প্রেম যখন সূর্যপূজা (পর্ব-৬)
ছোটবেলায় দক্ষিণেশ্বর মন্দিরের সামনে থেকে বায়না করেই নাড়ু গোপালের একটা পিতলের মূর্তি কিনে এনেছিল পূজা।পূজা যখন খুব ছোট,একসময় একটা ভাই আনতে খুব ইচ্ছা হত।তখন বাবা তাকে সস্নেহে বুঝিয়েছিলেন গোপালের মতো ভালো ভাই আর হয়না।এমন ভাই সে যাকে মন দিয়ে স্মরণ করলেই অনুভব করা যায় তার উপস্থিতি।এটা যে অবিশ্বাস্য কিছু এমনটা কখনো পূজার মনে হতনা।ছোটবেলায় শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণের মুখেগল্পে সে 'মধুসূদন দাদা'-র গল্পটা অনেকবার পড়েছে।তাই বাবার কথাটা ছোট্ট পূজা সহজেই সরল মনে বিশ্বাস করে নিয়েছিল আর এই বিশ্বাসটাই সময়ের সাথে তার বধ্যমূল আত্মিক সংস্কারে পরিণত হয়েছিল।জীবনের ছোট-বড় সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে সে মনে মনে তার ভাইকে স্মরণ করে তার সূক্ষ্ম উপলব্ধিকে জাগিয়ে তোলার প্রচেষ্টা করত।দিদিমা ও মাকেও দেখেছে পূজা ঈশ্বরকে নিজের পরম আত্মীয় জ্ঞান করে কোনো কঠিন সময় নিষ্ঠা,ভক্তি আর সমর্পনের সাথে আত্মবিশ্বাস নিয়ে প্রার্থনা করতে।তাঁরা বলেন মন যদি নিষ্পাপ হয়,তাহলে জীবনে যত কঠিন পরিস্থিতিই আসুক না কেন সবসময় তার সদিচ্ছা সফল হয়,সমস্যার কোনো না কোনো সমাধানসূত্র ঠিকই সামনে আসে।'যে নিজেকে বিশ্বাস করতে পারে সেই প্রকৃত আস্তিক'---বর্তমান যুগে বিবেকানন্দের বাণীগুলোকে খুব প্রাসঙ্গিক মনে হয় পূজার।সত্যপ্রিয়তা ও সৎ জীবনযাপন একটি অতি সাধারণ মানুষকেও অসাধারণ আত্মবিশ্বাসী করে তুলতে পারে।পূজা এটা মনেপ্রাণে বিশ্বাস করে।হিন্দু ধর্মকে সঠিকভাবে জানতে গেলে বেদ-উপনিষদ পড়া উচিত বলেই যুব সমাজকে উপদেশ দিয়ে গেছেন স্বামী বিবেকানন্দ।বেদে শুধুমাত্র হিন্দু সমাজের নয়,বরং সমগ্র মানবজাতি ও এই পৃথিবীর চিরস্থায়ী কল্যাণ নিহিত আছে।
জন্ম মৃত্যু বিয়ে-তিন বিধাতা নিয়ে।বিবাহ কথাটি সংস্কৃত শব্দ থেকে বাংলায় এসেছে যার অর্থ 'বিশেষভাবে বহন করা'।বেদে বলা হয়েছে যে স্বতস্ফূর্ত প্রেমে জন্ম-জন্মান্তরের পবিত্র বন্ধনে আবদ্ধ দুটি সুগভীর প্রেমপূর্ণ আত্মার অক্ষয় আত্মিক মিলন এবং সেই পবিত্র আত্মিক সম্পর্কের ভার বহন করার বৈদিক প্রক্রিয়াকে বৈদিক বিবাহ বলে।নিঃস্বার্থ নিঃশর্ত পবিত্র প্রেম এমন এক ধরনের দৈবীশক্তি যা হর-গৌরীর মতো দুটি পৃথক দেহের মধ্যে থাকা দুটি জীবাত্মাকে অবিচ্ছেদ্য প্রেমে একাত্ম করে তোলার ক্ষমতা রাখে।এই শক্তিই সৃষ্টির উৎস এবং জগৎ-সংসারে ভারসাম্য বজায় রাখার আধার।