...

3 views

মেরুভালুক
উত্তরের সমুদ্রের সদস্য আজীবন –
সিন্ধুঘোটকের চরে আলাস্কার বরফের 'পর
হরেক সন্ধ্যের সাঁজোয়ার মতো
আমি আছি! – কেন আছি?
মসের পাহাড় হ'তে বরফের খনি
রাতের রঙের মতো তুলিতেছে ঢেউ,
আকাশে অপার আশা – তবুও করুণ ঊষা
দেখা নাহি করে আর ;
তাহার মাঝেই আমি বাতাসের রং
সোডার ফেনার ন্যায় মাখিয়াছি আজ।
মোর আভরণ এখনো অমর
ভোরের প্রথম রৌদ্রক্ষীরার মতন ;
জীবনের গরমিল পংক্তির ধারে ধারে,
দাঁড়ি-কমা হ’য়ে দাঁড়ায়ে রয়েছি চিরকাল।
এ জীবন শুধু আমার –
এক শুষ্ক মৌসুমে সহিষ্ণু ভগ্ন বিলাপের;
দেখিয়াছি, কেউ মরে বাঁচিবার তরে,
তথাপি আমি যে মরিবার তরে বেঁচে –
আটটি প্রহরে কাজ থাকে নাহি কোনো!
দেখিয়াছি : শিল্পীর চোখে যে স্বেতাকাশে
দুরন্ত মেঘ ওঠে : দ্রুততার গরাদ ভেঙে
সমুদ্র জলপরী হয়ে ডানা মেলে ; সেই চোখে
চাহিয়া দেখি : একখণ্ড অগভীর হিমানী
পৃথিবীর শিরোধরে শিরোধার্য করে
ভাসায়ে রেখেছে পৃথিবীর মানুষের মান :
কাড়িয়া লয়নি মোর প্রাণ;
জানি তবে, উষ্ণতার উচাটনে তাহাও গলিবে ;
স্থানহারা হ’ব আমি : থেমে যাবে স্বর,
বিগলিত শ্বাস, হৃদয় যে মূক ;
তিমিরে তিমির ন্যায় ভাসিব অনাথ –
সমুদ্র করিবে মোরে গলাধ:করণ ;
অন্তিম প্রলাপ? তা ছিল সপরিবারে
মেরুর আলোর ধ্বজে শশী দেখিবারে ;
নেই অনুতাপ, উষ্ণ সম্মিলন –
কেননা আমি যে পেঙ্গুইন না, –
সমাজহীন ধূসর এক অভিধান পুরাতন।

© soumik299