...

8 views

রক্তপিপাসু
"শেষ একজনই পড়ে আছে, যে এই গোপন তথ্য জানে। ওকে সরিয়ে দিলে আর কোনো প্রমাণ থাকবে না।", সৌরভ ওবেরয় তার PA-কে বলল।

হরিনাথ দাশ বলল, " ওকে শেষ করে দিলেই খেলা শেষ।"

রাজু ভার্গব বললেন," রুকো ভাই, তুম উসকা নাহি জানতে। উসনে লাস্ট পাঁচ সালো মে তিশ কে আসপাস কাতল কিয়ে হে। বহত চালাক হ্যা, পয়সা কিউ নাহি মাঙ্গা হো হি সোচ রাহা হু।"

সৌরভ বলল," এই secret বাইরে গেলে আমিও বাঁচব না, আর হয়তো তোমরাও না । ওই জিনিসটার কথা কেউ জানলে...

হরিনাথ বলল, " নাম কি ছেলেটার? গুড্ডু গণেশ কে বলছি, ৭-৮টাকে নিয়ে গিয়ে ঠিকানা লাগিয়ে দেবে।"

রাজু বলল, " বাকি তো উসকা আইডেন্টিটি হ্যা নেহি। বাস লোগ উসে S কেহেতে হে। কাব কাহা যাতা হ্যা কুছ না পাতা, টেনশন না লো পাতা লাগাতে হে।"
এই বলে সবাই ওবেরয় বিল্ডিং এর বাথরুম থেকে বেরিয়ে যে যার কাজের জন্য রওনা দিল। স্বাভাবিকভাবেই ওই বস্তুটার কথা যে জানে, সে এমন একটা খবর জানে যা পৃথিবীর ভিত নড়িয়ে দিতে পারে। সৌরভের আতঙ্কিত চোখ তার জলজ্যান্ত প্রমাণ।
সৌরভ ওবেরয়, তার স্ত্রী মিহিকা ওবেরয়,ও তাদের মেয়ে সুরঞ্জনা সব মিলিয়ে কোটি কোটি টাকার মালিক, একাধিক বাংলো, ক্যাসিনো, সিগারেট ফ্যাক্টরি, বেআইনি চন্দন কাঠ সাপ্লাই থেকে এক্সটরশানেও নাম আছে। রাজু শহরের নামজাদা সোনা ব্যবসায়ী। আসলে সরকারের কাছ থেকে কাগজ সাইন করানোই এনার কাজ। গোটা দেশে কানেকশন। হরিনাথ সৌরভের PA, তাঁর বড় বড় মাফিয়ার সাথে সাক্ষাৎ আছে যদিও S-কে হাত করা সহজ না। ওই S -এর বয়স কিছু ৩০-এর আশপাশ, বেঁচে থেকেও খাতা কলমে অস্তিত্ব নেই, একটা trained assassin আর Living Ghost। সরকারি বা বেসরকারি টাকা পেলে সব কাজ করে। একজন নয় এই secret আরো পাঁচজন জানত। হরি তো গণেশ কে দিয়ে সবাইকে murder করে দিয়েছে। আর একজন বাকি। সৌরভের তৈরী এই মিত্রশক্তি জোট মানুষের প্রাণের চেয়ে নিজের পকেটকে বেশি প্রাধান্য দেয়। কিন্তু এবারে এমনই বড় সমস্যা, যা বলতে গেলে তাদের হাতের বাইরে।
দুই বছর আগের কথা। কিছু বিপদে পড়ে সৌরভ A Category Assassin এর টিম ডেকে পাঠায়। তার মধ্যে S ও একজন ছিল। এই ঘটনা স্বয়ং সৌরভ আর S বাদে আর কেউ জানে না। কোনো ভয়াবহ কিছু দেখে সকলে সেখান থেকে পালিয়ে এসেছিল, শুধু একটা পাকা খবর হল একটা Assassin ওই বিল্ডিং এর ভিতরেই মারা যায়। বাকিরা অবস্থাকে কন্ট্রোলে এনে সেখান থেকে বেরিয়ে যায়। কি এমন SecreT DatA যা এত গোপন যে বলাও যাবে না।
