সাতাশে ডিসেম্বর
একটি অখাদ্য গল্প 😶😒😔😐
//সাতাশে ডিসেম্বর//
আজকের দিনটা এলে বড় কষ্ট হয় শমীকের। একটা ছাইচাপা আগ্নেয়গিরি যেন আবার জেগে ওঠে আজকের দিনে। কিন্তু তা কোনো রাগে বা উত্তেজনায় নয়; অনুরাগে, অভিমানে, কান্নায়। আজ ২৭ ডিসেম্বর শ্রীমন্তীর জন্মদিন। সাড়ে তিন বছর আগে যে সম্পর্কের সূত্রপাত হয়েছিল, তা বিনা কারণে, কেবল শ্রীমন্তীর রাগ আর অবুঝ মনের কারণে শেষ হয়ে গিয়েছে মাত্র দুই মাস আগে। শমীক অনেক চেষ্টা করেছিল তাকে বোঝাতে, কিন্তু পারে নি। আসলে দোষটা হয়ত শ্রীমন্তীর নয়, শমীকেরই ভাগ্যের। তা না হলে এম এ পাশ করার পর পাঁচ বছর কেটে গেল, তবু কত কত পরীক্ষা দিয়েও শমীক উপার্জনের কোনো ব্যবস্থা করতে পারল না কেন! শ্রীমন্তীই বা কী করত! তার কলেজ শেষ হয়ে ইউনিভার্সিটির পড়াশোনাও প্রায় শেষের পথে। এদিকে নামী সরকারী স্কুলের হেডমাস্টারমশাই তার বাবাও উঠে পড়ে লেগেছেন তার বিয়ে দেওয়ার জন্য। এমতাবস্থায় শ্রীমন্তী বলেছিল শমীককে তার অসুবিধার কথা, কিন্তু শমীক মানতে চায় নি। সে যে খুব ভালোবাসে তার শ্রীমন্তীকে! সে-ই তার প্রথম প্রেম। তাকে নিয়েই সে স্বপ্ন দেখে, তাকে নিয়েই ঘর বাঁধবে বলে আশায় আশায় থাকে! শমীকের মা-ও মাঝে কয়েকবার কথা বলেছেন শ্রীমন্তীর সঙ্গে। মেয়েটিকে পছন্দও হয়েছে তাঁর। কিন্তু চাইলেই কি সব আশা পূর্ণ হয়? মা-কে নিয়ে একচিলতে ছোট্ট ভাড়াবাড়িতে থাকা শমীকের ক’টা ইচ্ছেই বা পূরণ হয়েছে আজ অবধি? চাকরি তো পায়ই নি, টিউশনিও মাত্র দুটো। মায়ের পেনশনের টাকায় কোনোমতে সংসারটা চলে।
এদিকে যত দিন যেতে লাগল, ততই যেন আস্তে আস্তে বদলে যেতে থাকল শ্রীমন্তী। আর সে আগের মতন কথা বলে না, দেখা তো করেই না, এমনকি ফোনও করে না। শমীক ফোন করলে ‘ব্যস্ত আছি’ বলে কেটে দেয়। অথচ আগে তার উৎসাহই ছিল সবচেয়ে বেশি। সকাল নেই, দুপুর নেই, বিকেল নেই—ফোন করে করে কতই না গল্প করত সে তখন। কিন্তু যে কবিতা ছিল শ্রীমন্তীর প্রাণ, যে কবিতা পড়েই সে প্রেমে পড়েছিল শমীকের, যে কবিতাই ছিল তাদের প্রেমের যোগসূত্র, আজ সেই কবিতাও যেন শ্রীমন্তীকে আনন্দ দেয় না। এদিকে শমীক কষ্ট পায় খুব মনে মনে। রাত্রে একলা একলা কাঁদে, একটিবার শ্রীমন্তীকে দেখবে বলে তার মন আকুল হয়ে ওঠে। কিন্তু দিন দিন যেন যোগাযোগের শেষ সূত্রটিও ছিন্ন হতে থাকে। শমীক প্রাণপণ চেষ্টা করেও কোনো চাকরি পায় না, বরং চাকরি দেওয়ার নাম করে এক ব্যক্তি তার কাছ থেকে দু হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। শমীক মা’কেও কিছু বলতে পারে না, যদিও মা হয়ত বা কিছুটা আন্দাজ করতে পারেন। এরপর নভেম্বর মাসের তিন তারিখে আসে সেই চরম আঘাত। তার কিছুদিন আগেই শ্রীমন্তী শমীকের বার্থডে সেলিব্রেট করেছে, উপহার...
