...

3 views

কেউ দেখছে
স্কুলের সেই দিনগুলোর কথা আজও তনুর স্পষ্ট মনে আছে। বাবার ট্রান্সফার হওয়ায় তনু পরিবার মুর্শিদাবাদে শিফট হয়। সেখানের এক স্কুলে তনু ষষ্ঠ শ্রেণীতে ভর্তি হয়। যেহেতু তনু ছোটবেলা থেকে কলকাতায় বড়ো হয়েছে, তাই ওখানের পরিবেশের সাথে, ওখানের মানুষজনের সাথে মানিয়ে নিতে একটু অসুবিধা হচ্ছিলো। স্কুলে নতুন হওয়ায় তনুর খুব একটা বন্ধুত্ব হয়নি কারোর সাথে। তাই স্কুলে তনু  সবসময় একাই থাকতো। একদিন স্কুলের ছুটির পর  তনুর বাবার ডিউটি পরে যাওয়ায়  তনুর  বাবা তনুকে  দেরিতে নিতে আসেন। তাই তনু স্কুলের পিছনের পার্কটায় গিয়ে দোলনা চড়তে ব্যাস্ত হয়ে যায়। ওই পার্কটায় কেউই যায়না। আসলে ওটা একটা পরিত্যক্ত পার্ক। তখনি  হটাৎ একটা মেয়ে কোথা থেকে এসে তনুকে বনু বনু বলে ডাকে। মেয়েটি তনুকে বলে ওর নাম নীলিমা। সে তনুর স্কুলের দারোয়ান কাকুর মেয়ে। আর ওই স্কুলেই নবম শ্রেণীতে পড়ে। খুব শীঘ্রই ওই মেয়েটির সাথে তনুর বন্ধুত্ব হয়ে যায়। তারপর থেকে দুজনে একসাথে স্কুল ছুটির পর রোজ ওই পার্কটায় খেলতো। এরই মাঝে অনেকটা সময় পেরিয়ে যায়। তনুও নীলিমাকে নিজের দিদির মতো মনেকরে নিজের সুখ-দুঃখ সবকিছু নীলিমার সাথে ভাগ্ করে নিতো।


যেহেতু তনুর বাবা সরকারি চাকরি করতেন তাই ওর বাবার আবার ট্রান্সফার হয়ে যায়। ট্রান্সফারের কথা শুনে তনু নীলিমাকে জানানোর জন্য পার্কে যায়। তনু গিয়ে দেখে নীলিমা পার্কে আসেনি। তনু অনেক্ষন অপেক্ষা করে নীলিমার জন্য কিন্তু নীলিমা আসেনি দেখে তনু স্কুলের দারোয়ান কাকুর কাছে নীলিমার জন্য একটা চিঠি দিতে গিয়ে জানতে পারে দারোয়ান কাকুর মেয়ে ২বছর আগে ওই পার্কে খেলতে গিয়ে মাথায় লোহার দোলনার দ্বারা আঘাত পেয়ে মারা যায়। এসব শুনে তনু খুব ভয় পেয়ে অজ্ঞান হয়ে যায়।


যেদিন তনু ওর পরিবারের সাথে মুর্শিদাবাদ থেকে চলে যাচ্ছিলো ওই দিন স্কুলের পিছনের পার্কের রাস্তা দিয়ে গাড়িতে করে স্টেশনে  যাবার সময় তনুর মনে হয়েছিল ওই পার্কের ভিতর থেকে ওকে  কেউ দেখছে।

© 𝙰𝚗𝚗𝚒𝚎