রাক্ষুসে বোয়াল
#শিশু_সাহিত্য #হাস্যকৌতুক
#রাক্ষুসে_বোয়াল
#সায়নদীপা_পলমল
-খটকাই… এই খটকাই কোথায় তুই?
-এই যে… আমি এখানে…
-কই দেখতে পাচ্ছিনা তো, কোথায় রে?
-ওপরের দিকে তাকা।
-সর্বনাশ! সন্ধ্যে নামতে চললো আর এখনও তুই বুড়োবটে চড়ে ঘুমোচ্ছিস!
-উফফ বড়দের মতো কথা না বলে জলদি বলতো কি বলতে এসেছিলিস।
-আরে শোননা কাল আমি, নোনতা আর ফটকে ঠিক করেছি পিকনিক করবো দনাইয়ের পাড়ে। তুই আর পটকাই কি যাবি আমাদের সঙ্গে?
-পিকনিক! হ্যাঁ হ্যাঁ যাবো যাবো নিশ্চয় যাবো।
-তাহলে কাল সময় মতো দনাইয়ের ধারে পৌঁছে যাস তোরা।
পটকাই তো যাবে বলে মনে হয়না তবে আমি নিশ্চয় যাবো।
★★★★★
আম, জাম, কাঁঠাল, বট, অশ্বত্থ, পলাশ, শিমুল সহ আরও কত রকমের ছোটবড় গাছগাছালি দিয়ে ঘেরা ছবির মত শান্ত গ্রাম দনাই। গ্রামের পাশ দিয়েই কুলকুল করে বয়ে চলেছে দনাই খাল। এই দনাইয়ের তিন বিখ্যাত দুস্টু হলো নোনতা, ফটকে আর বল্টু। দুস্টুমিতে ওদের জুড়ি মেলা ভার, তবে পড়াশুনোতেও ওদের সঙ্গে পাল্লা দিতে পারেনা কেউ, কখনও নোনতা পরীক্ষায় সব চাইতে বেশি নম্বর পায় তো কখনও বল্টু আবার কখনও ফটকে। কিন্তু বছর খানেক আগেও পরিস্থিতি এমনটা ছিলো না। ইস্কুলের খাতায় তিনজনের নাম লেখা ছিল ঠিকই কিন্তু ইস্কুলে টিকিও দেখা যেত না তিনজনের। তার চেয়ে বরং ইস্কুলের সময় কেউ যদি বুড়ো বটতলার মাঠ দিয়ে যেত তখন দেখতে পেত এই তিনজন মহা আনন্দে খেলা করতে ব্যস্ত সেখানে। তো এহেন তিনজনের আচমকা পরিবর্তনে মাস্টারমশাই থেকে শুরু করে বাড়ির লোকও হতবাক। নোনতারা তবু কাউকে কিচ্ছুটি বলে না, সবাইকে অবাক হতে দেখে মুখ টিপে টিপে হাসে শুধু। সেই যে যেবার বুড়ো বটতলার মাঠ দখল নিয়েছিল দুষ্ট জটাধর তান্ত্রিক, সেবারেই তো জটাধরকে শায়েস্তা করতে গিয়ে ওদের আলাপ হয় দুই যমজ ভুতুম ছানা খটকাই আর পটকাইয়ের সঙ্গে। খটকাই একটু দুস্টু, ওই নোনতাদেরই মত আর পটকাই হল ততোধিক শান্ত শিষ্ট। সেবার দুষ্ট জটাধর তান্ত্রিককে গ্রাম থেকে তাড়ানোয় খুব সাহায্য করেছিল খটকাই আর পটকাই আর সেজন্যই তো পটকাইকে নোনতারা প্রমিস করেছিল এবার থেকে দুস্টুমির সঙ্গে সঙ্গে পড়াশুনোতেও তাক লাগিয়ে দেবে সবাইকে। কথা রেখেছে ওরা।
★★★★★
সক্কাল সক্কাল দনাইয়ের ধারে পৌঁছে খটকাই দেখলো ও আসার আগেই তিনটে ছোটোছোটো ব্যাগ হাতে এসে উপস্থিত নোনতা, বল্টু, ফটকে তিনজনেই। ফটকে তো আবার ছায়া দেখে একখানা শতরঞ্চিও পেতে ফেলেছে। খটকাইকে দেখেই...