...

6 views

রাত্রির রেনেসাঁয়
বনপাপড়ির ছোঁয়াচে রাত
হিম তুহিনের চিরকবলিত কৃষ্ণগহ্বরে
জেগে ওঠে রোজ হংশচঞ্চুর অন্ডের মতো
গোলযোগে নড়াচড়া করে;
তেমনি অসত্য কুহুসুরে ডাকি তোলে মোরে
কবজির রেশমি চুড়ির খাওয়া-খাওয়া স্বর,
পিদিমহীন পিষ্টনে অর্ধোজ্জ্বল মণি প্রায়;
রূপহীন অন্ধকারে মন পড়ে কাফনের ভিতর;–
সুখ-সিঁড়ি হতে হাজার ক্রোশেক দূরে।
রাতের কবিতা – দর্শন এরূপই কয়,
আমিও কয়েছি এহেন শতবার;
নিকটে যাওয়া তবু যে অনভিপ্রেত নয়;
তবু কারো দিন প্রতিদিন অনুরূপ নাহি হয়–
তাই আমি যাই, মথের পিউপা যেন;
তিনটি তলার 'পর, দাঁড়ায়ে রাত তিনটার পর –
ওড়নার মতো উড়িতেছে আমাদের ঋতুহীন মন!
কত চরিত্র-বিশেষণ-অব্যয়,
আপ্তবাক্য সমাগম ঘটায় !
তবু সে ফিরায়ে দেয় আমাদের হাতে
দর্পণে নিজ অভিসন্ধির প্রতি
ফিরিয়া তাকা’বার অবকাশ।
যে দোটানায় পাহাড়, তটিনী, কুয়াশার নীড়ে
পৃথিবীর সকল ঐশ্বর্য্য ও গরল সমান মনে হয়,
যে তল্লাটে কোনো স্বপ্ন হারানোর ভয় নাহি রয়,
যে রূপের মোহে ব্যালকনি হতে
উদাসীন দেহ-মন – আরো কাছে
পেতে চায় তার নিতান্ত এই আপন আকাশ,
তারকাখচিত হাসি রাখাল বাঁশির ন্যায়
তারুণ্য লয়ে আনে;
সকল উৎকণ্ঠা বালুকার মতো–
প্রকান্ডতার মহাসমুদ্র হতে
মিটমিটে-ক্ষীণ-মিহিতর মনে হয়;
আমাদের সকলের চেনা – মালতি চাঁদের হাত
পূবাকাশ হতে পুনশ্চ পড়ে আমাদেরই
মাথার উপর :
নিচে নিচে যার আমরা হেঁটেছি শিশু হ’য়ে প্রাক্কালে,
আমরা যখন শিশু ভোলানাথ –
অবাক হয়েছি সাথে দেখে বহুবার;
ফের বলে ওঠে,
“সৃষ্টিই আছে তোমার তরে তে,
এসো যেন রোজ – আমাদের গুনে –
তুমিও তাহলে সই দিয়ে যেও : ফলকখানিতে নাম;
এই গৃহখানি বিষময় নয়, গভীর বিস্ময়,–
মোদের সবার মতোই শুধু তোমার!”
দেখিলাম তাহা: সত্যই কয়েছিল;–
মোজার্ট তথা তানসেন সুর নাহি তুলিলেও
মরুতের সুর বহুল মজুত ছিল আমার !
বুঝিলাম আমি : যেন রাত্রি বর্ণহীন জল!
মুখহীন যে মুকুটিনী দিল এত স্নেহ-আহ্লাদ,
আঁধারেও আলো – আশিষ-অভয়-আশ্বাস-আশ্বাদ,
জোনাকির বিভা, জীবনখানির ঝাউবনে বিশ্রাম,–
তোমা কাছে আমি ঋণী চিরকাল;
দিতে যেন পারি দাম!


© soumik299