পবিত্র দুটি আত্মার আত্মিক ফলে একটা সুউন্নত সমাজ তৈরী হয়।সংসার ধর্মের এই সারটা বোঝানোর জন্য অবতার হয়ে শ্রীশ্রী নারায়ণ ও লক্ষ্মী কখনো শ্রীরামচন্দ্র ও সীতাদেবী,কখনো শ্রীকৃষ্ণ ও শ্রীরাধিকারূপে আর কলিতে শ্রীশ্রী রামকৃষ্ণ-সারদাদেবী রূপে ধরাধামে ফিরে ফিরে আসেন।প্রকৃত প্রেমের সম্পর্ক জগতে সর্বত্র পূজনীয় এবং বন্দনীয়।প্রকৃত প্রেম সবক্ষেত্রে সব ভূমিকাতেই অটুট বিশ্বাসের বীজ বহন করে।কিন্তু একজন স্বামী-স্ত্রীর নিঃস্বার্থ প্রেম তার সন্তানকে সম্পর্কের মধ্যে চিরস্থায়ী বন্ধুত্ব এবং বিশ্বাসের গুরুত্ব অনুভব করায় এবং একজন দম্পতি অনায়াসেই শিব-পার্বতীর মতো একটি প্রকৃত সুখ-শান্তিময় পরিবারের স্রষ্টা হয়ে ওঠে।কালক্রমে সেই বাবা-মায়ের সুশিক্ষিত সন্তান ভাবি প্রজন্ম হয়ে একটা বংশকে প্রকৃত ভালোবাসা ও বিশ্বাসে পরিপূর্ণ করে তুলে প্রকৃত আত্মীয়-স্বজনের স্রষ্টা হয়ে ওঠে।এইভাবেই কয়েকটি সুউন্নত বংশের সমন্বয়ে সমাজ আত্মিক এবং সাংসারিক উন্নতির দিকে ধাবিত হয়।পরবর্তীকালে সমাজের মধ্যে অন্তর্নিহিত এই বিশ্বাস ও ভালোবাসার ভিতটাই একমাত্র একটি মানবিকতাপূর্ণ সুন্দর পৃথিবীর অস্তিত্বকে নিশ্চিন্তে চিরস্থায়ী করতে পারে।বৈদিক মহান মুনিঋষিরা এই সত্যকে আত্মোপলব্ধি করেছিলেন। এবং সেইজন্যেই আদর্শ গৃহস্থ জীবনের সার্থকতা সহজে উপলব্ধি করানোর উদ্দেশ্যে শিব-পার্বতীর পরিবারের চিত্রায়ণ করেছিলেন এবং চতুরাশ্রমের মধ্যে গারহস্থাশ্রমকেই ধর্মত শ্রেষ্ঠ আশ্রম বলে মান্যতা দিয়েছিলেন।
গতকাল রাতে অফলাইন হলেও নিশ্চিন্তে ঘুম হয়নি পূজার।মন আর আত্মার মিলন ছাড়া ব্যক্তিগত কোনো স্বার্থসিদ্ধি অন্তত কোনো পবিত্র বন্ধনের মূলমন্ত্র হতে পারেনা।হওয়া উচিতও না।আর শুদ্ধ মনে একে অপরকে গ্রহণ করার যোগ্য হলে নির্দ্বিধায় একে অপরের কাছে পূর্ণ সমর্পণ করতে পারা সম্ভব।এটা বাদ দিলে বিয়ের সবটাই তো মোহ,মায়া, আকর্ষণ, আসক্তি---এককথায় অভিনয়।পূজার যখন মাত্র তিন বছর বয়স তখন থেকে পাড়ার দিদিদের দেখে বায়না করে শিবরাত্রির রাতে শিবমন্দিরে শিবের মাথায় জল ঢেলে এসেছে আমাদের পূজা।শিবের মতো বর পাওয়ার আশায় নয় নিশ্চয়।কিন্তু যবে থেকে বিয়ে নিয়ে সত্যি করে ভাবনা চিন্তা করতে শিখেছে,মনে মনে একটা নির্মল প্রেমপূর্ণ পবিত্র সম্পর্ককেই বিয়ে বলে নিজের জীবনে মেনে নেবে বলে স্থির করেছে সে।যা কিছু পবিত্র ,যা কিছু সুগভীর, আর যা কিছু চিরস্থায়ী সেরকম সব কিছুই সব সময় অত্যন্ত আকৃষ্ট করে পূজাকে।জ্ঞানত আত্মিক শুদ্ধতা রক্ষা করেই জীবনের সব ভূমিকা পালন করতে চায় পূজা। নাহলে সংসার ধর্মের চেয়ে পূজার কাছে সন্ন্যাস ধর্ম অনেক সম্মানের।ছোটবেলা থেকেই পূজার সহজাতভাবেই পরিবেশ পরিস্থিতির ঊর্ধ্বে উঠে সূক্ষ্ম উপলব্ধি দিয়ে বিচার বিবেচনা করার ঝোঁক প্রবল।
