"সব মজার ফলই কি মজার হয়?"
-" আরে,কি হয়েছে,তোর,এরম পাগলের মত ঘুরছিস কেন? " - বলে উঠলাম আমি,নন্দিনীকে এরম ভাবে পায়চারি করতে দেখে......
-" আরে তুই চুপ কর তো.... এমনি বিশাল টেনশনে আছি...তার ওপর এরম বকিস না তো..."- বলে উঠলো নন্দিনী।
-" বাহঃ,রে বাহঃ....আমার বাড়িতে এসে,কিছু দরকারি কথা জানানোর আছে বলে... এখন আমারই ওপর রাগ দেখাচ্ছিস..."- একটু খোঁটা দিয়েই বললাম।
আমার খোঁটা শোনা মাত্রই তার নিজের একটু রাগই হলো, পরে একটা দীর্ঘ নিশ্বাস ফেলে আমার পাশে এসে বসলো..তারপর বললো:
-" এরকম বলছিস কেন রে.... আসলে যে কথাটা বলতে চাইছি,সেটা বলতে শুধু একটু সময় লাগছে...খুব টেনশনে আছি রে..."
-" বাবা রে...এমন কি আহামুরি বলবি রে...যে টেনশনে আছিস এত! "- বললাম আমি।
-" একটু অপেক্ষা কর ....দু মিনিট একটু চুপ থাক ,যা বলার তাই আমায় একটু বলতে দে..."-বলে উঠলো নন্দিনী।
ওর কথা মতো আমি আর কিছুই বললাম না, টেবিলে পরে থাকা খবরের কাগজটা তুলে নিলাম।
কিছুক্ষন পর,নন্দিনীই বলে উঠলো:
-" আচ্ছা,ভালোবাসা কখন হয়??...মানে কিভাবে বুঝবো যে আমি কাউকে ভালো বেসে ফেলেছি?"
-" হঠাৎ এই প্রশ্ন করার কারণটা কি জানতে পারি?"- খবরের কাগজ থেকে মুখ না সরিয়েই বললাম।
-" তুই আগে বল তো, তারপর কারণ বলছি....."- বলে উঠলো নন্দিনী।
কিছুক্ষন চুপই ছিলাম আমি,তারপর কাগজটা টেবিলে রেখে একটা দীর্ঘ নিশ্বাস ফেলে বললাম:
-" যখন তোমার কাউকে খুব ভালো লাগে.....মানে তার সাথে কথা বলতে,তার সাথে থাকতে,তার সাথে সময় কাটাতে.....এমন কি তার অনুপস্থিতি তোমাকে যখন একাকীত্বের দিকে ঠেলে দেয়,যাকে ছাড়া সত্যি তোমার দুনিয়া সম্পূর্ণ আনন্দময় হয়েও,নিজের জীবন যেন অসম্পূর্ণ লাগে,তখন বোঝা যায়,যে তুমি কাউকে সত্যিই ভালোবেসে ফেলেছো...."- বুঝতে পারছিলাম,আমার এই কথাগুলো বলার সময়েই,নন্দিনী যেন আলাদাই দুনিয়ায় চলে গেছে....
তারপরও আমি বলে চললাম:
-" আমার মতে এটাই.... এবার তুই বুঝে দেখ.....আমার কথাগুলো তোর সাথে মিল খায় কিনা!"
আমার এই অন্তিম কথাটা শোনা মাত্রই তার চমক ভাঙল,বললো:
-" মানে,তুই বলতে কি চাস??
-"তুই সেটা ভালো ভাবেই জানিস,কি বলতে চাইছি;"- বললাম আমি।
-" হ্যাঁ,বুঝতেই পারছি..তুই তো সব কিছুই জানিস...আমি একটা ছেলেকে ভালোবাসি....."- ওর কথার মাঝেই বললাম:
-" আর তার নাম রাহুল,এটাও আমি জানি,তারপর বল...."
-" হ্যাঁ,রাহুল.....সত্যিই খুব ভালোবাসি রে...তবে জানিস আজ হঠাৎ দুপুর নাগাদ আমায় ফোন করেছিলো রাহুল, আর বললো নাকি আজ তোর বাড়িতে আমায় যেতে,আর এখানেই নাকি রাহুল আসবে আর একটা বিশাল surprise দেবে....কিন্তু কি করবে....."- নন্দিনীর পুরো বলার আগেই বলে উঠলাম:
-"আমার বাড়ি,মানে এখানে,কেন কি দেখাবে....."
-" সেটাই তো জানি না রে....হয়তো মনে হচ্ছে ,আমায় প্রপোজ করবে;এই তো সময় হয়ে এসেছে,আর কিছুক্ষণের মধ্যেই হয়তো এখানে এসে পড়বে রাহুল।"বলে উঠলো নন্দিনী।
-" তুই একটু বেশিই ভাবছিস রে....এরম হয়তো কিছুই হবে না....রাহুল যদি আসে,তাহলে তখন তো জেনেই যাবি...'' - বললাম আমি...
