...

6 views

ইসলাম প্রকৃত শান্তি - |নাজিয়া তুল ফাতাহ |
#কোরবানি_প্রকৃত_খুশি
নাজিয়া-তুল-ফাতাহ

জীবনে বড় হতে হলে মনটাকে চাই বড় করা,ত্যাগের অনুভূতি একটা অন্য রকম তৃপ্তি।
আমরা জানি, ঈমান এনে ভালো কাজ করলে আল্লাহ ইহকালীন শান্তি ও পরকালীন মুক্তি উপহার দিবেন।
আল্লাহ বলেন, "নিশ্চই আল্লাহ মুমিনদের জান ও মাল খরিদ করে নিয়েছেন জান্নাতের বিনিময়ে। (সূরা আত তাওবাঃ১১১)
যে মহান সৃষ্টিকর্তা আমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন সে আমাদেরকে দান করেছেন মনুষ্যত্ব। বিবেকবানেরা ক্ষমা নামক এক বিশেষ ক্ষমতার অধিকারী। আল্লাহ বলেছেন," যারা নিজেদের ধন-সম্পদ খরচ করে দুরবস্থাতেই হোক,আর সচ্ছল অবস্থাতেই হোক এবং ক্রোধকে হজম করে আর অন্যান্য লোকদের অপরাধ ক্ষমা করে দেয় সব নেককার লোককেই আল্লাহ খুব ভালোবাসেন।
এছাড়া আমাদের দুনিয়ায় আসার প্রকৃত উদ্দেশ্য হচ্ছে আল্লাহর ইবাদত করা এবং আমাদেরকে আল্লাহর কাছেই ফিরে যেতে হবে,তাই মেহেরবান দয়াময় আল্লাহর জন্যই আমাদের যাবতীয় কার্যক্রম হওয়া উচিত।
আল্লাহ সূরা আন'আম এর ১৬২ নং আয়াতে বলেছেন,
"হে নবী বলুন,আমার নামায,আমার কুরবানি, আমার জীবন,আমার মৃত্যু সবই প্রতিপালক মহান আল্লাহর জন্য।
ধৈর্য্য মহৎ গুণ, আল্লাহ মুমিনগণকে পরীক্ষা নিয়ে দেখবেন যে কারা জিহাদী ও কারা ধৈর্যধারণকারী।
আল্লাহ বলেছেন, আর আমি অবশ্যই তোমাদের পরীক্ষা করব কিছুটা ভয় দ্বারা, ক্ষুধা দ্বারা, আর জান মাল সম্পত্তি, জান ও ফল শস্যের হ্রাস সাধন করে আর (হে রাসূল) আপনি সুসংবাদ দিন ধৈর্যশীলদেরকে। (সূরা আল বাকারা:১৫৫ নং আয়াত)
আমরা তখনই সফল হতে পারব যখন ঈমানদার হিসেবে আমাদের মধ্যে তাকওয়া অর্থাৎ আল্লাহ কে ভয় করা এবং তারই নৈকট্য লাভের জন্য আল্লাহর কাছে সাহায্য চাওয়ার মতো গুনাবলী অর্জন করতে পারব। আমরা যেনো তার পথে সেই চেষ্টা ও সাধনা চালিয়ে যেতে পারি। তবেই আমরা সফলকাম হতে পারব।
হযরত আবু যর গিফারী (রা:) হতে বর্ণিত,তিনি বলেন,আমি জিজ্ঞেস করলাম,হে আল্লাহর রাসূল! কোন আমলটি (আল্লাহর নিকট) সবচেয়ে উত্তম?
তিনি উত্তরে বললেন, আল্লাহর উপর ঈমান আনা এবং তার পথে জিহাদ করা।
(বুখারি ও মুসলিম)
প্রবন্ধঃ সীরাতুন্নবী (সা) (২০)
লেখিকাঃনাজিয়া তুল ফাতাহ