সূর্য-পূজার যোগাযোগের শুরু থেকে আজ পর্যন্ত ঘটনা প্রবাহকে নিজে নিজে পর্যালোচনা করতে গিয়ে গতকাল রাতে পূজা স্পষ্ট অনুভব করল যে খুব সাধারণ ঘটনা প্রবাহ এটা নয়।মনে মনে ঈশ্বরের কাছে যে পূর্বনির্ধারিত জীবনসঙ্গীর জন্য সে কামনা করে এসেছে,সূর্যই সেই কাঙ্ক্ষিত জীবনসঙ্গী নয় তো?সূর্য তার অনেকদিনের চেনা পরিচিত বন্ধু নয়।তবু কেন কিসের দায়বদ্ধতায় পূজা তার স্বভাবের বিরুদ্ধে গিয়ে প্রথম থেকেই অচেনা অজানা সূর্যকে অদ্ভুতভাবে যুক্তিবাদী মনে অবিশ্বাস করলেও গভীর বিশ্বাস করার থেকে অন্তরমনকে বিরত রাখা সম্বভ হয়নি।তখন সূর্যের সাথে দেশের বাড়িতে জ্যেঠামশাইয়ের পরিচিতি র কথা সে জানতনা।পূজা কলকাতার বাসিন্দা।সূর্য এগরার বাসিন্দা।সূর্য এখনও জানেই না পূজা কেমন দেখতে।পূজার কন্ঠস্বরও শোনেনি এখনও।কিন্তু সূর্যের মনের গভীরে পূজা একটা বিশেষ স্থানে প্রথম থেকেই অধিষ্ঠিত। ঘটনাচক্রে কোথা দিয়ে কিভাবে সূর্য-পূজার একান্ত ব্যক্তিগত প্রেমপ্রস্তাবটি আজ অভিভাবক মহলে বিবাহপ্রস্তাব হয়ে আসতে চলেছে।পূজা চাইলেও এই ঘটনাপ্রবাহের ধারাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারছেনা।জীবনের এই অতি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে জ্ঞানত কোনো ভুল করতে চায়না পূজা।সেইজন্য পূজা মনে মনে তার ভাইকে স্মরণ করে জীবনে আসন্ন এই কঠিন পরিস্থিতিতে সঠিক পথ দেখানোর জন্য সহায়তা প্রার্থনা করল।এতে পূজার মনের অস্থিরতা একটু কমল।একটু নিশ্চিন্ত বোধ হতে ভোর-রাতে পূজার দুচোখে নিদ্রাদেবী খানিকটা সুস্থির হয়ে বসতে পারলেন।অমাবস্যার আঁধার কেটে উষালগ্নে নূতন অরুনের শুভ উদয়ের সঙ্গেই সঙ্গেই প্রারম্ভ হয়ে গেল মা আদিশক্তিস্বরূপিণী দেবীদূর্গার নবরাত্রিক উপাসনা ও উৎসব।
© বুনানী