-" হ্যাঁ,সে আর বলতে,আসলে তো বুঝতেই পারবো..'' - এই বলে টিভি চালিয়ে দেখতে লাগলো নন্দিনী।
কিছুক্ষন আমরা দুজনেই চুপ ছিলাম,কেউই কিছু কথা বললাম না...মিনিট দশেক পরই বাড়ির কলিং বেলটা বেজে উঠলো। আমরা উভয়ই বুঝতে পারলাম,নিশ্চয়ই রাহুলই এসেছে।
বাড়ির চাকর বিমলকাকু গিয়ে দরজাটা খুলে দিল....
তবে আমি আর নন্দিনী যেই ঘরে ছিলাম....সেই ঘরে যারা ঢুকলো,তাদের দেখা মাত্রই আমি বা নন্দিনী কারোরই অবস্থা আগের মত আর ভালো রইলো না।
প্রথমজন তো রাহুল নিজেই...আমার সবচেয়ে ছোটবেলার বন্ধু নন্দিনীর crush.....আবার সেও সম্পূর্ণ এক বিয়ের পোশাক পরে....
আর দ্বিতীয়জন যিনি ছিলেন,তিনি আর কেউই নন,আমারই বর্তমান প্রেমিকা অনামিকা,সেও সম্পূর্ণ এক নতুন বিবাহিত বউ এর সাজে,যাকে দেখে আমার সবচেয়ে বড় মানের ঝটকা লেগেছে...
রাহুলের ব্যাপারটা তাও বুঝলাম,নন্দিনী কোনোদিন তার মনের কথা তাকে বলেইনি...কিন্তু অনামিকা কেন এরম করলো,আমরা তো দুজন দুজনকেই ভালবাসতাম।
চেয়েও কিছু করতে পারছি না,কিছু বলতেও পারছি না এখন।রাগে,দুঃখে,কষ্টে মন একেবারে মর্মাহত।
তাও অনেক কষ্টে আমি নন্দিনীর দিকে তাকালাম....আর দেখতে পারলাম...অত্যন্ত রাগের সাথেই সে অনামিকার দিকে তাকিয়ে রয়েছে....
তবে আমি বা রাহুল কেউই তৈরি ছিলাম না এটার জন্য,কারন কিছু মাত্র সময় নষ্ট না করে,সেই মুহূর্তে টেবিলে রাখা ছুরি নিয়ে নন্দিনী সোজা গিয়ে অনামিকার বুকে বিধে দিল। আমি চিৎকার করে উঠলাম:-" অনামিকা......"
আমি আর রাহুল দুজনেই হতবাক.....
রাহুল ছুটে গিয়ে নন্দিনীকে টেনে কোনরকম সামলানোর চেষ্টা করতে লাগলো.....
আর আমি ছুটে গেলাম ,অনামিকার দিকে,আমার চোখে জল এই মুহূর্তে ভেসে যাচ্ছে....আমি অনামিকাকে ডাকতে লাগলাম ক্রমাগত....-" অনামিকা,শুনতে পাচ্ছো তুমি,অনামিকা...... "
[ দু-বছর পর]
আজ দু-বছর হয়ে গেছে আমার এই জেলে, এখন এই একঝাঁক দাঁড়িয়ালা ছেলে মানে আমাকে দেখলে কেউ চিনতে পারবে কিনা সন্দেহ.......
সত্যিই হাসি পাচ্ছে,সেদিন যদি ঐই রাহুলের আর অনামিকার prank টা বুঝতে পারতাম...আর বিশেষ করে যদি নন্দিনী বুঝত যে,রাহুল তাকে প্রপোজ করতেই এসেছিলো কিন্তু প্রথমেই যেটা করতে চাইছিল,সেটা prank ছিল......তাহলে হয়তো গল্পটা অন্যরকমই হতো...... পুলিশের কাছে রাহুল এটাই বয়ান দিলো শুনলাম...
সেদিন পুলিশ আসতেই নন্দিনীর দোষটা যদি আমি নিজের ঘাড়ে নাই নিতাম.....তাহলে আজ হয়তো নন্দিনী আর রাহুল হাসিখুশি ভাবে সংসার করতে পারতো না!
আর আমার কথা ভাবতে হবে না কাউকে! আমার ভালবাসা,আমার প্রেমিকা,আমার প্রাণের অনামিকা তো চলেই গেছে আমার থেকে অনেক দূরে.....তাই অন্য কেউ দোষী হোক বা আমার ছোট বেলার বন্ধু সেই নন্দিনীই হোক.....আর আমি তো শুধু আমার অনামিকার কাছে যাওয়ার অপেক্ষায়........
