...

4 views

নতুন শুরুর গল্প

" এই ফাল্গুনী, তোর কি কনজান্টিভাইটিস হয়েছে নাকি? "



সকাল থেকেই মেজাজটা এমনিতেই বিগড়ে ছিল কিন্তু হটাৎ মেঘার এমন অদ্ভুত প্রশ্ন করাতে মেজাজটা যেন আরও বিগড়ে গেল ফাল্গুনীর। তাই চোখ থেকে বাদামী রঙের রোদ চশমাটা খুলে চোখদুটোকে বড়ো বড়ো করে মেঘার দিকে তাকিয়ে বেশ ঝাঁঝিয়েই বলে উঠলো, " দেখে নে, ভালো করে দেখে নে। "



মেঘা ওর চোখের দিকে দেখেই বুঝে গেছে যে মেয়েটা সারারাত কান্নাকাটির পর্ব চালিয়েছে। তাই তো এখন লাল হয়ে ফুলে যাওয়া চোখদুটোকে ঢাকতে সানগ্লাস পড়ে বসে আছে। কিন্তু হটাৎ করে এমন কি হলো যে মেয়েটা এতো কান্নাকাটি করছে। প্রশ্নটা মানসপটে উদয় হলেও ফাল্গুনীকে এই ব্যাপারে এখন জিজ্ঞেস করাটা ঠিক মনে করলো না। তাই এই মুহূর্তে ফাল্গুনীর মাইন্ডটা একটু চেঞ্জ করার চেষ্টা করলো। কিন্তু মেঘার কোনো কথারই কোনো প্রভাব পড়লো না ফাল্গুনীর ওপর। উপরন্তু সব কথায় মেঘাকে কেমন একটা রূঢ় ভাবে উত্তর দিলো। এবার মেঘা ফাল্গুনীকে মনে উদিত প্রশ্নটা করেই ফেললো, " কি হলো হটাৎ এতো রাগছিস কেন বলতো? সৌমিক কি আবার কিছু করেছে নাকি?"



মেঘার কথাগুলো শুনে ফাল্গুনীর রাগের পারদটা যেন আরও একটু বেড়ে গেল। তাই তো আবারও একটু রূঢ় ভাবেই বলে উঠলো, " রাগ করার মতোই বিষয়। তুই আমাকে ঘরের মধ্যে সানগ্লাস পড়ে দেখতে পেলি কিন্তু আমি সানগ্লাসটা খোলার পর কিছু দেখতে পেলি না? আর ওই সৌমিকের তো নামও নিবি না। "



ফাল্গুনীর কথা শুনে মেঘা সামনের ছোট টেবিলটা থেকে সানগ্লাসটা হাতে তুলে নিয়ে দেখতে লাগলো। যা দেখে ফাল্গুনী কাচুমাচু মুখ করে উপরওয়ালাকে উদ্দেশ্য করে আপনমনে বলে উঠলো, " এই সব উদো পাবলিকগুলোকেই আমার ভাগ্যেই কেন লিখেছিলে? সবকটাই মাথামোটা। কিছু বুঝেও বোঝে না আর কিছু দেখেও দেখে না। "



ফাল্গুনীর শেষের কথাটা শুনে মেঘা রোদচশমা সমেত কোমরে হাত রেখে সগর্বে ওকে বলে উঠলো, " কিছু না বুঝলে আমি এতদিন ধরে তোর জন্য আসা সুপাত্রগুলোকে রিজেক্ট করালাম কিকরে? "



ফাল্গুনী কোন উত্তর দিচ্ছে না দেখে মেঘা ভ্রূ জোড়া উঠিয়ে ফাল্গুনীর দিকে তাকালে ফাল্গুনী একটু উদাস ভাবে বলে ওঠে, " কিন্তু কি লাভ এতো কিছু করেও? "



মেঘা অবাক হয়ে বলে উঠলো, " কি লাভ মানেটা কি? তোর আর সৌমিকের লাভের ট্রেনটাকে রাজধানীর স্পিডে স্টেশনে নিয়ে

যাওয়ার জন্যই তো আঙ্কেল-আন্টির সামনে ট্যাংকার ট্যাংকার মিথ্যে মিথ্যে বাহানা করলাম। "



" হ্যাঁ কিন্তু এতকিছুর পরেও তো সৌমিক আমার দিকে সেভাবে তাকায় না। ওর কাছে তো আমি শুধু ওর বেস্ট ফ্রেন্ড। "



মেঘা এবার রোদচশমাটা সামনে থাকা সুদৃশ্য ছোট্ট কাঁচের টেবিলটায় রেখে ফাল্গুনীর পাশে বসে পড়লো। তারপর বলে উঠলো, " আচ্ছা ও নাহয় তোকে নিজের ফ্রেন্ড মানে কিন্তু তুই কি ওকে কখনো কোনো ইশারা করেছিস? মানে তুই কি ওকে কখনো কোনো রকমে বোঝানোর চেষ্টা করেছিস, যে তুই ওকে ফ্রেন্ডের থেকেও একটু বেশিই মনের করিস? "



ফাল্গুনী মেঘাকে প্রত্তুতরে কিছু বলার যেই মাত্র মুখটা খুলতে যাচ্ছিলো, সেই মাত্রই মেঘা নিজের ডান হাতের তর্জনী ফাল্গুনীর ওষ্ঠদ্বয়ের ওপর রেখে বলে ওঠে, " কলেজের তিনটে বছর ভালোই দেখেছি যে তুই ওকে কত ইশারা করেছিস! না, তাই এই প্রশ্নের উত্তর তুই দিস না। "



" মানেটা কি? সেই ক্লাস ইলেভেন থেকে কতরকম ভাবেই তো ইশারা-ইঙ্গিতের মাধ্যমে বোঝানোর চেষ্টা করেছি। কিন্তু মহাশয়ের সেদিকে নিজের দৃষ্টিপাত করলে তো! " ফাল্গুনী...