিকিট কাটতে যেত না মাঝে মাঝে।পি আর পিউ কে খুব রাগা তো যে সব সময় টিকিট কাট তো ওই জন্য।যাইহোক ফেরার সময় ট্রেন কৃষ্ণনগর ঢুকছে ।আমরা 5জন নামলাম।নেই ওভার ব্রিজ ক্রস করে নেমেছি।অমনি টিটি হাজির।সময় তো পড়লো মহা অসময়ে।তার তো টিকিট নেই।200 টা ফাইন।টিটি এসে সময় এর সামনে দাড়িয়ে ।পি পিউ,টি সবাই গেটের মুখে বেরিয়ে যাচ্ছে।সময় এর কাঁধে টিটি হাত রেখে কে ফাইন করলো এই ছেলে দুইশত টাকা দাও।তখন ও চোখ বন্ধ সময় এর।হটাৎ টিটির হাত কাধে নেই বুঝতে পেরে চোখ খুলে দেখে যে তার কাঁধে হাত রেখে টিটি তার পেছন পেছন আসা ছেলে তাকে ফাইন করেছেন।সে তখন ঊর্ধ্বশ্বাসে গেট থেকে বেরিয়ে হাফ ছেড়ে বাঁচে।টি পিউ পি তো প্রচণ্ড হাসে।এই অবস্থায়।এরপর সময় নবদ্বীপ এর বাস ধরে।আর টি বাস ধরে চাসা পারা।বাকি তিন জন এরা পছন্দ করে ভ্যানে যেতে।ওরা ছাদ খোলা ভ্যানে যেতে শুরু করে।হটাৎ গান বেজে ওঠে স্টেশন এ " হাম রাহে ইয়া না রাহে কাল,কাল ইয়াদ আয়েঙ্গে ইয়ে পাল".....ভ্যান ছাড়লো।গানের ধুন কানে আসতে আসতে এক সময় মিলিয়ে গেলো।
Related Stories