মুখোমুখি
ওদের চিৎকারে আমি দরজা খুলতে বাধ্য হলাম। এতোদিন পর আমরা মুখোমুখি। অস্পষ্ট হলেও মুখটা আমার খুব চেনা চেনা লাগছে।চৈতালি বন্ধ দরজার বাইরে দাঁড়িয়ে কিছু অসভ্য গালাগালি দিয়ে টাকা চাইলো। একটা হাত এক মুঠো টাকা ওর ওপর ছুড়ে দিলো। ভীষন রাগের সাথে বললো
"শালী নে টাকা নে, টাকা ছাড়াতো কিছুই চিনিস না।"
চোখের জল কাপুরের মতো উবে গিয়ে ওর ঠোঁট এলো একটা জয়ের হাসি। টাকা গুলো গুছিয়ে ব্যাগের ভেতর ঢুকিয়ে , ও ওঠে দাঁড়াবার চেষ্টা করে, টাল সামলাতে না পেরে, পড়ে যাচ্ছিল। আমি দৌড়ে গিয়ে, ওকে ধরলাম।
ও আমাকে চিনতে পেয়ে একটা মিষ্টি বাঁকা হাসি হেসে বললো " বাবু আগের থেকে অনেক সস্তা হয়ে গেছি। আজ রাতটা বিক্রি আছে, কিনবে না কি? এখন নিয়মিত রক্ত পরীক্ষাও করাই, কোন অসুখ বিসুখ প্রাচার করবো না।"
আমি সহ স্নেহে ওর ঠোঁটে হাত দিয়ে চুপ করিয়ে দিলাম, আসতে আসতে আমার ঘরে ঢুকিয়ে নিলাম। বিছানায় শুইয়ে দিয়ে চাদর গায়ে দিয়ে দিলাম। আমি বুঝতে পারছি ওর গায়ে ভীষন জ্বর। তাই তাড়াতাড়ি একটা জ্বরে ট্যাবলেট খেতে দিলাম।ও কোন প্রতিবাদ করলো না।
আজ থেকে প্রায় পাঁচ বছর আগে ওর সাথে আমার প্রথম দেখা। একটা ইউটিউব চ্যানেল খুলেছিলোও, সোস্যাল মিডিয়া একটু রিল টিল বানায়, কিছু ভিডিও বানিয়ে, কিছু পুরুষের প্রশংসা পেয়ে মডেল এবং অভিনেত্রী হবার স্বপ্ন দেখছে। আমার চেনা জানা ক্যামেরা ম্যান সন্তু তখন ওর বয়ফ্রেন্ড। শালা পাক্কা দালাল ও। আমার প্রাক্তন স্ত্রী নীলাঞ্জনা বিয়ে করেছে খবর পেয়ে হঠাৎ আমার মনে হলো। আমিও কারো সাথে ফুর্তি করি। দেশে ফিরে সন্তু যোগাযোগ করলাম। ও চৈতালি বুঝিয়ে বাঝিয়ে পাঠালো আমার সাথে রাত কাটাতে। সেইদিন বলেছিলাম " আমি এটা ওর প্রথম রাত কিন্তু শেষ রাত নয়। কারণ সন্তু রা কোন দিন কোন মেয়ে ভালোবাসে না, নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করে, ওরা অভিনয়ে পাকা.."
তারপর ওর সাথে কিছু দিন নিয়মিত সম্পর্কে তৈরি হয়।ওর গায়ে সয়া হয়ে গেছে ব্যাপারটা, ভালো টাকাই রোজকার করছিলো। এ ধরনের মেয়েদের কিছু শর্ত মেনে চলতে হয়। ক্লাইন্টের সাথে বেশি মাখামাখি করলে খবর আছে। কিন্তু জাহাজে চাকুরী দেবপ্রসাদকে ও মন দিয়ে ফেললো। দেবপ্রসাদ বিবাহিত ছিলো। তবে অনেক টাকা, তাই নিজে একটা ফ্লাট কিনে ওকে উপহার দিলো। মাস খরচা পাঠাতে থাকলো। কিন্তু এটা ভালো চোখে দেখলো না সন্তু। বচসা করতে করতে দেবপ্রসাদ খুন হলো সন্তুর হাতে। অভিভাবকহীন চৈতালি আবার নামতে বাধ্য হলো। অন্ধকার জগতে।
ও বাজারি মেয়ে ছিলো না। ওর কাছে আদরের জন্য নয়, আমি যেতাম একটা আশ্রয়ের জন্য। ক্লান্তি দূর করে দিতো ওর সাথে কাটানো মুহূর্তগুলো। ও আজ বেশ ক্লান্ত।ও চুপচাপ শুয়ে ছিলো।ওর চোখ দিয়ে জল গড়িয়ে পড়ছে। আমি ওর চোখটা মুছিয়ে দিতে যেতে ও আমার হাত ধরলো।
বললো" আপনি আমাকে পাহাড়ে নিয়ে গিয়ে, জোছনা রাতে দেখাবেন বলেছিলেন। এখন দেখাবেন। না আজ আপনার পাহাড়ে আর চাঁদ জোছনা হবে না আমার জন্য। আমার মতো অন্ধকার জীবনে জোছনা রাত আসাতে নেই না। আমি শুধু কি অন্ধকার রাতে বিছানা গরম করে যাবো সারাজীবন।"
