...

1 views

A writing of Bhaskar Tikader
বুদ্ধ দ্বারা ধম্ম দর্শন পরিমার্জিত হয়ে নবঃবুদ্ধবাদ তৈরি হয়েছে যা ডঃ আম্বেডকর তৈরি করেছেন। সেটা সন্নাস,ভিক্ষুক, নাস্তিক কিছুই তৈরি করে না।
ভারতের মধ্যে অন্যতম উজ্জ্বল তম কর্মবির ডঃ আম্বেডকর যে আবার বৌদ্ধ দর্শনে বিশ্বাসী ছিলেন। তিনি নিজেই কর্মকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন।
গুরুচাঁদ ঠাকুরের মতাদর্শ তার কোন অনুগামীর মধ্যে এখনও পরিলক্ষিত হয় নি।(মহাপ্রান যোগেন্দ্রনাথ মন্ডল ছাড়া)।
বুদ্ধের মতবাদের সঙ্গে চলুন একটু পরিচিত হই।

অনেকেই ভাবেন অহিংস তত্ত্বই বুদ্ধের শিক্ষার একমাত্র ও শেষ কথা।
কিন্তু বুদ্ধ যা শিখিয়েছেন তা যে অহিংসার পরেও আরও অনেক কিছু -- সে কথা প্রায়ই কেউই জানে না।
ত্রিপিটক পাঠের পর যা উপলদ্ধি হয় তাহলো ----
১)মুক্ত সমাজের জন্য ধর্মের প্রয়োজন আছে।
২)সব ধর্মই গ্রহনযোগ্য নয়।(যে ধর্মে মানুষের প্রতি সাম্যের কথা বলে সেটাই গ্রহনীয়)।
৩) ঈশ্বর বা আত্মা বা স্বর্গ বা পৃথিবী সম্পর্কিত তত্ত্ব এবং কল্পনার সঙ্গে নয়, জীবনের বাস্তব ঘটনার সঙ্গে ধর্মের সম্পর্ক থাকা উচিত
৪) ঈশ্বর কে ধর্মের কেন্দ্র বিন্দু করা অনুচিত।
৫)আত্মার মুক্তি কে ধর্মের কেন্দ্র বিন্দু করা অনুচিত।
৬) পশুবলি ধর্মের নীতি নয়।
৭) শাস্ত্রের মধ্যে নয় --মানুষের হৃদয়েই থাকে প্রকৃত ধর্মের অস্তিত্ব।
৮) মানুষ ও নৈতিকতাই ধর্মের মুল কেন্দ্র।তানাহলে ধর্ম হয়ে দাঁড়াবে এক নিষ্ঠুর কু-সংস্কার।
৯) নৈতিকতাই হল আদর্শ জীবন বিধান ।
১০) জগতের পূনর্গঠন ও জগতের সুখের বিধানই ধর্মের কর্তব্য।
১১)স্বার্থের সংঘাতই জগতের দুঃখের কারণ। এবং তা নিরাসনের একমাত্র উপায় অষ্টাঙ্গ -মার্গের অনুসরণ।
১২) সম্পত্তির ব্যাক্তি মালিকানা এক শ্রেণীর হাতে ক্ষমতা এনে দেয় এবং অন্য শ্রেনীর জন্য নিয়ে আসে দুঃখ।
১৩) জগতের কল্যানের জন্য দুঃখের কারণ দুর করে তার অবসান দরকার।
১৪)সব মানুষই সমান।
১৫)জন্মনয় যোগ্যতাই মানুষের মূল্যায়নের মান দন্ড।
১৬)মহৎ বংশের জন্ম গ্রহণ করলেই মহৎ হওয়া যায় না,মহৎ হতে হলে দরকার --উচ্চ আর্দশ।
১৭) সকলেরই প্রতি মৈত্রীভাব দেখাতে হবে এমনকি শত্রুর প্রতিও।
১৮)প্রত্যেটা মানুষের জন্য শিক্ষার প্রয়োজন আছে।খাদ্যের মতোই বাঁচার জন্য শিক্ষার প্রয়োজন।
১৯)যে শিক্ষা আর্দশ চরিত্র তৈরি গঠন করে না,সে শিক্ষা বর্জনীয়।
২০) কিছুই অভ্রান্ত নয়, কিছুই চিরকালের জন্য বাধ্যতামূলক নয়।সব কিছু অনুসন্ধান ও পরীক্ষাসাপেক্ষ।
২১) কিছুই চুড়ান্ত নয়।
২২)সব কিছুই কার্য -করন বিধানসাপেক্ষ।(কার্য অনুযায়ী ফল পাওয়া যায়)
২৩) কিছুই চিরস্থায়ী বা সনাতন নয়। সবকিছুই পরিবর্তনশীল।
২৪)ন্যায় ও সত্যের জন্য যুদ্ধ করা অন্যায় নয়।
২৫) পরাজিতের প্রতি -বিজয়ীর কর্তব্য রয়েছে।
সংক্ষিপ্ত ভাবে এটাই বুদ্ধের মতবাদের মুল বক্তব্য।কত প্রচীন (খ্রীপূর্ব ৫৩২ অব্দের পর) কিন্তু কত নতুন,কত গভীর তার শিক্ষা।
(ডঃ আম্বেডকরের লেখা বুদ্ধ ও কার্ল মার্কস গ্রন্থ থেকে নেওয়া - অনুবাদ অধ্যাপক সমর রায়)।
এগুলো পড়ুন আর মিলিয়ে দেখুন --
এই মতবাদের সঙ্গে কি হিন্দু ধর্মের কোন মিল আছে??
এগুলোর মধ্যে হরিগুরুচাঁদ ঠাকুর প্রবর্তিত ""
মতুয়া ধর্ম দর্শনের " মধ্যে কি কি বিষয়ে মিল আছে ?
আর কি কি বিষয়ে অমিল আছে?
যে সমস্ত হিন্দু মতুয়ারা বুদ্ধের কথা শুনলেই জ্বলে উঠে।
তারা পড়ে দেখুক এর মধ্যে কোন আর্দশ তাদের বিপরীতে???
পড়ুন আর ভাবুন,আর জ্ঞান অর্জন করুন, নিজেকে প্রজ্ঞাশীল করে তুলুন।
শুভেচ্ছা সহ,আত্বদীপ ভব, পৃথিবীর সমস্ত প্রানীর কল্যান হোক।
জয় হোক মানবতার।
© Arka Samanta