ছায়াময় ঋতুরাজ
ছবি গুলো আস্তে আস্তে ঘুম কেড়েছে বাড়ির সবার, সাক্ষরটাও অবিকল একই রকম, এটাই এক গভীর বিস্ময় !! কেউ বলে মাথাটা হয়ত একদম গেছে মেয়েটার, আবার কেউ বলে গভীর অবসাদ ....কিন্তু, কিছু জিনিস সত্যিই হয়ত অলীক ।
আজ অফিস থেকে ফিরে একবার দেখা করলাম মিস্টার সেনের সঙ্গে তিনিই এই কেশটার তদন্ত করছেন, তিনি আজও কোনো সদুত্তর দিতে পারলেন না, কথার ইঙ্গিতে বোঝালেন তদন্ত চলছে এখনও কোনো ক্লু আমরা হাতে পাইনি ....আর তা ছাড়া এ রকম চিত্রশিল্পীদের বাইরে নানান কেচ্ছা থাকে বুঝতেই পারছেন ....। ঋতুরাজের মৃত্যুটা যেন ধোঁয়াশাচ্ছন্ন, এর জন্য আমরা কোনোরকম প্রস্তুত ছিলাম না, এখনও সে'ই দৃশ্যটা চোখের মধ্যে টাটকা ।
এক বাড়ি লোকজন, সানায়ের সুর ....আর বহু ব্যস্ততা চলছে অতিথি আপ্যায়নে।
টুকটুকে বেনারসী তে মেয়েটাকে আমার সত্যিই অপরূপা লাগছিল, সবে সবে সিঁদুর দান মিটেছে আর তারপরই সেই আকস্মিক ঘটনা ....!! একটা গুলির শব্দে থেমে গেল এত আয়োজন... এত উল্লাস । গুলিটা কে বা কারা করেছে জানিনা, কিন্তু মাথাটা এফোঁড় ওফোঁড় করে দিয়েছে । মুহূর্তে নব দাম্পত্যের সোহাগ রঙে মিশে গেছে রক্তের লাল ।
ঋতুরাজের অন্তোষ্টি ক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার কদিন পর থেকেই একটা ঘটনা ঘটতে শুরু করল, আমার একমাত্র মেয়ে মৈত্রী সদ্য বিধবা, রাত্রে ও ওর মায়ের কাছেই ঘুমায়। অর্রাধত্রে সে আচ্ছন্ন ঘুমঘোরে কোথায় যে যায় কেউ ঠাওর করতে পারিনা, কিন্তু ভোর বেলা যখন তাকে পাওয়া যায়, তখন তার অন্যরূপ... অলঙ্কার মণ্ডিত এক নববধূর সাজ । তার অবচেতনে যা ঘটে তা বিন্দু বিসর্গ কিছুই তার মনে থাকেনা, কেবল তার কাছে তারই একটি করে মোহিনী চিত্র পাওয়া যায় আর চিত্রশিল্পীর সাক্ষরে থাকে "তোমার ঋতুরাজ" । অনেক প্রশ্ন অনেক বিস্ময় ঘুরে ফিরে বেরায় বাড়ির আনাচে কানাচে । তাই এই কৌতুহল নিবারণ করতে একদিন রাত্রে আমি আমার মেয়ের পিছু নিলাম আর যা দৃশ্য দেখলাম তা আমার কল্পনাতীত ।
ঘরিতে তখন রাত দুটো জানলা দিয়ে হঠাৎই বয়ে গেল এক শীতল ঝড়ো হাওয়া, আচ্ছন্নতার মাঝেই হল মৈত্রীর সাজসজ্জা । দেখলাম উত্তরের ঘরে মেঝের উপর মৈত্রী অপরূপ ভঙ্গিতে আধো শয়ন হয়ে বসে আছে, গোটা ঘর রজনীর সুবাসে মুখরিত, মাঝে মাঝে সে একাকীই কথা বলছে, আবার কখনও রসিক ভাবে হাসছে আর অদূরে অদৃশ্য এক হাত ক্যানভাস জুড়ে আঁকছে তার অনিন্দ্য সুন্দর মোহিনী মূর্তি । তারপর ...আমার যখন চেতনা ফিরল তখন সকাল হয়ে গেছে ।
শূন্যের মাঝে যখন অলীক মায়ার হাতছানি, তখন যুক্তি তর্কের সমাধান অযৌক্তিক হয়ে পড়ে । মৈত্রীর মায়াবর্তিত অবচেতন যেন এক রহস্যাবৃত নিধিবন, কঠিন বৈধব্যের আড়ালে ঋতুরাজের আনাগোনা ছায়া বেশে ।
"মৃত্যুই জীবনের শেষ নহে নহে"......হয়ত এটাই চিরন্তন সত্য !!
