...

3 views

``133 বছর পর বাংলাদেশ প্রজাপতি বাদুরের সন্ধান~~
~~১৩৩ বছর পর বাংলাদেশে প্রজাপতি বাদুড়ের সন্ধান~~

~বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক | জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় | প্রকাশিত: ০৬:৪৫ পিএম, ২৭ জুন ২০২১~
১৩৩ বছর পর বাংলাদেশে প্রজাপতি বাদুড়ের সন্ধানছবি-অধ্যাপক মোহাম্মদ মনিরুল হাসান খান
টাঙ্গাইলের মধুপুর জাতীয় উদ্যানের একটি কলাগাছের পাতায় বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দর ‘পেইন্টেড ব্যাট’ বা প্রজাপতি বাদুড়ের সন্ধান পেয়েছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ মনিরুল হাসান খান।

রোববার (২৭ জুন) তিনি জাগো নিউজকে এতথ্য নিশ্চিত করেছেন।

‘পেইন্টেড ব্যাট’ নামক এ বাদুড়টি ১৩৩ বছর ধরে বাংলাদেশে দেখা যায়নি। সর্বশেষ ১৮৮৮ সালে যুক্তরাজ্যের প্রাণিবিজ্ঞানী ডব্লিউ টি ব্লেনফোডের লেখা ‘ফনা ইন ব্রিটিশ ইন্ডিয়া’ নামক একটি গ্রন্থে বাদুড়ের ওই প্রজাতি ঢাকায় দেখা গেছে বলে উল্লেখ ছিল। কিন্তু এরপর অনেকে বাদুড়টিকে খুঁজলেও পাননি।

গত ৭ জুন অধ্যাপক মোহাম্মদ মনিরুল হাসান খান তার গবেষণা সহকারী লজেশ মৃরের থেকে খোঁজ পেয়ে মধুপুরে গিয়ে ওই বাদুড়ের সন্ধান পেয়েছেন। তিনি বাদুড়টির ছবিও তুলেছেন।

প্রাণিবিজ্ঞানীরা বলছেন, ‘প্রজাপতি বাদুড়’ নামে পরিচিত এই বাদুড়টি ভারতের কয়েকটি রাজ্য ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে এখনো দেখা যায়। তবে বাংলাদেশ থেকে এটি বিলুপ্ত হয়ে গেছে বলে অনেক প্রাণিবিজ্ঞানী ধারণা করছিলেন।

সর্বশেষ ২০১৫ সালে প্রকৃতি সংরক্ষণ বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা আইইউসিএন ও বন বিভাগ থেকে ‘রেড লিস্ট’ নামে বাংলাদেশে বিপন্ন প্রাণীদের একটি তালিকা প্রকাশ করা হয়। সেখানেও এই বাদুড় সম্পর্কে কোনো তথ্য নেই বলে মন্তব্য করা হয়েছে। এছাড়া বিশ্বের বন্য প্রাণিবিষয়ক সংস্থাগুলোর প্রতিবেদনে ‘এটি বাংলাদেশে আর টিকে নেই’ বলেই উল্লেখ করা হয়।

অধ্যাপক মোহাম্মদ মনিরুল হাসান খান বলেন, ‘এটা বড় সুসংবাদ যে এই বাদুড় আমাদের দেশে এখনো টিকে আছে। যেহেতু মধুপুর বনে পেয়েছি, সেহেতু অন্য বনেও এরা থাকতে পারে। তাই এটি দেখলে কেউ যাতে না ধরেন বা মারার চেষ্টা না করেন। কারণ বাদুড় এমনিতেই একটি উপকারী প্রাণী। এই প্রজাতির বাদুড় ক্ষতিকর অনেক পোকা খেয়ে মানুষের উপকার করে।’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে নানা প্রজাতির বাদুড়ের দেখা গেলেও তিন থেকে চার সেন্টিমিটার আয়তনের এই ছোট্ট বাদুড়টি মূলত পতঙ্গভুক। এর উজ্জ্বল রঙ এটিকে অন্য বাদুড় থেকে আলাদা করেছে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মো. কামরুল হাসান জাগো নিউজকে বলেন, ‘অন্যান্য বাদুড়ের তুলনায় এ প্রজাতির বাদুড় কিছুটা ধীরে চলে। এরা সাধারণত দিনের বেলা কম বের হয়। রাতের বেলা বেরিয়ে বিভিন্ন ধরনের পোকামাকড় খায়। কোনো শব্দ, বাতাস বা অন্য প্রাণীর আক্রমণ এলে এরা নড়াচড়া করে না।’

‘দেখতে উজ্জ্বল রঙের হওয়ায় দূর থেকে শিকারী প্রাণী এদের দেখতে পায়। আর এসব শিকারী প্রাণী বাদুড়ের এ প্রজাতিকে খেয়ে ফেলে। তাই এ প্রজাতির সংখ্যা পৃথিবীতে দ্রুত কমে আসছে। এরা বছরে একটি বাচ্চা দেয়’—যোগ করেন এই অধ্যাপক।
© All Rights Reserved