...

19 views

রাশশা মশাইয়ের পুত্রগণ
চন্দ্র রাজ্য। মহারাজ ইন্দ্র ছিলেন সেই রাজ্যের রাজা। তিনি ছিলেন শান্ত মানুষ। তবে আপনারা যেমন শান্ত ভাবছেন তেমন না। ব্যাপারটা কিছু অন্যরকম। তিনি সবার সামনে রাখতেন না। তার রাগ উঠলে তিনি আড়ালে গিয়ে সেনাপতিদের বলে দোষীদের শাস্তি দিতেন। নতুবা ওনার সামনে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করতেন। ওই রাজ্যের একজন বিখ্যাত রাঁধুনি ছিলেন নাম রাশশা মশাই। তার রান্নার খ্যাতি চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছিল। রাজার কানেও সেই খবর হাজির হয়। একদিন রাজা তার সেনাপতি যার নাম বরেন্দ্র তাকে পাঠালেন রাশশা মশাইয়ের বাড়িতে। খবর দিতে রাজা ইন্দ্র তার বাড়িতে আসবেন তার হাতের রান্না স্বাদ দেখতে। রাশশা মশাই এ খবর শুনে খুব খুশি হলেন। পরদিন রাজা আসবেন। রাশশা মশাই জলদি করে সব রান্না সেরে ফেললেন। শুধু পরিবেশনের দেরি। ইতিমধ্যে রাজা ইন্দ্র রান্না মশাইয়ের বাড়িতে চলে এসেছে। তিনি রাজাকে বসতে দিলেন। রাশশা মশাই বললেন, পচা ফলগুলো যে কেটে রেখেছি নিয়ে আয় তো। বাসি খাবার গুলো নিয়ে আয়। ভাঙ্গা বাসন পাতি গুলো নিয়ে আয় দেখি। রাজা তো শুনে অবাক। চোখদুটি লাল করে চলে গেলেন। এদিকে রাশশা মশাই রাজা চলে যাওয়া দেখে ভয় পেলেন। কিছুক্ষণ বাদে সেনাপতি এসে রাশশা মশাই কে তলব করলেন। সেনাপতি বললেন রাগটা এক্ষুনি তোমাকে রাজমহলে যাওয়ার জন্য আজ্ঞা করেছেন। কিছু না বলে রাশশা মশাই চললেন সেনাপতির সাথে রাজার বাড়িতে। তাকে নিয়ে যাওয়া হলো রাজার নিবিড় কক্ষে। রাজা গম্ভীর স্বরে বললেন তোমার এত বড় সাহস। তুমি আমাকে অপমান করো। রাশশা মশাই কাঁদো কাঁদো কণ্ঠে বললেন একি বললেন মহারাজ আমি আপনাকে অপমান করবো এত বড় সাহস তো আমার বাপেরো হয়নি। রাজা বললেন, খামোশ আমার মুখে মুখে বেয়াদপি। আমি তোমার বাড়িতে গেলাম তোমার হাতের খাবার দেখতে। তুমি তোমার সহনিকে বলো আমার জন্য ভাঙ্গা বাসন্ পাতি, পচা ফল এবং বাসি খাবার আনতে। একথা শুনে রাশশা একগাল হাসা ছাড়া আর কি বা করতে পারে। কেননা কথাগুলো তো ঠিক এমন ছিলনা। চলুন তাহলে শুরু করি। আসলে আমি এমন পরিবারের একজন লোক আমার পিতার পিতামহের প্রপিতামহ ছিলেন আপনার পিতার পিতামহের প্রপিতামহের সংযুক্ত ভাড়। তার কাজ ছিল রাজা কে হাসানো। সেই আমল থেকে তার পরিবারের লোকজনদের হাস্যকর নাম রাখতেন। তাই আমিও তো সেই রেওয়াজ পরিবর্তন করতে পারিনা। তাই তো আমার পুত্রগণের নাম পচা, বাসি, ভাঙ্গা এরূপ হাস্যকর নাম রেখেছিলাম। রাজা শুনে সে কি হাসি। পরে রাশশা মশাই কে রাজা ইন্দ্র ক্ষমা করে দিলেন। এবং পরদিন তার বাড়িতে গিয়ে তার খাবারের স্বাদ গ্রহণ করলেন। এবং রাশশা মশাই কে এতো সুস্বাদু খাবার রান্না করার জন্য পুরস্কৃত করলেন। রাশশা মশাই খুব খুশি হলেন। এবং রাজার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলেন। রাজা ও খুব খুশি হলেন।

সমাপ্ত