...

1 views

নিঃশব্দ শ্রমিকের কান্নাহীন জীবন
**নিঃশব্দ শ্রমিকের কান্নাহীন জীবন**

দিনভর সে শ্রম করে,
না বলে কিছু, না করে ক্ষোভের প্রকাশ,
কেমন যেন এক নিঃশব্দ যাত্রা,
তার রোজগারে যেন লুকানো বাঁচার নিঃশ্বাস।

হাতের রেখায় কঠিন পরিশ্রমের ছাপ,
মাটির গন্ধ মিশে যায় তার ঘামে,
দিন যায় রাত আসে, শুধু জীবন কাটে
কিন্তু তার মুখে নেই কোনো অভিযোগের নাম।

কোথাও কোনো চাহিদা নেই,
কোনো স্বপ্নের দাবি নেই,
যেন সে জীবনকে মেনে নিয়েছে,
শুধু নিঃশব্দে কাজ করে যায়,
নিদ্রাহীন চোখের গভীরে
থাকলেও নেই কোনো ব্যথার রেশ।

তার জীবন যেমন, যেন বয়ে চলা নদীর মতো,
কোনো বাঁধা নেই, শুধু নিরন্তর প্রবাহ,
তেমনি সে চলেছে, থামে না,
শুধু রোজগারে রাখে জীবনের ছোঁয়া।

কখনো সে ভাবে না,
কেন এতো কষ্ট, কেন এতো বঞ্চনা,
কেন এতো ত্যাগ, তবুও নিঃশব্দে বয়ে চলে,
তার শ্রমিক হৃদয়ে যেন তৃষ্ণা নেই কান্নার।

মাটি কাঁধে করে, ঘাম ঝরিয়ে পথে
কখনো মনে হয়নি, সে অন্যের তুলনায় কম কিছু,
কেননা তার চোখে স্বপ্ন নেই কোনো,
তবু ভেতরে জমে থাকা আশা যেন চুপ করে বসে।

তবুও সে একা,
নিঃশব্দে সে কাঁদে না কখনো,
তার অশ্রু তার ঘামের মতো বয়ে যায়,
বাঁচার সংগ্রামই তার জীবনের শেষ কথা।

দিন শেষে ঘরে ফেরে সে,
এক খণ্ড রুটির মতো জীবনের ছোট্ট চাহিদা,
চুলায় রান্না হয় কষ্টের ধোঁয়ায়,
তারপরও সে তৃপ্ত, কেমন জানি এক অদৃশ্য আলোয়।

বৃষ্টির ফোঁটায় যখন ঘর ফোটে ছিদ্রে,
তারপরও সে হাসে মনে মনে,
কারণ তার এই ছোট্ট জীবনটাই
এক বৃহৎ জীবনের গল্প বলে দেয়।

সে জানে, তার অশ্রু ঝরে না,
তবু ভেতরের কান্না যেন অদৃশ্য,
দিনভর পরিশ্রম করে সে,
কিন্তু মন থেকে সে কাঁদে না কোনোদিন।

জীবনের কঠোর রূপে সে অভ্যস্ত,
তবুও সে লড়াই করে, সে অটল,
তার হাতের কঠোরতা আর মুখের নীরবতা
তার কান্নাহীন জীবনের একমুখী পথ।

তার হৃদয়ে হয়তো জমে আছে পাহাড়ের মতো কষ্ট,
কিন্তু তাতে কোনো ছেদ নেই তার অঙ্গীকারে,
সে অশ্রু ঝরাবে না, তার জীবন যেমন তেমনই,
তবু সে শ্রমিকের দৃষ্টি ভরা এক বিশাল আকাশ।

অতীতে তার জীবনে হয়তো ছিল কিছু স্বপ্ন,
কিন্তু এখন, সেসব শুধু স্মৃতির ছায়ায় ঢাকা,
তবুও সে বাঁচে, সে লড়ে,
দিনভর কাজ করে,
কিন্তু তার অশ্রু ঝরে না...


© Indrani Palit Karmakar