...

7 views

মাশুল
শীতের সকাল। জনবিমুখ রাস্তাঘাট। কলকাতা তখনও লেপের তলায় তন্দ্রাচ্ছন্ন। কুয়াশার আবছায়ায় চৌরাস্তার এক কোনে উঁকি দিচ্ছে পাড়ার প্রসিদ্ধ রাখাল দা-র চায়ের দোকানটা। সেখানে প্রায় প্রতিদিনই গরম চায়ের চুমুকে অবসন্ন শরীরটাকে একটু চাঙ্গা করতে ছুটে আসেন স্থানীয় ব্যক্তিবর্গ ও অফিসগামী মানুষেরা। আজ ভিড়টা তুলনায় কম।

বাইরের বেঞ্চে কেবল দু'-একজনের দেখা মেলে। ঠাণ্ডা হাওয়ায় খোশমেজাজে আড্ডা দিতে তাদের নেহাত মন্দ লাগে না। সহসা দেখা গেল, একজন সেদিকেই ক্রমশ এগিয়ে যাচ্ছে। তাহলে তার একটু বর্ণনা দেওয়া যাক।

অদ্ভুত চেহারার সে। ঝাপসা দিগন্তরেখা থেকে ইতঃস্তত ভঙ্গিতে কীসব ইশারা করে চলেছে ধুলোমাখা হাত দুটো নেড়ে। মাঝে মাঝে একটা হাত পকেটে গুঁজে আরেক হাতে একফালি চিরকুট নিয়ে সেদিকে তাকিয়েই কী যেন ফায়সালা করে নিতে চাইছে। বেড়ালের ইঁদুর খোঁজার মতো সেও যেন অলিগলিতে পায়চারি করতে করতে কাউকে খুঁজছে একনাগাড়ে। মুখে মাস্ক, মাথা ভরা উস্কোখুস্কো চুল। নিছক সন্দেহের বশেই তার চোখের চাহনিকে ঠাহর করে দেখল দোকানি রাখাল বসাক। শেষ অবধি এদিকেই এল আনকোরা লোকটা।
"দাদা, বলছিলাম যে–"
"কী চাই এখানে?"
"না, আসলে আমি একজনের ঠিকানা..."
"অন্য কাউকে জিজ্ঞেস করুন, যান," – গ্যাসের নভ ঘুরিয়ে বন্ধ করে বলে উঠল রাখাল দা।
"আজ্ঞে, আমি ঠিকাদার। আজ একটা নতুন কাজ পেয়েছি। যাকে খুঁজছি তার নাম..."
"বললাম তো, ঠিকানা ফিকানা বলতে পারবো না। যান দিকি এবার?"
নিজের খিটখিটে মেজাজে সামাল দিতে পারলো না পাড়ার সখের চায়ের দোকানি। যে ব্যক্তি রোজ মশলা আর লেবুর চায়ের গন্ধে সবার মন জয় করে নেয়, তার থেকে কী...