সৌরভের ফোনে ফোন এল, হরিনাথ S এর LocatioN ট্র্যাক করে ফেলেছে। সে ক্রমশ ডানলপের পাশ দিয়ে পুরোনো ভোবার পাশের বন্ধ পড়ে থাকা ওবেরয় বিল্ডিং -এর দিকে যাচ্ছে। এই বিল্ডিং -এই দু বছর আগে সব শুরু হয়েছিল। ওবেরয় জানতে পেরে সেও সঙ্গে সঙ্গে রাজুর সাথে ভয়ে ছুটল ওইদিকে। অন্যদিকে S বাইকে করে ক্রমশ গতিবেগ বাড়িয়ে এগিয়ে চলেছে। অবশেষে রাত দুটো নাগাদ হরিনাথ গন্তব্যে পৌঁছাল। তার সাথেই সৌরভ আর বাকিরাও পৌঁছে যায়। দেখল ওবেরয় বিল্ডিং-এর পাশের গ্যারাজের বন্ধ দরজার সামনে S দাঁড়িয়ে। মাথা থেকে সে তার কালো হেলমেট খুলে ফেলল।
সবাই অবাক হয়ে গেল, চোখ মাথায় উঠে গেল, হা করে দেখল, এই S তো কোনো ছেলে না। এটা তো সৌরভের মেয়ে সুরঞ্জনা। এটা কিভাবে হতে পারে সবাই যতক্ষণে ভাবল ততক্ষণে সৌরভ বলতে শুরু করল, " আমি তোমাদের থেকে অনেক কিছু লুকিয়েছি। আমি নিজের মেয়েকে মারার অর্ডার দিয়েছি। কিন্তু আমার আর পথ ছিল না। ভিতরে যেটা..."
সুরঞ্জনা চেঁচিয়ে উঠল, " বাবা, তুমি লুকিয়েছ এসব। এগুলো তোমার দোষ। আমাকে তো কিছু একটা করতেই হবে।"
সকলে বলল, " কি আছে ভিতরে? কি এমন জিনিস যা...
সুরঞ্জনা বলল," জিনিস না কোনো, মানুষ। আমার বাবার অচেনা এক মেয়ের সন্তান। এই অন্ধকারে সে লুকিয়ে।"
সৌরভ আঁতকে বলল," আমি জানতাম সেই মেয়ে সাধারণ মেয়ে নয়। ওই ছেলের জন্ম দিতে দিতে সেও চলে যায়। তবে এই ছেলে যাকে ২৫ বছর পৃথিবী থেকে লুকিয়েছি সে আজ এত বড়ো বিপদ হবে,"
রাজু বলল, " এক নাযায়েস বেটে কে লিয়ে ইতনা কুছ। ইয়ে হামারে পাল্লে না পড়া।"
হরিনাথ সন্দিগ্ধ ভাবে বলল, " আর assassin, এদের কি দরকার?"
সুরঞ্জনা বলল, " আমি গত পাঁচ বছর ধরে একটি UndercoveR SquaD এর সাথে কাজ করছি। আমি জানতাম না আমার ভাই আমার লক্ষ্য। ভিতরে চলুন.."
ভিতরে অন্ধকার ছিল। একটা ল্যাম্প জ্বালানো হল, কিন্তু সেটাও টিমটিম করছিল। একটা তীব্র শ্বাসের শব্দ শোনা গেল। টর্চ নিয়ে হরিনাথ এগোতে গিয়ে আঁতকে উঠল। দু তিনটে বাটি রাখা রক্তে ভরা, আর রক্তের ছাপ। টর্চ ওপরে তুলতেই ভয়ে সে অজ্ঞান হয়ে গেল। দেখা গেল একটি ছেলেকে, তার দু হাতে শিকল, বড়ো চুলে মুখ ঢাকা। আর মুখ থেকে রক্ত গড়িয়ে পড়ছে। হঠাৎ সে উঠে দাঁড়ায়," বাবা, ও বাবা, তোমার সিদ্ধার্থকে ভুলে গেলে? কি ভাবলে এই দুর্বল শিকল আমাকে আটকাবে?"
এক ঝটকায় সিদ্ধার্থ ( ওবেরয়ের সৎ ছেলে) শিকল ভেঙে দিল। এমন অমানবিক শক্তি হয়তো কেউ কখনো দেখেনি। তারপর বলল," বাবা, এসো, কাছে এসো.." সৌরভ ঘর্মাক্ত ভীত অবস্থায় বলল, " পালাও, সবাই পালাও" হঠাৎই ল্যাম্পটা নিভে গেল। সিদ্ধার্থ ছুটে গেল বিশাল গতিতে আর সৌরভের গলায় কামড় বসাল। সুরঞ্জনা হাঁপাতে হাঁপাতে দৌড়ে বেরিয়ে এল, অনেক দূরে ছুটে গিয়ে দূর থেকে দেখল, সিদ্ধার্থ আর একা নয়। তার মতোই হয়ে গেছে বাকিরা, সিদ্ধার্থের চীৎকার দূর থেকে শোনা গেল, " আমাদের প্রজাতি পৃথিবীতে রাজত্ব করবে!" সুরঞ্জনা লোকালয়ের দিকে ছুটতে থাকল, হয়তো এখনো শেষ আশা বেঁচে আছে।

© নীল