ভীষন একটা কঠিন প্রশ্নের মুখোমুখি হয়ে আমি চুপ করে রইলাম। ওর হাত ধরে একটা চুমু খেয়ে বললাম "ঘুমিয়ে পড়ো , সকাল হলে কথা বলবো,,,"
© Manab Mondal
"শালী নে টাকা নে, টাকা ছাড়াতো কিছুই চিনিস না।"
চোখের জল কাপুরের মতো উবে গিয়ে ওর ঠোঁট এলো একটা জয়ের হাসি। টাকা গুলো গুছিয়ে ব্যাগের ভেতর ঢুকিয়ে , ও ওঠে দাঁড়াবার চেষ্টা করে, টাল সামলাতে না পেরে, পড়ে যাচ্ছিল। আমি দৌড়ে গিয়ে, ওকে ধরলাম।
ও আমাকে চিনতে পেয়ে একটা মিষ্টি বাঁকা হাসি হেসে বললো " বাবু আগের থেকে অনেক সস্তা হয়ে গেছি। আজ রাতটা বিক্রি আছে, কিনবে না কি? এখন নিয়মিত রক্ত পরীক্ষাও করাই, কোন অসুখ বিসুখ প্রাচার করবো না।"
আমি সহ স্নেহে ওর ঠোঁটে হাত দিয়ে চুপ করিয়ে দিলাম, আসতে আসতে আমার ঘরে ঢুকিয়ে নিলাম। বিছানায় শুইয়ে দিয়ে চাদর গায়ে দিয়ে দিলাম। আমি বুঝতে পারছি ওর গায়ে ভীষন জ্বর। তাই তাড়াতাড়ি একটা জ্বরে ট্যাবলেট খেতে দিলাম।ও কোন প্রতিবাদ করলো না।
আজ থেকে প্রায় পাঁচ বছর আগে ওর সাথে আমার প্রথম দেখা। একটা ইউটিউব চ্যানেল খুলেছিলোও, সোস্যাল মিডিয়া একটু রিল টিল বানায়, কিছু ভিডিও বানিয়ে, কিছু পুরুষের প্রশংসা পেয়ে মডেল এবং অভিনেত্রী হবার স্বপ্ন দেখছে। আমার চেনা জানা ক্যামেরা ম্যান সন্তু তখন ওর বয়ফ্রেন্ড। শালা পাক্কা দালাল ও। আমার প্রাক্তন স্ত্রী নীলাঞ্জনা বিয়ে করেছে খবর পেয়ে হঠাৎ আমার মনে হলো। আমিও কারো সাথে ফুর্তি করি। দেশে ফিরে সন্তু যোগাযোগ করলাম। ও চৈতালি বুঝিয়ে বাঝিয়ে পাঠালো আমার সাথে রাত কাটাতে। সেইদিন বলেছিলাম " আমি এটা ওর প্রথম রাত কিন্তু শেষ রাত নয়। কারণ সন্তু রা কোন দিন কোন মেয়ে ভালোবাসে না, নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করে, ওরা অভিনয়ে পাকা.."
তারপর ওর সাথে কিছু দিন নিয়মিত সম্পর্কে তৈরি হয়।ওর গায়ে সয়া হয়ে গেছে ব্যাপারটা, ভালো টাকাই রোজকার করছিলো। এ ধরনের মেয়েদের কিছু শর্ত মেনে চলতে হয়। ক্লাইন্টের সাথে বেশি মাখামাখি করলে খবর আছে। কিন্তু জাহাজে চাকুরী দেবপ্রসাদকে ও মন দিয়ে ফেললো। দেবপ্রসাদ বিবাহিত ছিলো। তবে অনেক টাকা, তাই নিজে একটা ফ্লাট কিনে ওকে উপহার দিলো। মাস খরচা পাঠাতে থাকলো। কিন্তু এটা ভালো চোখে দেখলো না সন্তু। বচসা করতে করতে দেবপ্রসাদ খুন হলো সন্তুর হাতে। অভিভাবকহীন চৈতালি আবার নামতে বাধ্য হলো। অন্ধকার জগতে।
ও বাজারি মেয়ে ছিলো না। ওর কাছে আদরের জন্য নয়, আমি যেতাম একটা আশ্রয়ের জন্য। ক্লান্তি দূর করে দিতো ওর সাথে কাটানো মুহূর্তগুলো। ও আজ বেশ ক্লান্ত।ও চুপচাপ শুয়ে ছিলো।ওর চোখ দিয়ে জল গড়িয়ে পড়ছে। আমি ওর চোখটা মুছিয়ে দিতে যেতে ও আমার হাত ধরলো।
বললো" আপনি আমাকে পাহাড়ে নিয়ে গিয়ে, জোছনা রাতে দেখাবেন বলেছিলেন। এখন দেখাবেন। না আজ আপনার পাহাড়ে আর চাঁদ জোছনা হবে না আমার জন্য। আমার মতো অন্ধকার জীবনে জোছনা রাত আসাতে নেই না। আমি শুধু কি অন্ধকার রাতে বিছানা গরম করে যাবো সারাজীবন।"
ভীষন একটা কঠিন প্রশ্নের মুখোমুখি হয়ে আমি চুপ করে রইলাম। ওর হাত ধরে একটা চুমু খেয়ে বললাম "ঘুমিয়ে পড়ো , সকাল হলে কথা বলবো,,,"
© Manab Mondal