জাহেলিয়াতের অন্ধকার চিরে এক আলোর মশাল হাতে নিয়ে, আমাদের সবার প্রিয় মহানবী (সা) এর অবতীর্ণ। সময়টা এতোই কঠিন ছিলো যে, একটু প্রশান্তি, একটু আশার বানী শুনতে মরিয়া হয়ে উঠত, ঠিক সেই সময়ে জীবনকে শান্তিময় আর পরকালের মুক্তির দিশা দিতে কঠোর পরিশ্রম করেছেন আমাদের রাসূল হযরত মুহাম্মদ (সা)। কিছু বিবেকবান, বিচক্ষন লোকেরা ইসলামের ছায়ায় নিজেকে জরিয়ে নিতে চাইলেন এক সত্যের চাদরে, আল্লাহর রহমত তাদের উপর বর্শিত হোক। আর কুরআন এর ভাষা অনুযায়ী, কিছু অন্ধ, বোবা, বধীর (প্রতীকীস্বরূপ) সত্য জেনেও অস্বীকার করত। এ ধরনের লোকেরা মিথ্যার সাগরে ডুব দিয়েছিল। কি কঠিন সময় ছিল তখন! যখন মানুষ ইসলাম ধর্ম মেনে নিলেও, "আমি মুসলিম " কথাটা প্রকাশ্যে বলতে পারতো না। আর বললে পেতে হত কঠিন শাস্তি। বর্তমান গনতান্ত্রীক বাংলাদেশের মানুষের রয়েছে কথার স্বাধীনতা। সে সময় নিরীহ মুসলমানদের কথা বলার স্বাধীনতা ছিল না, চলতো তাদের উপর হাজার নির্যাতন। এরপর মহানবী (সা) দেখালেন শান্তির পথ। প্রথমদিকে লোকেরা তাকেও বিভিন্নভাবে কষ্ট দিতো, কখনও বাচ্চাদেরকে উষ্কিয়ে দিতো মহানবী (সা) কে পাগল বলতে, এমনকি পাথরের আঘাতে রক্ত ঝরেছে বহুবার, চলার পথে কাটা বিছিয়ে রাখা হতো, এদিকে নামায পড়লে তার উপর পশু-পাখির নাড়িভুঁড়ি তার গায়ে ফেলা হতো। তবু কিছু মানুষ রাসূল (সা) এর সত্যকে স্বীকার করে নিল। তারা রবে জান্নাতে, যেখানে শুধুই শান্তি, আর যারা জেনেও নিজের বিবেক জাগ্রত না করে শয়তানের পথে দৌড়ুলো, তাদের জন্য রয়েছে কঠোর শাস্তি।
মহানবী (সা) তার কর্মের মাধ্যমে সত্যকে করেছিল উদ্ভাসিত, এ এক উদ্ভাবনী শক্তি যা শিক্ষা দেয় ঃ ১) আল্লাহকে এক ও অদ্বীতিয় বলে স্বীকৃতি প্রদান, মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা) কে রাসূল বলে মেনে নেয়া, যা একটি ইউনিভার্সাল ট্রুথ।
২) আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন মানব জীবনের একমাত্র লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য, যেহেতু আল্লাহ আমাদেরকে তার ইবাদত করতে পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন।
৩) জীবনকে সুস্থ, সুন্দর, আলোকিত করতে কুরআন ও সুন্নাহর আলোকে মানবজীবন সাজিয়ে তোলা।
৪) জীবনকে সফল করতে চাই দৃঢ় বিশ্বাস ইসলামের মোলিক সাতটি বিষয়ের উপর, এবং সেই অনুযায়ী আমল করা।
৫) সদা সত্য কথা বলা।
৬) সকল ভালো গুনের অর্জনে আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনা করা।
৭) হারাম কাজ থেকে নিজেকে দূরে রাখা।
৮) বেশি বেশি হাদীস পড়া।
আল্লাহ আমাদের হযরত মুহাম্মদ (সা) এর দেখানো পথ অনুযায়ী চলতে সাহায্য করুন। আমীন।
নাম ঃ নাজিয়া তুল ফাতাহ
শ্রেনী ঃ বোটানি (উদ্ভিদবিজ্ঞান) অনার্স ফার্স্ট ইয়ার।।
কলেজের নাম ঃ রাজবাড়ী সরকারি কলেজ, রাজবাড়ী।
"আল্লাহ তোমাদের গুনাহ মাফ করে দেবেন এবং এমন জান্নাতে স্থান দেবেন যার পাদদেশ দিয়ে ঝর্ণাধারা প্রবাহিত হবে। সদা বসন্ত বিরাজমান জান্নাতে উত্তম ঘর তোমাদের দান করা হবে। এটাই হলো সবচেয়ে বড় সাফল্য ।" (আস সফ ঃ১২)