জন্ম মৃত্যু বিয়ে-তিন বিধাতা নিয়ে।বিবাহ কথাটি সংস্কৃত শব্দ থেকে বাংলায় এসেছে যার অর্থ 'বিশেষভাবে বহন করা'।বেদে বলা হয়েছে যে স্বতস্ফূর্ত প্রেমে জন্ম-জন্মান্তরের পবিত্র বন্ধনে আবদ্ধ দুটি সুগভীর প্রেমপূর্ণ আত্মার অক্ষয় আত্মিক মিলন এবং সেই পবিত্র আত্মিক সম্পর্কের ভার বহন করার বৈদিক প্রক্রিয়াকে বৈদিক বিবাহ বলে।নিঃস্বার্থ নিঃশর্ত পবিত্র প্রেম এমন এক ধরনের দৈবীশক্তি যা হর-গৌরীর মতো দুটি পৃথক দেহের মধ্যে থাকা দুটি জীবাত্মাকে অবিচ্ছেদ্য প্রেমে একাত্ম করে তোলার ক্ষমতা রাখে।এই শক্তিই সৃষ্টির উৎস এবং জগৎ-সংসারে ভারসাম্য বজায় রাখার আধার।পবিত্র দুটি আত্মার আত্মিক ফলে একটা সুউন্নত সমাজ তৈরী হয়।সংসার ধর্মের এই সারটা বোঝানোর জন্য অবতার হয়ে শ্রীশ্রী নারায়ণ ও লক্ষ্মী কখনো শ্রীরামচন্দ্র ও সীতাদেবী,কখনো শ্রীকৃষ্ণ ও শ্রীরাধিকারূপে আর কলিতে শ্রীশ্রী রামকৃষ্ণ-সারদাদেবী রূপে ধরাধামে ফিরে ফিরে আসেন।প্রকৃত প্রেমের সম্পর্ক জগতে সর্বত্র পূজনীয় এবং বন্দনীয়।প্রকৃত প্রেম সবক্ষেত্রে সব ভূমিকাতেই অটুট বিশ্বাসের বীজ বহন করে।কিন্তু একজন স্বামী-স্ত্রীর নিঃস্বার্থ প্রেম তার সন্তানকে সম্পর্কের মধ্যে চিরস্থায়ী বন্ধুত্ব এবং বিশ্বাসের গুরুত্ব অনুভব করায় এবং একজন দম্পতি অনায়াসেই শিব-পার্বতীর মতো একটি প্রকৃত সুখ-শান্তিময় পরিবারের স্রষ্টা হয়ে ওঠে।কালক্রমে সেই বাবা-মায়ের সুশিক্ষিত সন্তান ভাবি প্রজন্ম হয়ে একটা বংশকে প্রকৃত ভালোবাসা ও বিশ্বাসে পরিপূর্ণ করে তুলে প্রকৃত আত্মীয়-স্বজনের স্রষ্টা হয়ে ওঠে।এইভাবেই কয়েকটি সুউন্নত বংশের সমন্বয়ে সমাজ আত্মিক এবং সাংসারিক উন্নতির দিকে ধাবিত হয়।পরবর্তীকালে সমাজের মধ্যে অন্তর্নিহিত এই বিশ্বাস ও ভালোবাসার ভিতটাই একমাত্র একটি মানবিকতাপূর্ণ সুন্দর পৃথিবীর অস্তিত্বকে নিশ্চিন্তে চিরস্থায়ী করতে পারে।বৈদিক মহান মুনিঋষিরা এই সত্যকে আত্মোপলব্ধি করেছিলেন। এবং সেইজন্যেই আদর্শ গৃহস্থ জীবনের সার্থকতা সহজে উপলব্ধি করানোর উদ্দেশ্যে শিব-পার্বতীর পরিবারের চিত্রায়ণ করেছিলেন এবং চতুরাশ্রমের মধ্যে গারহস্থাশ্রমকেই ধর্মত শ্রেষ্ঠ আশ্রম বলে মান্যতা দিয়েছিলেন।
গতকাল রাতে অফলাইন হলেও নিশ্চিন্তে ঘুম হয়নি পূজার।মন আর আত্মার মিলন ছাড়া ব্যক্তিগত কোনো স্বার্থসিদ্ধি অন্তত কোনো পবিত্র বন্ধনের মূলমন্ত্র হতে পারেনা।হওয়া উচিতও না।আর শুদ্ধ মনে একে অপরকে গ্রহণ করার যোগ্য হলে নির্দ্বিধায় একে অপরের কাছে পূর্ণ সমর্পণ করতে পারা সম্ভব।এটা বাদ দিলে বিয়ের সবটাই তো মোহ,মায়া, আকর্ষণ, আসক্তি---এককথায় অভিনয়।পূজার যখন মাত্র তিন বছর বয়স তখন থেকে পাড়ার দিদিদের দেখে বায়না করে শিবরাত্রির রাতে শিবমন্দিরে শিবের মাথায় জল ঢেলে এসেছে আমাদের পূজা।