-" আরে তুই চুপ কর তো.... এমনি বিশাল টেনশনে আছি...তার ওপর এরম বকিস না তো..."- বলে উঠলো নন্দিনী।
-" বাহঃ,রে বাহঃ....আমার বাড়িতে এসে,কিছু দরকারি কথা জানানোর আছে বলে... এখন আমারই ওপর রাগ দেখাচ্ছিস..."- একটু খোঁটা দিয়েই বললাম।
আমার খোঁটা শোনা মাত্রই তার নিজের একটু রাগই হলো, পরে একটা দীর্ঘ নিশ্বাস ফেলে আমার পাশে এসে বসলো..তারপর বললো:
-" এরকম বলছিস কেন রে.... আসলে যে কথাটা বলতে চাইছি,সেটা বলতে শুধু একটু সময় লাগছে...খুব টেনশনে আছি রে..."
-" বাবা রে...এমন কি আহামুরি বলবি রে...যে টেনশনে আছিস এত! "- বললাম আমি।
-" একটু অপেক্ষা কর ....দু মিনিট একটু চুপ থাক ,যা বলার তাই আমায় একটু বলতে দে..."-বলে উঠলো নন্দিনী।
ওর কথা মতো আমি আর কিছুই বললাম না, টেবিলে পরে থাকা খবরের কাগজটা তুলে নিলাম।
কিছুক্ষন পর,নন্দিনীই বলে উঠলো:
-" আচ্ছা,ভালোবাসা কখন হয়??...মানে কিভাবে বুঝবো যে আমি কাউকে ভালো বেসে ফেলেছি?"
-" হঠাৎ এই প্রশ্ন করার কারণটা কি জানতে পারি?"- খবরের কাগজ থেকে মুখ না সরিয়েই বললাম।
-" তুই আগে বল তো, তারপর কারণ বলছি....."- বলে উঠলো নন্দিনী।
কিছুক্ষন চুপই ছিলাম আমি,তারপর কাগজটা টেবিলে রেখে একটা দীর্ঘ নিশ্বাস ফেলে বললাম:
-" যখন তোমার কাউকে খুব ভালো লাগে.....মানে তার সাথে কথা বলতে,তার সাথে থাকতে,তার সাথে সময় কাটাতে.....এমন কি তার অনুপস্থিতি তোমাকে যখন একাকীত্বের দিকে ঠেলে দেয়,যাকে ছাড়া সত্যি তোমার দুনিয়া সম্পূর্ণ আনন্দময় হয়েও,নিজের জীবন যেন অসম্পূর্ণ লাগে,তখন বোঝা যায়,যে তুমি কাউকে সত্যিই ভালোবেসে ফেলেছো...."- বুঝতে পারছিলাম,আমার এই কথাগুলো বলার সময়েই,নন্দিনী যেন আলাদাই দুনিয়ায় চলে গেছে....
তারপরও আমি বলে চললাম:
-" আমার মতে এটাই.... এবার তুই বুঝে দেখ.....আমার কথাগুলো তোর সাথে মিল খায় কিনা!"
আমার এই অন্তিম কথাটা শোনা মাত্রই তার চমক ভাঙল,বললো:
-" মানে,তুই বলতে কি চাস??
-"তুই সেটা ভালো ভাবেই জানিস,কি বলতে চাইছি;"- বললাম আমি।
-" হ্যাঁ,বুঝতেই পারছি..তুই তো সব কিছুই জানিস...আমি একটা ছেলেকে ভালোবাসি....."- ওর কথার মাঝেই বললাম:
-" আর তার নাম রাহুল,এটাও আমি জানি,তারপর বল...."
-" হ্যাঁ,রাহুল.....সত্যিই খুব ভালোবাসি রে...তবে জানিস আজ হঠাৎ দুপুর নাগাদ আমায় ফোন করেছিলো রাহুল, আর বললো নাকি আজ তোর বাড়িতে আমায় যেতে,আর এখানেই নাকি রাহুল আসবে আর একটা বিশাল surprise দেবে....কিন্তু কি করবে....."- নন্দিনীর পুরো বলার আগেই বলে উঠলাম:
-"আমার বাড়ি,মানে এখানে,কেন কি দেখাবে....."
-" সেটাই তো জানি না রে....হয়তো মনে হচ্ছে ,আমায় প্রপোজ করবে;এই তো সময় হয়ে এসেছে,আর কিছুক্ষণের মধ্যেই হয়তো এখানে এসে পড়বে রাহুল।"বলে উঠলো নন্দিনী।
-" তুই একটু বেশিই ভাবছিস রে....এরম হয়তো কিছুই হবে না....রাহুল যদি আসে,তাহলে তখন তো জেনেই যাবি...'' - বললাম আমি...