এবার নিশ্চয়ই মনে প্রশ্ন জাগবে কিভাবে আমরা পেতে পারি এই সাফল্য? হ্যা, এই সাফল্য পাওয়ার উপায় সম্পর্কে আজকের আলোচনা। "যারা বিশ্বাস স্থাপন করে তারা আল্লাহকে সর্বাধিকভাবে ভালোবাসে।" (সূরা বাকারাহঃ ১৬৫)

এই দৃড় বিশ্বাস স্থাপন করতে হবে এক আল্লাহর উপর, "হে জাতি, আল্লাহর ইবাদত করো, তিনি ব্যাতিত অন্য কোনো মাবুদ নেই।" (সূরা হুদ ঃ৫০)

বিশ্বাস এর মৌলিক বিষয় গুলো হলো ইমানে মুফাসসাল এ বর্নিত, (আমানতু বিল্লাহি ওয়ামালা ইকাতিহি ওয়াকুতুবিহি ওয়া রাসুলিহি ওয়াল ইয়াউমুল আখিরি ওয়াল কাদরি খাইরিহি, ওয়াশররিহি মিনাল্লাহি তায়ালা ওয়াল বাসি বাদাল মাওত)

১)আল্লাহ

২)রাসূলগন

৩)ফেরেশতাগন

৪)আসমানি কিতাবসমূহ

৫)পরকাল

৬)তাকদির

৭)পুনুরত্থান

এই সাতটি বিষয়ের উপর বিশ্বাস স্থাপন, মৌখিক স্বীকৃতি ও আমলের উপর অর্থাৎ কাজে কর্মে বাস্তবায়ন করাই ঈমান।
আল্লাহ সূরা আল মায়েদার ৩৫ নং আয়াতে বলেছেন, " হে ঈমানদারগণ আল্লাহকে ভয় করো, তার নৈকট্য লাভের উপায় সন্ধান কর এবং তার পথে জিহাদ কর, আশা করা যায় তোমরা সফলতা লাভ করতে পারবে "।

হযরত আনাস (রা) হতে বর্নিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (স) বলেছেন, "তোমাদের কেউ মুমিন হতে পারবে না যে পর্যন্ত না আমি তার নিকট তার পিতা তার সন্তান এবং অন্যান্য সকল মানুষের চেয়ে অধিক প্রিয় হই।"

বিচারের দিনে মহানবী (স) এর শাফায়াত আমাদের খুবই প্রয়জন জান্নাত লাভের জন্য৷ আল্লাহর আনুগত্য ও মহানবী (সা) এর সুন্নাহ অনুযায়ী চললে আমআদের জন্য মহানবী (সা) শাফায়াত করার একটা সুযোগ লাভ করা যেতে পারে। রাসূল(সা) বলেছেন, "বেহেশতের চাবি হচ্ছে আল্লাহ ব্যাতীত কোন মাবুদ নেই বলে সাক্ষ্য দেয়া।"

"আর অপর একটি প্রতিদান যা তোমরা কামনা কর, পছন্দ কর, তাও তোমাদেরকে দেয়া হবে। আল্লাহর পক্ষ থেকে তোমাদের কাংখিত সাহায্য ও বিজয় অতি নিকটেই হাসিল হবে। (আস সফ ঃ১৩) এছাড়াও,
"তোমাদের মধ্য থেকে যারা ঈমান আনবে এবং আমল সালেহ করবে এমন লোকদের জন্যে আল্লাহ ওয়াদা করেছেন যে, তিনি তাদেরকে সেইভাবে দুনিয়ার খেলাফত ( নেতৃত্ব) দান করবেন, যেভাবে পূর্ববর্তী লোকদের খেলাফত দান করা হয়েছে। তাদের জন্যে আল্লাহ যে দ্বীনকে পছন্দ করেছেন সেই দ্বীনকে মজবুত ভিত্তির উপত প্রতিষ্ঠিত করে দিবেন। তাদের বর্তমানের ভয় ও নিরাপত্তাহীন অবস্থা পরিবর্তন করে শান্তি ও নিরাপত্তা দান করবেন। " ( আন নূর ঃ৫৫)