//সাতাশে ডিসেম্বর//
আজকের দিনটা এলে বড় কষ্ট হয় শমীকের। একটা ছাইচাপা আগ্নেয়গিরি যেন আবার জেগে ওঠে আজকের দিনে। কিন্তু তা কোনো রাগে বা উত্তেজনায় নয়; অনুরাগে, অভিমানে, কান্নায়। আজ ২৭ ডিসেম্বর শ্রীমন্তীর জন্মদিন। সাড়ে তিন বছর আগে যে সম্পর্কের সূত্রপাত হয়েছিল, তা বিনা কারণে, কেবল শ্রীমন্তীর রাগ আর অবুঝ মনের কারণে শেষ হয়ে গিয়েছে মাত্র দুই মাস আগে। শমীক অনেক চেষ্টা করেছিল তাকে বোঝাতে, কিন্তু পারে নি। আসলে দোষটা হয়ত শ্রীমন্তীর নয়, শমীকেরই ভাগ্যের। তা না হলে এম এ পাশ করার পর পাঁচ বছর কেটে গেল, তবু কত কত পরীক্ষা দিয়েও শমীক উপার্জনের কোনো ব্যবস্থা করতে পারল না কেন! শ্রীমন্তীই বা কী করত! তার কলেজ শেষ হয়ে ইউনিভার্সিটির পড়াশোনাও প্রায় শেষের পথে। এদিকে নামী সরকারী স্কুলের হেডমাস্টারমশাই তার বাবাও উঠে পড়ে লেগেছেন তার বিয়ে দেওয়ার জন্য। এমতাবস্থায় শ্রীমন্তী বলেছিল শমীককে তার অসুবিধার কথা, কিন্তু শমীক মানতে চায় নি। সে যে খুব ভালোবাসে তার শ্রীমন্তীকে! সে-ই তার প্রথম প্রেম। তাকে নিয়েই সে স্বপ্ন দেখে, তাকে নিয়েই ঘর বাঁধবে বলে আশায় আশায় থাকে! শমীকের মা-ও মাঝে কয়েকবার কথা বলেছেন শ্রীমন্তীর সঙ্গে। মেয়েটিকে পছন্দও হয়েছে তাঁর। কিন্তু চাইলেই কি সব আশা পূর্ণ হয়? মা-কে নিয়ে একচিলতে ছোট্ট ভাড়াবাড়িতে থাকা শমীকের ক’টা ইচ্ছেই বা পূরণ হয়েছে আজ অবধি? চাকরি তো পায়ই নি, টিউশনিও মাত্র দুটো। মায়ের পেনশনের টাকায় কোনোমতে সংসারটা চলে।
এদিকে যত দিন যেতে লাগল, ততই যেন আস্তে আস্তে বদলে যেতে থাকল শ্রীমন্তী। আর সে আগের মতন কথা বলে না, দেখা তো করেই না, এমনকি ফোনও করে না। শমীক ফোন করলে ‘ব্যস্ত আছি’ বলে কেটে দেয়। অথচ আগে তার উৎসাহই ছিল সবচেয়ে বেশি। সকাল নেই, দুপুর নেই, বিকেল নেই—ফোন করে করে কতই না গল্প করত সে তখন। কিন্তু যে কবিতা ছিল শ্রীমন্তীর প্রাণ, যে কবিতা পড়েই সে প্রেমে পড়েছিল শমীকের, যে কবিতাই ছিল তাদের প্রেমের যোগসূত্র, আজ সেই কবিতাও যেন শ্রীমন্তীকে আনন্দ দেয় না। এদিকে শমীক কষ্ট পায় খুব মনে মনে। রাত্রে একলা একলা কাঁদে, একটিবার শ্রীমন্তীকে দেখবে বলে তার মন আকুল হয়ে ওঠে। কিন্তু দিন দিন যেন যোগাযোগের শেষ সূত্রটিও ছিন্ন হতে থাকে। শমীক প্রাণপণ চেষ্টা করেও কোনো চাকরি পায় না, বরং চাকরি দেওয়ার নাম করে এক ব্যক্তি তার কাছ থেকে দু হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। শমীক মা’কেও কিছু বলতে পারে না, যদিও মা হয়ত বা কিছুটা আন্দাজ করতে পারেন। এরপর নভেম্বর মাসের তিন তারিখে আসে সেই চরম আঘাত। তার কিছুদিন আগেই শ্রীমন্তী শমীকের বার্থডে সেলিব্রেট করেছে, উপহার...