-" হ্যাঁ,সে আর বলতে,আসলে তো বুঝতেই পারবো..'' - এই বলে টিভি চালিয়ে দেখতে লাগলো নন্দিনী।
কিছুক্ষন আমরা দুজনেই চুপ ছিলাম,কেউই কিছু কথা বললাম না...মিনিট দশেক পরই বাড়ির কলিং বেলটা বেজে উঠলো। আমরা উভয়ই বুঝতে পারলাম,নিশ্চয়ই রাহুলই এসেছে।
বাড়ির চাকর বিমলকাকু গিয়ে দরজাটা খুলে দিল....
তবে আমি আর নন্দিনী যেই ঘরে ছিলাম....সেই ঘরে যারা ঢুকলো,তাদের দেখা মাত্রই আমি বা নন্দিনী কারোরই অবস্থা আগের মত আর ভালো রইলো না।
প্রথমজন তো রাহুল নিজেই...আমার সবচেয়ে ছোটবেলার বন্ধু নন্দিনীর crush.....আবার সেও সম্পূর্ণ এক বিয়ের পোশাক পরে....
আর দ্বিতীয়জন যিনি ছিলেন,তিনি আর কেউই নন,আমারই বর্তমান প্রেমিকা অনামিকা,সেও সম্পূর্ণ এক নতুন বিবাহিত বউ এর সাজে,যাকে দেখে আমার সবচেয়ে বড় মানের ঝটকা লেগেছে...
রাহুলের ব্যাপারটা তাও বুঝলাম,নন্দিনী কোনোদিন তার মনের কথা তাকে বলেইনি...কিন্তু অনামিকা কেন এরম করলো,আমরা তো দুজন দুজনকেই ভালবাসতাম।
চেয়েও কিছু করতে পারছি না,কিছু বলতেও পারছি না এখন।রাগে,দুঃখে,কষ্টে মন একেবারে মর্মাহত।
তাও অনেক কষ্টে আমি নন্দিনীর দিকে তাকালাম....আর দেখতে পারলাম...অত্যন্ত রাগের সাথেই সে অনামিকার দিকে তাকিয়ে রয়েছে....
তবে আমি বা রাহুল কেউই তৈরি ছিলাম না এটার জন্য,কারন কিছু মাত্র সময় নষ্ট না করে,সেই মুহূর্তে টেবিলে রাখা ছুরি নিয়ে নন্দিনী সোজা গিয়ে অনামিকার বুকে বিধে দিল। আমি চিৎকার করে উঠলাম:-" অনামিকা......"
আমি আর রাহুল দুজনেই হতবাক.....
রাহুল ছুটে গিয়ে নন্দিনীকে টেনে কোনরকম সামলানোর চেষ্টা করতে লাগলো.....
আর আমি ছুটে গেলাম ,অনামিকার দিকে,আমার চোখে জল এই মুহূর্তে ভেসে যাচ্ছে....আমি অনামিকাকে ডাকতে লাগলাম ক্রমাগত....-" অনামিকা,শুনতে পাচ্ছো তুমি,অনামিকা...... "
[ দু-বছর পর]
আজ দু-বছর হয়ে গেছে আমার এই জেলে, এখন এই একঝাঁক দাঁড়িয়ালা ছেলে মানে আমাকে দেখলে কেউ চিনতে পারবে কিনা সন্দেহ.......
সত্যিই হাসি পাচ্ছে,সেদিন যদি ঐই রাহুলের আর অনামিকার prank টা বুঝতে পারতাম...আর বিশেষ করে যদি নন্দিনী বুঝত যে,রাহুল তাকে প্রপোজ করতেই এসেছিলো কিন্তু প্রথমেই যেটা করতে চাইছিল,সেটা prank ছিল......তাহলে হয়তো গল্পটা অন্যরকমই হতো...... পুলিশের কাছে রাহুল এটাই বয়ান দিলো শুনলাম...
সেদিন পুলিশ আসতেই নন্দিনীর দোষটা যদি আমি নিজের ঘাড়ে নাই নিতাম.....তাহলে আজ হয়তো নন্দিনী আর রাহুল হাসিখুশি ভাবে সংসার করতে পারতো না!
আর আমার কথা ভাবতে হবে না কাউকে! আমার ভালবাসা,আমার প্রেমিকা,আমার প্রাণের অনামিকা তো চলেই গেছে আমার থেকে অনেক দূরে.....তাই অন্য কেউ দোষী হোক বা আমার ছোট বেলার বন্ধু সেই নন্দিনীই হোক.....আর আমি তো শুধু আমার অনামিকার কাছে যাওয়ার অপেক্ষায়........