...

6 views

মনি
“মা চা দাও”, সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে সাবুর প্রতিদিনের প্রথম কথা। সাবু যাকে বলে পাক্কা বাঙালি। সকালে উঠে চা খাওয়া তারপর দাঁত মেজে, চান করে বসে জলখাবার খেতে খেতে খবরের কাগজ পড়া। উঠে পড়ে বাড়ি থেকে বেরিয়েই দমদম স্টেশন থেকে সকাল নয়টার মেট্রো ধরে অফিস যাওয়া। সারাদিন কাজ তারপর দুপুরে প্রতিদিন মাছের ঝোল ভাত ক্যান্টিনে বসে অন্য কর্মচারীদের সাথে গল্প করা মানে ওই পরও নিন্দা পরও চর্চা করা। শেষ কিছু কাজ সেরে সন্ধ্যে সাতটার মেট্রো ধরে আবার বাড়ি ফেরা।
গার্লফ্রেন্ড? না এই জীবনে বোধয় কোনো মহিলাকে ভালোবাসা মানে সোজা কথা প্রেম করা হলো না।

মা সব সময় সাবুকে বোঝায় , “এবার একটা ভালো দেখে বৌমা আন বাবা। আমরা এরপর চোখ বুজলে তোমার কি হবে? কে দেখবে? আমার বড় চিন্তা হয়”।

“মা, এত ভেবো না। সময় মতন সব হবে।ভালোবাসাটা ভাগ্যের ব্যাপার, কে কার কপালে কেউ জানে না।"

এই সাবু মানে আমাদের সঞ্জীব ব্যানার্জীর জীবনেও প্রেমিকার আগমন হলো। এক ভরা বর্ষাকালের বিকেলে সাবু অফিস থেকে বেরিয়ে হাঁটা দিল মেট্রো স্টেশনের দিকে। ছাতা বার করে মাথায় দিতে দিতে সামনে তাকাতেই দেখতে পেলো এক সাধারণ সুন্দর নারীকে। বুদ্ধিদীপ্ত চোখ, আলুথালু চুল, পানের মতন মুখ আর হালকা লাল লিপস্টিক দিয়ে রাঙানো ঠোঁট।
সাবু কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইলো সেই দিকে।
“সাবু এই সাবু.. দেখে দেখে”, বলে হাত ধরে টান দিল পল্টু।
সম্ভিত ফিরতে সাবু চোখ পড়ল সামনের ম্যানহোলের দিকে। ভয় পেয়ে একটু পিছিয়ে এলো সে।

“কি করছিস বস্!”
“ ওই মানে..”

“কি দেখছিলি এমন করে?সামনে ফাঁকা মেট্রো গেট। তাড়াতাড়ি চল! রাস্তাঘাটের যা অবস্থা কলকাতা ভাসবে!”

সামনের দিকে তাকালো সাবু। সত্যি কোথাও কিছু নেই। সে কোথায় গেল কিছু বোঝার আগেই.. যায় হোক। পল্টুর সাথে স্টেশন এ এসে ট্রেন ধরে বাড়ি ফিরলো। রাস্তায় পল্টু অনেক কিছু বলছিল কিন্তু কোনো কিছুই যেনো কানে যাচ্ছিল না। বার বার ওই মেয়েটাকে মনে পড়ছিল।

“কি হয়ছে বল তো তোর? কি এত ভাবছিস?”

সাবু কায়দা করে কথা ঘুরিয়ে দেয়। যায় হোক পল্টু কিছু বুঝতে পারে না আর সাবু পল্টুকে কিছু বলে না। বাড়ি এসে সাবু খেয়ে উঠে কিছুক্ষণ ফেসবুক করে।
ফেসবুক দেখলে ভারী রাগ হয়। সবাই ছবিতে হাসছে আর বাড়িতে শুধু ঝগড়া করে। প্রকৃত সুখ কি কেউ জানেও না। ফোনটা রেখে টিভি খুলে বসে ছিল। খবর শুনছিল, হঠাৎ ফোনটা বেজে উঠলো। সামনে নম্বরটা অচেনা তবে ট্রু কলার এ দেখালো লেখা আছে মনিহারা দাস। এরকম কাউকে সে চেনে না তাহলে কি ভুল করে?

“হ্যালো! কে?”
কোনো সাড়া নেই শুধু কেউ যেনো জোরে জোরে সাস...