#মৌসুমীচ্যাটার্জী #রহস্য #অনুগল্প
আজ অফিস থেকে ফিরে একবার দেখা করলাম মিস্টার সেনের সঙ্গে তিনিই এই কেশটার তদন্ত করছেন, তিনি আজও কোনো সদুত্তর দিতে পারলেন না, কথার ইঙ্গিতে বোঝালেন তদন্ত চলছে এখনও কোনো ক্লু আমরা হাতে পাইনি ....আর তা ছাড়া এ রকম চিত্রশিল্পীদের বাইরে নানান কেচ্ছা থাকে বুঝতেই পারছেন ....। ঋতুরাজের মৃত্যুটা যেন ধোঁয়াশাচ্ছন্ন, এর জন্য আমরা কোনোরকম প্রস্তুত ছিলাম না, এখনও সে'ই দৃশ্যটা চোখের মধ্যে টাটকা ।
এক বাড়ি লোকজন, সানায়ের সুর ....আর বহু ব্যস্ততা চলছে অতিথি আপ্যায়নে।
টুকটুকে বেনারসী তে মেয়েটাকে আমার সত্যিই অপরূপা লাগছিল, সবে সবে সিঁদুর দান মিটেছে আর তারপরই সেই আকস্মিক ঘটনা ....!! একটা গুলির শব্দে থেমে গেল এত আয়োজন... এত উল্লাস । গুলিটা কে বা কারা করেছে জানিনা, কিন্তু মাথাটা এফোঁড় ওফোঁড় করে দিয়েছে । মুহূর্তে নব দাম্পত্যের সোহাগ রঙে মিশে গেছে রক্তের লাল ।
ঋতুরাজের অন্তোষ্টি ক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার কদিন পর থেকেই একটা ঘটনা ঘটতে শুরু করল, আমার একমাত্র মেয়ে মৈত্রী সদ্য বিধবা, রাত্রে ও ওর মায়ের কাছেই ঘুমায়। অর্রাধত্রে সে আচ্ছন্ন ঘুমঘোরে কোথায় যে যায় কেউ ঠাওর করতে পারিনা, কিন্তু ভোর বেলা যখন তাকে পাওয়া যায়, তখন তার অন্যরূপ... অলঙ্কার মণ্ডিত এক নববধূর সাজ । তার অবচেতনে যা ঘটে তা বিন্দু বিসর্গ কিছুই তার মনে থাকেনা, কেবল তার কাছে তারই একটি করে মোহিনী চিত্র পাওয়া যায় আর চিত্রশিল্পীর সাক্ষরে থাকে "তোমার ঋতুরাজ" । অনেক প্রশ্ন অনেক বিস্ময় ঘুরে ফিরে বেরায় বাড়ির আনাচে কানাচে । তাই এই কৌতুহল নিবারণ করতে একদিন রাত্রে আমি আমার মেয়ের পিছু নিলাম আর যা দৃশ্য দেখলাম তা আমার কল্পনাতীত ।
ঘরিতে তখন রাত দুটো জানলা দিয়ে হঠাৎই বয়ে গেল এক শীতল ঝড়ো হাওয়া, আচ্ছন্নতার মাঝেই হল মৈত্রীর সাজসজ্জা । দেখলাম উত্তরের ঘরে মেঝের উপর মৈত্রী অপরূপ ভঙ্গিতে আধো শয়ন হয়ে বসে আছে, গোটা ঘর রজনীর সুবাসে মুখরিত, মাঝে মাঝে সে একাকীই কথা বলছে, আবার কখনও রসিক ভাবে হাসছে আর অদূরে অদৃশ্য এক হাত ক্যানভাস জুড়ে আঁকছে তার অনিন্দ্য সুন্দর মোহিনী মূর্তি । তারপর ...আমার যখন চেতনা ফিরল তখন সকাল হয়ে গেছে ।
শূন্যের মাঝে যখন অলীক মায়ার হাতছানি, তখন যুক্তি তর্কের সমাধান অযৌক্তিক হয়ে পড়ে । মৈত্রীর মায়াবর্তিত অবচেতন যেন এক রহস্যাবৃত নিধিবন, কঠিন বৈধব্যের আড়ালে ঋতুরাজের আনাগোনা ছায়া বেশে ।
"মৃত্যুই জীবনের শেষ নহে নহে"......হয়ত এটাই চিরন্তন সত্য !!
#মৌসুমীচ্যাটার্জী #রহস্য #অনুগল্প
Related Stories