শিবের মতো বর পাওয়ার আশায় নয় নিশ্চয়।কিন্তু যবে থেকে বিয়ে নিয়ে সত্যি করে ভাবনা চিন্তা করতে শিখেছে,মনে মনে একটা নির্মল প্রেমপূর্ণ পবিত্র সম্পর্ককেই বিয়ে বলে নিজের জীবনে মেনে নেবে বলে স্থির করেছে সে।যা কিছু পবিত্র ,যা কিছু সুগভীর, আর যা কিছু চিরস্থায়ী সেরকম সব কিছুই সব সময় অত্যন্ত আকৃষ্ট করে পূজাকে।জ্ঞানত আত্মিক শুদ্ধতা রক্ষা করেই জীবনের সব ভূমিকা পালন করতে চায় পূজা। নাহলে সংসার ধর্মের চেয়ে পূজার কাছে সন্ন্যাস ধর্ম অনেক সম্মানের।ছোটবেলা থেকেই পূজার সহজাতভাবেই পরিবেশ পরিস্থিতির ঊর্ধ্বে উঠে সূক্ষ্ম উপলব্ধি দিয়ে বিচার বিবেচনা করার ঝোঁক প্রবল।
সূর্য-পূজার যোগাযোগের শুরু থেকে আজ পর্যন্ত ঘটনা প্রবাহকে নিজে নিজে পর্যালোচনা করতে গিয়ে গতকাল রাতে পূজা স্পষ্ট অনুভব করল যে খুব সাধারণ ঘটনা প্রবাহ এটা নয়।মনে মনে ঈশ্বরের কাছে যে পূর্বনির্ধারিত জীবনসঙ্গীর জন্য সে কামনা করে এসেছে,সূর্যই সেই কাঙ্ক্ষিত জীবনসঙ্গী নয় তো?সূর্য তার অনেকদিনের চেনা পরিচিত বন্ধু নয়।তবু কেন কিসের দায়বদ্ধতায় পূজা তার স্বভাবের বিরুদ্ধে গিয়ে প্রথম থেকেই অচেনা অজানা সূর্যকে অদ্ভুতভাবে যুক্তিবাদী মনে অবিশ্বাস করলেও গভীর বিশ্বাস করার থেকে অন্তরমনকে বিরত রাখা সম্বভ হয়নি।তখন সূর্যের সাথে দেশের বাড়িতে জ্যেঠামশাইয়ের পরিচিতি র কথা সে জানতনা।পূজা কলকাতার বাসিন্দা।সূর্য এগরার বাসিন্দা।সূর্য এখনও জানেই না পূজা কেমন দেখতে।পূজার কন্ঠস্বরও শোনেনি এখনও।কিন্তু সূর্যের মনের গভীরে পূজা একটা বিশেষ স্থানে প্রথম থেকেই অধিষ্ঠিত। ঘটনাচক্রে কোথা দিয়ে কিভাবে সূর্য-পূজার একান্ত ব্যক্তিগত প্রেমপ্রস্তাবটি আজ অভিভাবক মহলে বিবাহপ্রস্তাব হয়ে আসতে চলেছে।পূজা চাইলেও এই ঘটনাপ্রবাহের ধারাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারছেনা।জীবনের এই অতি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে জ্ঞানত কোনো ভুল করতে চায়না পূজা।সেইজন্য পূজা মনে মনে তার ভাইকে স্মরণ করে জীবনে আসন্ন এই কঠিন পরিস্থিতিতে সঠিক পথ দেখানোর জন্য সহায়তা প্রার্থনা করল।এতে পূজার মনের অস্থিরতা একটু কমল।একটু নিশ্চিন্ত বোধ হতে ভোর-রাতে পূজার দুচোখে নিদ্রাদেবী খানিকটা সুস্থির হয়ে বসতে পারলেন।অমাবস্যার আঁধার কেটে উষালগ্নে নূতন অরুনের শুভ উদয়ের সঙ্গেই সঙ্গেই প্রারম্ভ হয়ে গেল মা আদিশক্তিস্বরূপিণী দেবীদূর্গার নবরাত্রিক উপাসনা ও উৎসব।
© বুনানী