...

0 views

কাঁকড়া বুড়ি
সুন্দরবনের অন্যতম মন্দির কাঁকড়া বুড়ি শীতলা মায়ের মন্দির। এই মন্দিরের অলৌকিক ঘটনা ঘট তোলার সময় কাঁকড়া উঠবে ও আকাশে চিল উড়বেই।বহু দূর দূরান্ত থেকে ভক্তরা মায়ের কাছে ভোগ নিবেদনের জন্য আসেন। নামখানা লালপুলের মন্দির টিতে ।নামখানার ঐতিহ্যবাহী কাকঁড়া বুড়ি মায়ের মেলা প্রাঙ্গণ ভিড় জমান বিভিন্ন স্থানে ভক্তরা।প্রায় করেছে এই পুজোর বয়স ৭০ কাছাকাছি ।দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার নামখানা ব্লকের শিবনগর আবাদ শ্রী শ্রী শীতলা মায়ের মন্দির এক কথায় ঐতিহ্যবাহী কাকঁড়া বুড়ি মায়ের মন্দির নামে পরিচিত।
ভেবে দেখুন ধর্মের সাথে মানুষের সংস্কৃতি কিভাবে মিলে মিশে আছে। এই অঞ্চলে যেহুতু মৎস জিবীদের বাস তাই এই পৌরাণিক দেবী শীতালার সাথে
কাঁকড়া প্রসঙ্গে জরিয়ে যাচ্ছে লোক কথার মাধ্যমে।
এখনো এখানে নদী থেকে কাঁকড়া উঠলে, তবে শাঁখ বাজিয়ে ঘট উত্তোলন করে শুরু হয় 'কাঁকড়াবুড়ি'র পুজো। বলা হয় এ সময় চিল দেখা যায় আকাশে। নামখানায় প্রতিবছর এ পুজো হয় খুব ধুমধাম করে। হাজির থাকেন হাজার হাজার ভক্ত মানুষ। প্রতিবছর বছর নাগাদ পুরোহিত ঘট তোলায় সুন্দরিকা দোয়ানিয়া নদী থেকে। নদীতীরে আচার অনুষ্ঠান শুরুর মুহূর্তে আচমকা শঙ্খচিল ডানা মেলল উড়ে আকাশে। তার ডাক শোনা যায় নীচ থেকে। বলা হয় পূজা শুরু হলে একটি কাঁকড়া নদী থেকে হেঁটে হেঁটে আসছে পুজোস্থলে। তারপর শঙ্খধ্বনি দেওয়া হয় ঘট উত্তোলন হয়।তারপর নিষ্ঠার সাথে পূজা শেষে হয়।
লোক কথা অনুযায়ী ৬৬ বছর আগে প্রথম শীতল্য ঠাকুরের শরণাপন্ন হয়েছিল নামখানার বাসিন্দারা। বহু মানুষ তখন গুটি বসন্তে আক্রান্ত হয়েছিলেন । কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছিলো। শেষ পর্যন্ত সুন্দরবনের এই অঞ্চলের বাসিন্দারা শীতলার আরাধনা শুরু করলেন বসন্ত রোগের হাত থেকে রক্ষা পেতে। নামখানার শিবনগর আবাদ এলাকায় ছোট শীতলার মন্দির তৈরি হল । শুরু হল পূজা আরাধনা। পুজো শুরুর কিছুদিন পর থেকে অলৌকিকভাবে গুটিবসন্ত কমতে থাকলো। আক্রান্তরাও ধীরে সুস্থ হতে শুরু করলেন ফলে ভক্তদের বিশ্বাস বাড়লো। সেই সংবাদ ঝড়ের বেগে ছড়িয়ে পড়ল আশপাশে দেবীর মহিমার কথা। তারপর এই অলৌকিক কাঁকড়া ঘটনা । তখন থেকে শীতলার নাম হল কাঁকড়াবুড়ি। ভক্তি ও বিশ্বাসে ভর করে কাঁকড়াবুড়ির সেই পুজো জনপ্রিয় হয়ে উঠল খুব তাড়াতাড়ি।
বর্তমানে অন্যান্য রাজ্য থেকেও বহু মানুষ আসেন এখানে। মন্দিরে পুজো দেন তাঁরা। 'নিষ্ঠাভরে পুজোর আয়োজন হয়। এই রাজ্য শুধু নয়, ভিন রাজ্যের মানুষও মন্দিরে আসেন। ভোগ হিসেবে মাছ ও কাঁকড়ার তরকারি দেওয়া হয়। মন্দির সংলগ্ন মাঠে সাত দিন ধরে গ্রামীণ মেলা চলে।
© Manab Mondal