পরিচয়
মুখের উপর জলের ঝাপটায় ঘুম ভেঙে গেল। চোখ খুলে কিছুক্ষন ভাবার পরে প্রদীপের মনে পড়ল সে বাসেই বসে আছে। বাইরে মুসুলধারাই বৃষ্টি পড়ছে, কোনো ভাবে নেমেই মেট্রো স্টেশন এ ঢুকে যাবে। অফিসের কাজ শেষ করে বেরোতে একটু দেরি হয়েছিল তাই বৃষ্টিতে ফেঁসে গেল নইলে অনেক আগেই বাড়ি পৌঁছে যেত।
যেমন ভাবা তেমন কাজ, প্রদীপ মেট্রো স্টেশন এ তাড়াতাড়ি ঢুকে গেল। মেট্রোর প্ল্যাটফর্ম আজ খুব ফাঁকা লাগছিল। এত বৃষ্টির দিনে কেউ বিশেষ বাড়ি থেকে বেরোই নি। দুর্গা পুজোর সময় এই জায়গায় লাইন দিয়ে ঢুকতে হয়। পুজোর পর মন কেমন করতে শুরু করে দেয়, ঘুরে বেড়ানো, প্যান্ডেল দেখা, বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা ইত্যাদি। যাই হোক, ট্রেন যতক্ষণ না আসে অপেক্ষা করতেই হবে। এই সব ভাবতে ভাবতে একটা বেঞ্চ এ সে বসে পড়ল।
ব্যাগ থেকে ফোন বার করে মেসেজ ইনবক্সটা চেক করতে যাবে ঠিক তখনই কেউ পেছন থেকে ডাকল।
“আরে! প্রদীপদা!”
প্রদীপ পেছন ফিরে তাকাতেই অবাক হয়ে গেল।
"সরমা.... তুই ?"
কিছুক্ষন দুজনেই চুপ করে তাকিয়ে রইল। প্রদীপ সরমাকে অনেকদিন আগে সেই কলেজে শেষ দেখেছিল। তারপর থেকে কোনো যোগাযোগ ছিলোই না। এতদিন পর এভাবে দেখা হবে দুজনেই ভাবতে পারে নি।
"আমি আজ একটু ছেলের বাড়ি যাচ্ছিলাম তাই ভাবলাম মেট্রোতে যাই। আমার ছেলে পার্কস্ট্রীটটে থাকে। ভিতরে এসেই তোমায় দেখলাম তাই ভাবলাম একবার ডাকি।"
"খুব ভালো করেছিস। বস্ বস্..... তারপর বল কেমন আছিস? কোথায় থাকিস?"
ওদের কথা শুরু হল। সরমা বলল কলেজের পর ও বিয়ে করে নিয়েছিল এবং একটা কল সেন্টারে অনেক বছর কাজ করেছে। বিয়ের দুবছর পর ওর স্বামী কার অ্যাকসিডেন্টে মারা যায়, ছেলেকে একাই মানুষ...